লোকসানে চলা গোমতী কোওপারেটিভ মিল্ক প্রডিউসার্স ইউনিয়নকে লাভের মুখ দেখাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ইউনিয়নের নতুন বোর্ড। গ্রহন করেছে একাধিক নতুন নতুন কর্মসূচি। একদিকে ইউনিয়নকে লাভের মুখ দেখানো, পাশাপাশি দুধ সহ বিভিন্ন দুগ্ধজাত পুষ্টিকর খাদ্য নাগরিকদের ঘরে পৌঁছে দেওয়া এই মূহুর্তে মূল লক্ষ্য। একটা সময় ছিল যখন শুধু দুধ সরবরাহ করা হতো। কিন্তু ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে দই, পনির, আইসক্রিম ও ঘী উত্পাদন শুরু হয় ইন্দ্রনগর ডেয়ারি থেকে। তার আগেও এই চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু সফল হয়নি। কিন্তু ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে দই, পনির, আইসক্রিম ও ঘী শুধু উত্পাদনই হয়নি, ১৫ টা ন্যায্য মূল্যের দোকানের মাধ্যমে তা রেশন ভোক্তাদের কাছে ভর্তুকিতে বিক্রি শুরু হয়। ইউনিয়নের বোর্ড সিদ্ধান্ত গ্রহন করে দই বিক্রিতে ১৫ শতাংশ, আইসক্রিম বিক্রিতে ২২ শতাংশ এবং ঘী বিক্রিতে ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্ত মোতাবেকই বিক্রি হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই আরও ৭ টি রেশন সপ্ আবেদন করেছে দুধ, দই, আইসক্রিম ও ঘী বিক্রি করার জন্য অনুমতি দিতে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বামফ্রন্টের জমানায় গোমতী কোওপারেটিভ মিল্ক প্রডিউসার ইউনিয়নকে লোকসানে ফেলে গিয়েছিল তখনকার বোর্ড। ঋনের ভাড়ে জর্জরিত ইউনিয়নকে লাভের মুখ দেখাতে সচেষ্ট হয় বর্তমান বোর্ড। এই লক্ষ্যে গত ৬ মাস পূর্বে গোমতী কোওপারেটিভ মিল্ক প্রডিউসার ইউনিয়ন নিজস্ব অত্যাধুনিক মেশিনের মাধ্যমে মিনারেল ওয়াটার প্রস্তুতি করতে শুরু করে। নাম দেওয়া হয়েছে “পিউর লাইট”। যেহেতু উন্নত মানের তাই বাজার থেকে ডেয়ারির মিনারেল ওয়াটারের দাম খানিকটা বেশি।
ইউনিয়নের মূল ভিত্তি হলো ১৯০ টি সমিতি। তাই সমিতি গুলোকে বাঁচিয়ে রাখা ইউনিয়নের প্রধান দায়িত্ব। তার জন্য প্রতি বছর শেষে ১৯০ টি ইউনিয়নকে বোনাস্ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় । প্রতি লিটারে ৩ টাকা করে বোনাস্ দেওয়া হয়। তাছাড়া ভর্তুকিতে সমতিগুলোকে গো খাদ্য দেওয়া হয়। যেখানে খোলা বাজারে প্রতি কেজি গো খাদ্যের দাম কম করেও ৩৮ টাকা। সেখানে গোমতী কোওপারেটিভ মিল্ক প্রডিউসার ইউনিয়ন থেকে প্রতি কেজি ২৬ টাকা দামে কৃষকদেরকে সরবরাহ করা হয় সমিতি গুলোর মাধ্যমে। উল্লেখ করার বিষয় হলো, গোমতী কোওপারেটিভ মিল্ক প্রডিউসার ইউনিয়ন কে যেমন লোকসান থেকে টেনে তোলা জরুরি তার চেয়েও বেশি জরুরি ইউনিয়নের মাধ্যমে কৃষকদের এবং পশু পালকদের আয় বাড়ানো। তার জন্য আগামী দিনে রাজ্যের প্রকৃতি সম্পদ ও কাঁচা মালের উপর ভিত্তি করে আরও নতুন নতুন খাদ্য পন্য উত্পাদন করার চিন্তা ভাবনা করছে ইউনিয়ন। তার জন্য গোমতী কোওপারেটিভ মিল্ক প্রডিউসার ইউনিয়নের তরফ থেকে একটি রিসার্চ গ্রুপ তৈরি করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে আগামী দিনে খাদ্য প্রক্রিয়া করনের উপর ভিত্তি করে রাজ্যের পাহাড় ও সমতলের বেকারদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।