অশান্ত বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসা ও ব্যবসার কাজে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত যাওয়া বাড়ছে। দলে দলে দেশে ফিরছেন বাংলাদেশিরা। এদিকে খরা কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে শ্যামলী পরিবহন। বাংলাদেশের শ্যামলী পরিবহনের বাস আক্রান্ত হওয়ার পর গত দুদিন এখান থেকে কোন যাত্রী যেতে সাহস করেননি। অবশেষে আতঙ্ক কাটিয়ে শ্যামলী পরিবহনের বাসে বাংলাদেশ যাওয়ার জন্য টিকিট কাটতে আসছেন অনেকেই। এমনটাই জানিয়েছেন শ্যামলী এনার ট্রাভেলসের ম্যানেজার বিধান চক্রবর্তী। তিনি বলেন একসময় মঙ্গল, বৃহস্পতি শনি অর্থাৎ সপ্তাহে তিন দিন শ্যামলী পরিবহনের বাস চলাচল করতো। এখন শুধুমাত্র মঙ্গল এবং শনিবার। আগরতলা থেকে যাচ্ছে শ্যামলী পরিবহনের বাস। আগামী শনিবার এই বাসে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ১৬ জন যাত্রী টিকিট কেটেছেন। পুরোপুরিভাবে টিকেট বিক্রি না হলেও মোটামুটি ভাবে মানুষ যাবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। ৩১ আসনের বাসের বেশ কিছু আসন ফাঁকা থাকছে প্রতিদিন৷ বাংলাদেশ থেকে ও এপারে আসছেন অনেকেই। যদিও এখন বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে সহকারি হাইকমিশন অফিস থেকে ভিসা প্রদান বন্ধ। তারপরেও যারা আটকে আছেন তাদের মধ্যে দেশে ফিরে যাওয়ার এটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ম্যানেজার বিধান চক্রবর্তী জানিয়েছেন এখান থেকে নরসিংদী, ভৈরব সহ বেশ কিছু জায়গায় যাচ্ছেন যাত্রী।
বাংলাদেশিরা মূলত দু’টি উদ্দেশ্যে আগরতলায় আসেন— চিকিৎসার প্রয়োজন ও ব্যবসার কাজে। সাম্প্রতিক অশান্তির জেরে দুই জায়গাতেই হয়েছে সমস্যা। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বিদ্বেষের ঘটনা বেড়ে চলার প্রেক্ষিতে আগরতলার হোটেলে বাংলাদেশীদের বুকিং বন্ধ আবার সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা পরিসেবা বন্ধ করার ঘোষনা না দেওয়া হলেও একটি বেসরকারি হাসপাতালে কিন্তু পরিসেবা বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। এতেও বিপাকে পড়েছেন অনেক বাংলাদেশী৷ তবে অটল বিহারি বাজপেয়ী আঞ্চলিক ক্যান্সার হাসপাতালে কিন্তু অনেক বাংলাদেশী চিকিৎসা পরিসেবা নিতে আসছেন এখনো৷ শহরের কোন চিকিৎসক এখনো বাংলাদেশীদের চিকিৎসা করবেন না বলে কোন ঘোষণা দেন নি৷ কোন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ আপাতত বাংলাদেশি রোগী দেখা মুলতুবি রাখার কথা ঘোষণা করেছেন বলে জানা নেই। ফলে থাকার হোটল সমস্যা থাকার কারনে বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসা করাতে আসা অনেক বাংলাদেশি। এটাও ঠিক বাংলাদেশে অশান্তির জেরে এখন দু’দেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত অনেকটাই কম। হিন্দু ধর্মগুরু চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পরে ফের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে দু’দেশের মধ্যে দৈনিক কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করতেন। এখন তা কমে গিয়েছে অনেকাটাই। ভারত সরকার এখন বাংলাদেশিদের মেডিক্যাল ভিসা ছাড়া আর কোনও ভিসা দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন অফিস। সব মিলিয়ে সমস্যা বাড়ছে।