CPIM রাজ্য সম্মেলন কি দেখাতে পারবে, আগামী দিনের আন্দোলনের দিশা?
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল CPIM আক্ষরিক অর্থেই কি দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে? দলের পরবর্তী রাজ্য কমিটির সম্পাদক কে হবে, এই প্রশ্নেই রীতিমতো ছন্নছাড়া অবস্থা CPIM দলে। বলতে গেলে ক্ষমতায় না থাকার পরও CPIM তাদের গোষ্ঠী কোন্দল সামাল দিতে পারেনি। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্য সম্পাদকের পদ নিয়ে CPIM দলে এই মূহুর্তে কালনেমির লঙ্কা ভাগ চলছে, এটা বলা যেতেই পারে।
উল্লেখ করার হলো, দল যখন ক্ষমতায় থাকে তখন CPIM দলের হেভিওয়েট নেতা সবারই বিধায়ক হওয়ার ইচ্ছা জাগে। কিন্তু দল যখন ক্ষমতায় নেই, তখন ধনপুর আর মানিক সরকারের নয়, মজলিসপুরে আর মানিক দে প্রার্থী নয়। অন্য দলীয় কর্মীদের প্রার্থী করে নিজেরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কয়েক জন প্রাক্তন বিধায়ক তো ২০১৮ সালে পরাজয়ের পর সেই যে এলাকা ছেড়েছে, আজ পর্যন্ত এলাকায় পা রাখেনি। এসব বীরপুঙ্গব নেতারা এখন ভাষন রাখছে বিজেপি হটাবে। আসলে তাদেরকে এখন আর CPIM দলের কর্মী সমর্থকরাই সহ্য করতে পারছেনা। এই পরিস্থিতিতে যখন এই অংশের নেতারা রাজ্য সম্মেলন নিয়ে কথা বলে তখন কর্মী সমর্থকরা রীতিমতো বিরক্ত বোধ করে। এটাই আজকের সি পি আই এম দলের বাস্তব। এই পরিস্থিতিতে চলতি মাসের ২৯ জানুয়ারি থেকে CPIM দলের রাজ্য সম্মেলন। বর্তমান সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীকে পদ থেকে হটানোর জন্য দলের ভেতরেই একটি গোষ্ঠী রীতিমতো ষড়যন্ত্র করে চলেছে বলে খবর। যাকে কেন্দ্র করে গোটা দল এখন দ্বিধা বিভক্ত। এক্ষেত্রে আরও একটি বড় কারন কাজ করেছে; তাহলো ২০১৮ সালের পর বিজেপি ও তাদের উগ্র নেতা কর্মী সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত পরিবারগুলো। বিজেপি ও তাদের উগ্র সমর্থকদের হাতে হাজার হাজার বাম কর্মী সমর্থক আক্রান্ত। অনেকে বাড়ি ছাড়া। আজও বাড়ি ফিরতে পারছেনা। দল তাদের দায়িত্ব নেওয়া দুরের কথা, তাদের খোঁজ ও রাখেনা। এই পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িক বিজেপি ও তাদের জাতি বিদ্বেষী শক্তিকে ঠেকানোর জন্য, কিংবা সংঘ পরিবারের এজেন্ডাকে ব্যার্থ করার জন্য প্রধান বিরোধী দল হিসাবে কোন ভূমিকাই রাখছেনা সি পি আই এম। উল্টো সি পি আই এম দলের একাংশ নেতা ও জনপ্রতিনিধি বিজেপির নেতাদের সাথে সমঝোতা করেই বাড়ি ঘরে আছেন। একটা সময় বামফ্রন্ট জমানায় যারা বর্ডার গোলচক্কর থেকে শুরু করে নেতাজী চৌমুহনী, উষা বাজার, জিরানিয়া এমন কি ও এন জি সি তে পিস্তল উঁচিয়ে মাফিয়া সান্রাজ্য চালাতে আজ তারা কোথায়? এই প্রশ্নে কিন্তু আজ সি পি আই এম দলের মধ্যে চরম অশান্তি বিরাজ করছে। এর মধ্যেই আগামী ২৯ জানুয়ারি থেকে তিন দিনের রাজ্য সম্মেলন বসছে।