BJP-র লোকসভা সংসদের উপর, ভোটারদের ক্রমবর্ধমান রোষ!!
পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসনে তিপ্রা মথার প্রার্থীকে পদ্ম চিন্হে প্রার্থী করে জিতিয়ে এনে রীতিমতো বিপাকে পড়েছে শাসক দল বিজেপি। খোদ্ শাসক দলের অভ্যন্তরে পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসনের সাংসদ কৃতী সিং দেববর্মন কে নিয়ে চরম অস্থিরতা চলছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, কৃতী সিং দেববর্মন কে প্রার্থী করার জন্য এখন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলতে শুরু করেছে জেলা ও মন্ডল স্তরের একটা বড় অংশের নেতা কর্মীরা।
স্বদলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে এই অসন্তোষের যথেষ্ট কারনও রয়েছে। কেননা, লোকসভা নির্বাচনের পর আজ পর্যন্ত সাংসদ কীর্তি সিং দেববর্মন কে মূহুর্তের জন্যও দেখা যায়না। মাঝে একদফা গন্ডাছড়া, এবং এক দফা আমবাসায় ঝটিকা সফর করেছেন, তাও বিজেপির নেতা কর্মীদের সাথে দুরত্ব রক্ষা করে। বিজেপি দলের টিকিটে সাংসদ হয়েছেন, অথচ বিজেপি নেতা কর্মীদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখছেন। বরং তিপ্রা মথার নেতা কর্মী এবং বিধায়কদের সাথে নিয়েই চলছেন। দলীয় টিকিটে জয়লাভ করা একজন সাংসদের কাছ থেকে এধরনের আচরনে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্ট লোকসভা কেন্দ্রের BJP-র নেতা কর্মীরা। সাংগঠনিক ভাবে যখন এই পরিস্থিতি, তখন পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসনের সাধারণ আমজনতার মধ্যেও সাংসদকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ বিরাজ করছে। কেননা, সাংসদ হওয়ার পর এলাকায় আর পা রাখতে দেখা যায়না সাংসদ কীর্তি সিং দেববর্মন কে। স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রভাব কিন্তু বিজেপির সমর্থক কিংবা ভোটারদের মধ্যে পড়তে শুরু করেছে; টান পড়েছে পাহাড়ে বিজেপির সংগঠনেও। পাহাড়েও বিজেপির জনভিত্তিতে ভাটার টান পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ের রাজনীতিতে তিপ্রা মথার উপর নির্ভর করতে গিয়ে জনজাতি মোর্চাকে কর্মসূচিহীন সংগঠনে পরিণত করা হয়েছে; ফলে জনজাতি মোর্চা একপ্রকার কোমায় আচ্ছন্ন। স্বাভাবিক ভাবেই এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে CPIM পাহাড় পুনর্দখলে নেমে পড়েছে। তাতে সফলতাও পাচ্ছে। কোথাও কোথাও কংগ্রেস দলও পাহাড়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে গিয়ে জনসমর্থন মজবুত করে চলেছে। BJP-র মধ্যে ভাংগন ধরাতে সমর্থ হচ্ছে কংগ্রেস। এক্ষেত্রে কারন একটাই, পাহাড় নিয়ে BJP-র ছন্নছাড়া অবস্থা। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, দিল্লিতে গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাংসদ কীর্তি সিং দেববর্মন BJP নেতাদের সাথে না নিয়ে ভাই প্রদ্যোত্ কিশোর দেববর্মনকে নিয়েই কোন মন্ত্রী কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের কোন আমলার সাথে বৈঠক করেন। বিভিন্ন সময় এই ছবি সামাজিক মাধ্যমেও প্রচারিত হয়েছে। তারপরও কিন্তু রাজ্যের বর্তমান প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, কিংবা প্রদেশ কমিটির অন্যান্য হেভিওয়েট নেতাদের তা নিয়ে কোন হেলদোল নেই। সাধারণ ভোটাররা সাংসদের প্রতি, এ নিয়ে প্রতিশ্রুতি খেলাফের অভিযোগ তুলছেন।