বর্ষার প্রাক্কালেই জাতীয় সড়কের বেহাল দশা!
২০৮ নং জাতীয় সড়কে বিপজ্জনক ভাঙন দেখা দিয়েছে, যা বর্ষার প্রাক্কালে যান চালকদের জন্য চরম দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতি নিম্নমানের নির্মাণ কাজের ফলে এক বছরের মধ্যেই রাস্তার বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত ও ধসে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কমলপুরের মানিকভান্ডার থেকে খোয়াইয়ের বেহালাবাড়ি, বাচাইবাড়ি, চেরমা, সিঙ্গিছড়া, জাম্বুরা এবং গনকী হয়ে আগরতলা পর্যন্ত বিস্তৃত ২০৮ নং জাতীয় সড়কের প্রায় ৮০ কিলোমিটার অংশের মধ্যে বেশ কিছু স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে খোয়াইয়ের বেহালাবাড়ি থেকে বাচাইবাড়ি, চেরমা এবং জাম্বুরা পর্যন্ত রাস্তাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুকনো মরশুমেই যখন রাস্তার এই অবস্থা, তখন বর্ষাকালে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হবে তা নিয়েই শঙ্কিত স্থানীয় মানুষজন।
স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের ফলে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বহিরাজ্যের একাধিক এজেন্সির মাধ্যমে জাতীয় সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও নির্মাণের সময় গুণগত মান বজায় রাখা হয়নি। মাত্র এক বছরের মধ্যেই রাস্তার বিভিন্ন অংশ ধসে পড়েছে, অনেক স্থানে কয়েক ফুট মাটির নিচে বসে গেছে, এবং বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
জাতীয় সড়ক নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও কাজের মান নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে। খোয়াই মহকুমার বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও শাসক দলের পক্ষ থেকে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। রাস্তা নির্মাণে ব্যবহৃত বালু ও পাথর স্থানীয় প্রভাবশালী নেতৃত্বরা সরবরাহ করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুকুর-ডোবা বা ধানক্ষেতের উপরে মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করা হলেও যথাযথভাবে মাটি চাপানো হয়নি, যার ফলে কিছু স্থানে রাস্তা দুই ফুট পর্যন্ত বসে গেছে এবং কোথাও বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষা আসার আগেই এই রাস্তা মেরামত না করা হলে সড়কটি যান চলাচলের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি উঠেছে, অবিলম্বে সড়কটির পুনর্নির্মাণ এবং গুণগত মান নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক, যাতে বর্ষার সময় যান চালক ও সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে না হয়।