আদালতের দেওয়া নির্দিষ্ট সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও রাজ্যের সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরন করা হয় নি।
তিন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়। শিক্ষা দপ্তরের সচিব রাবেল হেমেন্দ্র কুমার, বুনিয়াদি শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তথা সমগ্র শিক্ষার রাজ্য প্রকল্প অধিকর্তা এন সি শর্মা এবং অর্থদপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
মঙ্গলবার রাজ্য হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি অপরেশ কুমার সিংহ এবং বিচারপতি এস. দত্ত পুরকায়স্থ এর ডিভিশন বেঞ্চে সর্বশিক্ষার আদালত অবমাননা মামলার শুনানি হয়। আগামী তিন ডিসেম্বর আদালত অবমাননা মামলার পরবর্তী শুনানি। আদালত আধিকারিকদের নোটিশ জারি করে এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলেছে।
চলতি বছরের ১৬ জুলাই উচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরন করতে সি-টেট বা টি-টেট এর কোন প্রয়োজন নেই৷ তিন মাসের মধ্যে নিয়মিতকরনের স্কিমকে সংশোধন করে শিক্ষকদের নিয়মিত করতে হবে ।
উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের স্পষ্ট নির্দেশ,
যে সব শিক্ষকের চাকুরীর বিজ্ঞাপন ২০২১ সালের ২৯ জুলাই এর পূর্বে প্রকাশিত হয়েছে সেই সব শিক্ষকদের নিয়মিতকরন করতে রাজ্য সরকার সি-টেট বা টি-টেট এর জন্য বাধ্য করাতে পারবে না। এই নির্দেশ তিন মাসের মধ্যে কার্যকর করতে হবে।
২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরন সংক্রান্ত মামলায় উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ শিক্ষকদের নিয়মিতকরন সহ পেনশন প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল।
শিক্ষকদের অভিযোগ নিয়মিতকরনের নির্দেশ থাকার পরও রাজ্য সরকার ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষকদের জন্য নিয়মিতকরনের স্কিম তৈরি করবে বলে জানায়। যে সব সর্বশিক্ষার শিক্ষক সি-টেট বা টি-টেট উওীর্ন হবেন তাদেরকে নিয়মিতকরন করে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু কথা রাখে নি সরকার৷ সর্বশিক্ষায় নিয়োজিত শিক্ষকদের আরও অভিযোগ ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন সর্বশিক্ষার শিক্ষকরা তৎকালীন বাম সরকারের উপর থেকে নিয়মিতকরনের বিষয়ে আস্থা হারিয়ে আগরতলায় আমরণ অনশন বসেছিলেন তখন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, সে সময়ের প্রভারী সুনীল দেওধর, বর্তমান মন্ত্রী রতনলাল নাথ, টিংকু রায় সহ সকলই আমরণ অনশন মঞ্চে এসে কথা দিয়েছিল সরকার গড়লে তিন মাসের মধ্যে তাদের নিয়মিত করা হবে। এখানেই শেষ নয় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মানিক
সরকারের সমালোচনা করেছিলেন তারা৷ শিক্ষকদের অতিসত্ত্বর নিয়মিতকরন করার জন্য বাম সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন তারা৷ সরকার পরিবর্তনের পর সাড়ে ছয় বছর কেটে গেলেও নিয়মিতকরনের দেখা নেই।
এমনকি আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত মানতে চাইছে না ডাবল ইন্জিনের সরকার।
চলতি বছরের ১৬ জুলাই উচ্চ আদালত পুনরায় রায় প্রদান করে বলে, সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরন করতে সি-টেট বা টি-টেট এর জন্য বাধ্য করানো যাবে না। এবং তিন মাসের মধ্যে নিয়মিতকরনের স্কিমকে সংশোধন করে শিক্ষকদের নিয়মিত করতে হবে।এই সময় সীমার মধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশ না মানার জন্য রাজ্য সরকারের তিন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায় থেকে স্পষ্ট, রাজ্য সরকার সমস্ত নিয়মনীতি মেনেই সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের চাকুরী দিয়েছেন। তারপরেও তাদের নিয়মিতকরন করা হলো না৷