নর্থ ইস্ট কাউন্সিলের বৈঠক ঘিরে জোর প্রস্তুতি চলছে রাজ্য প্রশাসনে। সেজে উঠছে হোটেলগুলো। এনইসি বৈঠকে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। এর আগে গত আগষ্ট মাসে বৈঠকের কথা ছিল৷ কিন্তু ভয়াবহ বন্যার কারনে বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। এবারের বৈঠকে আসছেন ৬ রাজ্যের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীরা৷ ত্রিপুরা সহ সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালরা বৈঠকে অংশ নেবেন৷ আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর দুদিন হবে এনইসির বৈঠক। আগামী ১৯ ডিসেম্বর আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ও মন্ত্রীসভার সদস্যদের সাথে বৈঠক করবেন বলে খবর।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে এবারের বৈঠকে আলোচনা হবে৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। ফলে অনুপ্রবেশ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে একটা বড় সমস্যা। কিভাবে সমস্যা দুর করা যায়, বিশেষ করে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে এনইসির বৈঠকে৷ বৈঠকের উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বৈঠকের ফাকে সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে পৃথকভাবে বৈঠক করবেন বলে খবর। বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলোতে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যগুলোর কাছ থেকে রিপোর্ট চাইবেন তিনি।উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে নেশার রমরমা, উন্নয়ন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বাস্তবায়ন কতটা, ডোনার মন্ত্রকের আর্থিক সহায়তায় যে সব প্রকল্পের কাজ হচ্ছে সেই সব প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে বিস্তৃত আলোচনা হবে। পাশাপাশি আগামীদিনে রাজ্যগুলোর কর্মপরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হবে বলে খবর ৷
তথ্য বলছে, ২০০৮ সালের ১৩ মে আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে এনইসির ৫৬ তম বৈঠক হয়। সে সময় রাজ্যে ছিল বাম সরকার। আর কেন্দ্রে ছিল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার। আর এবার ডাবল ইন্জিনের সরকার। জানা গেছে ছয় রাজ্যে থেকে প্রায় শতাধিক প্রতিনিধি আসছেন ধরে নিয়ে শহরের বড় হোটেলগুলো সাজিয়ে তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ডোনার মন্ত্রীর পাশাপাশি আরো একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসার কথা। জানা গেছে আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে হোটেলগুলো রাজ্য সরকারের অধীনে চলে যাবে। রাজ্য সরকারের অতিথিশালা, জিঞ্জার হোটেল, পোলো টাওয়ার সহ বিলাসবহুল আরো একটি হোটেল ইতিমধ্যেই বুক করা হয়েছে বলে খবর। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা মুম্বাই থেকে ফিরে এলে হবে প্রস্তুতি বৈঠক ৷
অতিথি দেব ভবঃ। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর আমন্ত্রিত অতিথিদের উষ্ঞ অভর্থ্যনা জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে রাজ্য৷ ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী চিরায়ত সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে অতিথিদের বরন করা হবে বলে খবর। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজ্যে অবস্থান কালে বৈঠকের ফাঁকে রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বদের সাথে সাংগঠনিক বৈঠক করবেন৷ বৈঠক করবেন তিপ্রামথার নেতাদের সাথে ও৷ এডিসির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে দাবি সনদ তুলে দেওয়া হতে পারে বলে খবর। রাজ্য পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর আধিকারিকদের সাথেও পৃথকভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বৈঠক করার কথা রয়েছে। ২০০৮ সালের মতই এবারো এনইসি বৈঠক হওয়ার কথা প্রজ্ঞা ভবনে। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের পর ফের রাজ্যে এতবর বৈঠকের আয়োজন হচ্ছে। দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকই হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহার শাসনকালে। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিদেশ থেকে রাজ্যে প্রতিনিধি হিসেবে যারা এসেছিলেন তারা রাজ্যের আয়োজনে আপ্লুত৷ বিদেশ থেকে প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি এসেছিলেন কুটনৈতিকরা। তারা রাজ্যের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হন। নীতি আয়োগের বৈঠকেও জি-২০ বৈঠকে রাজ্যের আতিথেয়তার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। অবশ্যই রাজ্যের কাছে বড় প্রাপ্তি। সারা বিশ্বের কাছে রাজ্যকে মেলে ধরার সুযোগ হয়েছিল। ডাক্তার মানিক সাহার নেতৃত্বাধীন সরকার সেই কাজটা সুচারু রুপে সম্পন্ন করতে পেরেছে। এবার এনইসি বৈঠক আয়োজনের দায়িত্ব পরেছে রাজ্যের উপর। ফলে প্রস্তুতিতে কোন খামতি রাখতে চাইছে না রাজ্য৷