“জৈব পদ্ধতিতে মশা নিয়ন্ত্রণ” NSS ইউনিট উইমেন্স কলেজের এক অভিনব প্রয়াস!
রাজধানীর উইমেন্স কলেজ NSS ইউনিটের উদ্যোগে রাজবাড়ী সংলগ্ন এলাকায় এক সচেতনতা মূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল রাসায়নিক পদার্থের পরিবর্তে জৈব উপায়ে মশা নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। মশার তাণ্ডব থেকে নাগরিক সমাজকে রক্ষা করার উপায় নিয়ে এই কর্মসূচিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
বর্তমান সময়ে মশার উপদ্রবে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাসায়নিক স্প্রের পরিবর্তে প্রাকৃতিক ও জৈব পদ্ধতি মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশি কার্যকরী এবং স্বাস্থ্যসম্মত। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই উইমেন্স কলেজ NSS ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবীরা সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। কর্মসূচির সময় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়, যেখানে জৈব পদ্ধতিতে মশা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়। লিফলেটের মূল বিষয়বস্তু ছিল:
- বাড়ির চারপাশে জমা জল পরিষ্কার রাখা
- ফুলের টব, পুরনো টায়ার, বোতল ইত্যাদিতে জল জমতে না দেওয়া
- তুলসী, নিম, লেমনগ্রাসের মতো উদ্ভিদ বাড়ির আশেপাশে রোপণ করা, যা মশা তাড়াতে সাহায্য করে
- ঘরে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি মশারোধী স্প্রে ব্যবহার করা
স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, এলাকায় কিছু নাগরিক ইচ্ছাকৃতভাবে আবর্জনা ড্রেনে ফেলে চলমান নর্দমার জল আটকে দিচ্ছেন। এর ফলে সেই স্থির জলে মশার বংশবিস্তার বেড়ে গিয়ে জনস্বাস্থ্য বিপর্যস্ত হচ্ছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হল নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
উইমেন্স কলেজ NSS ইউনিটের প্রোগ্রাম অফিসার রমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সমগ্র কর্মসূচি পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র প্রশাসনের পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। মশার উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে আমাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে এবং পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে হবে।”
এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা এবং উইমেন্স কলেজ NSS ইউনিটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে স্বেচ্ছাসেবীদের প্রচেষ্টা এবং সমাজের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতার প্রশংসা করেন। উল্লেখ্য, মশা নিয়ন্ত্রণে রাসায়নিক স্প্রের অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। তাই প্রাকৃতিক ও জৈব পদ্ধতির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উইমেন্স কলেজ NSS ইউনিটের এই প্রচেষ্টা সমাজে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।