মোদির কৌশলগত সাফল্যের এক নতুন দিগন্ত!
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক আমেরিকা সফর ভারত-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। সফরকালে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছান।
মোদি ও ট্রাম্পের বৈঠকে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং চিপ ম্যানুফ্যাকচারিং নিয়ে আলোচনা হয়।আমেরিকার প্রযুক্তি সংস্থাগুলো ভারতের ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়।
ইলন মাস্কের সাথে মোদির সাক্ষাৎ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, যেখানে টেসলা ও অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর বিনিয়োগের প্রসঙ্গ উঠে আসে। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়, যেখানে উভয় দেশ একে অপরের জন্য নতুন বাজার উন্মুক্ত করতে রাজি হয়েছে। ভারতের টেক্সটাইল, ফার্মা, এবং আইটি সেক্টরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে অত্যাধুনিক মার্কিন অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কেনার চুক্তি হয়। চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্যের প্রেক্ষিতে ভারত ও আমেরিকা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যৌথ সামরিক মহড়া এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে।নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্ব আরও গভীর হবে বলে ঘোষণা করা হয়। ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে আমেরিকা বড় ধরনের বিনিয়োগ করবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যৌথ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মোদির এই সফরে তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ভারত-মার্কিন বন্ধুত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন। মার্কিন সিনেটে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরও গভীর করতে নতুন নীতিগত উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলা হয়। এই সফরের ফলে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নতুন দিগন্তে পৌঁছেছে। প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, জ্বালানি এবং কৌশলগত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে যে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা আগামী দিনে বৈশ্বিক কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি সফরের শেষ দিনে বলেন, “এই সফর ভারত ও আমেরিকার অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ সহযোগিতার পথ সুগম করবে।” ভারতের প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা খাতে বড় ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ আসতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের বিরুদ্ধে ভারত ও আমেরিকার যৌথ অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে। এই সফর শুধু কূটনৈতিক সাফল্য নয়, বরং এটি ভারতের ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথকে সুগম করেছে।