মুকুল দেবের অকালপ্রয়াণে শোকস্তব্ধ বলিউড

অভিনেতা মুকুল দেবের মৃত্যু সংবাদ জানালেন ভাই রাহুল দেব!

বলিউডের পরিচিত মুখ, অভিনেতা মুকুল দেবের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিনোদনজগতে। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন এই প্রতিভাবান অভিনেতা। মৃত্যুর খবর প্রথমবার প্রকাশ্যে আনেন অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী। কিন্তু মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তখন বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। এবার ভাই ও খ্যাতনামা অভিনেতা রাহুল দেব সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলেন দাদার মৃত্যুর খবর ও শেষকৃত্যের বিবরণ।
রাহুল দেব তাঁর বিবৃতিতে লেখেন, “গত রাতে নয়াদিল্লিতে আমার দাদা মুকুল শান্তিতে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এই সময়ে আমাদের পরিবার চরম শোকের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। নয়াদিল্লিতে ওঁর শেষকৃত্যের আয়োজন করা হয়েছে। ওঁর আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন।”

সূত্র মারফত জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মুকুল দেব। তবে গত ৮-১০ দিনে তাঁর শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। চিকিৎসার জন্য তাঁকে নয়াদিল্লির এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই আইসিইউতে রাখা হয়। শেষপর্যন্ত তিনি ঐ বেসরকারি হাসপাতালেই মারা যান। তবে ঠিক কী রোগে ভুগছিলেন তিনি, সে বিষয়ে পরিবারের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। মুকুল দেবের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বলিউডে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মনোজ বাজপেয়ী ছাড়াও সমাজমাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেছেন অভিনেতা বিন্দু দারা সিংহ, দীপশিখা নাগপাল, এবং আরও অনেকে। অনেকে তাঁর নয়াদিল্লির বাসভবনে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন।

মুকুল দেব ১৯৯৬ সালে বলিউডে অভিষেক করেন ‘দস্তক’ ছবির মাধ্যমে, যেখানে এক পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এরপর একাধিক সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন পার্শ্বচরিত্রে, কিন্তু তাঁর উপস্থিতি সবসময়ই ছিল শক্তিশালী ও স্মরণীয়। সলমন খান অভিনীত ‘জয় হো’ ছবিতে তাঁর চরিত্র দর্শকদের বিশেষভাবে মনে রয়েছে। হিন্দির পাশাপাশি তিনি মালয়ালম, গুজরাতি, পঞ্জাবি, মারাঠি, ইংরেজি এবং বাংলা চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। বাংলা ছবিতে তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজগুলির মধ্যে আছে ‘আওয়ারা’, ‘বচ্চন’ এবং ‘সুলতান: দ্য স্যাভিয়র’। বিশেষত অ্যাকশনধর্মী চরিত্রে তাঁর পারফরম্যান্স প্রশংসা কুড়িয়েছিল বাংলা দর্শকদের কাছেও।cropped 800X800

ত্রিপুরায় ৫জির সাথে AI প্রযুক্তির প্রসার

ত্রিপুরায় ৫জি ও AI প্রযুক্তির প্রসারে ডেটা সেন্টার নির্মাণে জমি বরাদ্দ!

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘রাইসিং নর্থইস্ট ইনভেস্টরস সামিট ২০২৫’-এ অংশ নিয়ে রাজ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ৫জি প্রযুক্তির প্রসারে রাজ্য সরকারের নেওয়া একাধিক উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। এই সম্মেলনের মূল থিম ছিল “আইটি ফর অষ্টলক্ষী: বেয়ন্ড দি বিটস অ্যান্ড বাইটস, ইনটু এআই অ্যান্ড ৫জি”, যেখানে উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নে প্রযুক্তি খাতের ভূমিকা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাহা বলেন, “ত্রিপুরা সরকার ইতোমধ্যেই আগরতলায় একটি ডেটা সেন্টার নির্মাণের জন্য জমি বন্দোবস্ত করেছে, যা পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি হাবে পরিণত হবে। এই সেন্টার ভবিষ্যতের ডিজিটাল পরিকাঠামোকে মজবুত করবে এবং রাজ্যে বিনিয়োগ আকর্ষণে সাহায্য করবে।”

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, অষ্টলক্ষী রূপে পরিচিত উত্তর-পূর্ব ভারতের আটটি রাজ্য নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও অফুরন্ত সম্পদের আধার। এই রাজ্যগুলিকে দেবী লক্ষ্মীর প্রতিনিধিত্ব হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “উন্নয়নের মূল ভিত্তি হিসেবে আমরা প্রযুক্তিকে গ্রহণ করেছি। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ৫জি আমাদের প্রশাসনিক কার্যক্রমকে দ্রুত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক করে তুলেছে।” তিনি আরও জানান, রাজ্যের প্রায় ৫৮৩টি গ্রাম এবং সবক’টি শহর ইতোমধ্যেই ৫জি নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে, যা এই অঞ্চলের ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ত্রিপুরা সরকার ৫জি পরিকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘ইনফরমেশন টেকনোলজি পলিসি ২০২২’ এবং ‘ডেটা সেন্টার পলিসি ২০২১’ প্রণয়ন করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, এআই প্রযুক্তিকে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে সম্প্রতি ন্যাশনাল ই-গভর্নেন্স ডিভিশন ও ভারত সরকারের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের সহযোগিতায় একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। কর্মশালাটি এআই ভিত্তিক প্রশাসনের সম্ভাবনা তুলে ধরে, যেমন নীতিনির্ধারণে ডেটা অ্যানালিটিক্স, নাগরিক সেবা সরলীকরণ ও ত্বরান্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ। তিনি বলেন, “ত্রিপুরা সরকার বর্তমানে একটি কাগজবিহীন প্রশাসন চালু করেছে। আগে যেখানে একটি ফাইল প্রক্রিয়াকরণে ৯ দিন লাগত, এখন তা ৩ দিনে সম্পন্ন হচ্ছে। এই ডিজিটাল রূপান্তরের ফলে বার্ষিক প্রায় ৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে, যা প্রশাসনিক দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।”

ডঃ সাহা ৫জি ও এআই প্রযুক্তির পারস্পরিক সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে বলেন, “৫জি প্রযুক্তি দ্রুত ডেটা ট্রান্সফার সক্ষম করে, আর এআই বিভিন্ন প্রসেসকে স্বয়ংক্রিয় করে তোলে। এই দুই প্রযুক্তির সম্মিলন শিল্প, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কার্যাবলির প্রতিটি স্তরে বিপুল সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।” তিনি বলেন, “এই সংমিশ্রণ শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয়, বরং এটি কর্মসংস্থান, শিল্পোন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিরও সহায়ক। আগামী দিনে ত্রিপুরা এমন একটি রাজ্যে পরিণত হবে যেখানে প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি রোল মডেল তৈরি করা সম্ভব হবে।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার ভবিষ্যতের দিকে নজর রেখে দপ্তর-নির্দিষ্ট এআই পাইলট প্রজেক্ট চালু করতে চলেছে, এবং ইতিমধ্যেই একাধিক সরকারি দপ্তরে ডিজিটাল ইন্টারফেস ও সিঙ্গেল-উইন্ডো সিস্টেম বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যার ফলে নাগরিক পরিষেবাগুলির গতি ও কার্যকারিতা বহুগুণে বেড়েছে।

‘রাইসিং নর্থইস্ট ইনভেস্টরস সামিট ২০২৫’-এ মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রযুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ উন্নয়নের রূপরেখা তুলে ধরেছে। রাজ্য সরকার যেভাবে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, এআই এবং ৫জি প্রযুক্তিকে গ্রহণ করে এগিয়ে চলেছে, তা শুধুমাত্র ত্রিপুরাকেই নয়, সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতকে একটি টেকনোলজিক্যাল পাওয়ার হাউজে পরিণত করতে পারে।cropped 800X800