ত্রিপুরা রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতি সশক্তিকরনে প্রাণী সম্পদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রাণীপালনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ তথা সামাজিক- অর্থনৈতিক উন্নতিতে স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী বা এসএইচজি গ্রুপগুলোর সক্রিয় অংশ গ্রহন অত্যন্ত জরুরী। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের জিএসডিপি বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাভবনে আয়োজিত এ-হেল্প প্রোগ্রামের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রকল্প রূপায়ণ করছেন। রাজ্য সরকারও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত দিশায় কাজ করছে। এ- হেল্প প্রকল্পের মাধ্যমে এখন দূরদূরান্তে থাকা পশুপাখিরাও স্বাস্থ্য পরিষেবায় পশু সখীদের মাধ্যমে উপকৃত হবে। আর এই বিষয়কে বিবেচনায় রেখে ২০২১ এর ২লা সেপ্টেম্বর গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মধ্যস্থতায় পশুপালন ও দুগ্ধশিল্প দপ্তর এবং রাষ্ট্রীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন এর মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদন করে কেন্দ্রীয় সরকার। এই চুক্তি অনুযায়ী, বিভিন্ন স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যরা যারা পশুসখী হিসেবে নিয়োজিত, তারা প্রাণী স্বাস্থ্যের প্রাথমিক পরিষেবা প্রদানে এক্রিডিটেড এজেন্ট ফর হেল্থ এন্ড এক্সটেনশন অফ লাইভস্টক প্রোডাকশন এর স্বীকৃত প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পশু চিকিৎসা পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় বর্তমানে একটি ভেটেরিনারি কলেজ রয়েছে। সেখানে ফ্যাকাল্টির কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে এই সমস্যা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে এই দপ্তরের কর্মীরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি পশু স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এ – হেল্প এর অধীনে স্বীকৃত প্রতিনিধি হিসাবে পশুপালন কর্মীদের অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে রাজ্যের পশু স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে আরো উন্নত করবে।
ডাঃ সাহা বলেন, এই প্রকল্পের অধীনে ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনের (টিআরএলএম) সাথে যুক্ত পশুপালন কর্মীরা স্বীকৃত এ-হেল্প প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবেন। রাজ্যের প্রানী সম্পদ বিকাশ দপ্তর ন্যাশনাল ডায়েরি ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট বোর্ড এর সহায়তায় এই সমস্ত নির্বাচিত পশু-সখীদের ১৬ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করবে। প্রশিক্ষন পরবর্তীকালে সমস্ত প্রশিক্ষন প্রাপ্ত পশু-সখীদের মাধ্যমে প্রাথমিক প্রাণী পরিষেবা একেবারে গ্রামীন স্তরের প্রাণী পালকদের ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি সঠিক প্রাণী স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে কৃত্রিম প্রজনন টিকাকরনের মত পরিষেবাগুলি স্থানীয় পশু চিকিৎসকদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে করা হবে। স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের পাশাপাশি গ্রামের গবাদি পশুপাখীর পরিসংখ্যা নথিভুক্ত করা, পশুপাখীর জন্ম মৃত্যুর হিসাব রাখাও এ-হেল্প পশু সখীদের কাজে আসবে। এই প্রকল্পে পশু সখীরা গ্রামের প্রাণী পালকদের বিজ্ঞান সম্মত প্রাণী পরিচর্যা ও অন্যান্য প্রাণী পালক বিষয়ক তথ্য সরবরাহ করবে। এদিন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস, সচিব দীপা ডি নায়ার সহ দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ।