চলতি মাসের ২৮ তারিখ থেকে আগরতলায় শুরু হচ্ছে উত্তরপুর্ব উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠক। এর আগে ২৯ আগষ্ট এনইসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ভয়াবহ বন্যার কারনে সে বৈঠক স্থগিত করা হলেও বাতিল করা হয় নি।
কথা ছিলো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠকে যোগ দেবেন। কিন্তু ভয়াবহ বন্যার কারণে বৈঠক স্থগিত করে দেওয়া হয়। মহাকরন সুত্রে জানা গেছে
চলতি মাসের শেষদিকে অর্থাৎ আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে শুরু হবে বৈঠক। দুইদিন চলবে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রেও খবরের সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রশাসনিক স্তরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জানা গেছে, বৈঠকের উদ্বোধনে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়াও ডোনার মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকের ফাঁকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে বৈঠক করার পাশাপাশি তিপ্রামথার প্রতিনিধিদের সাথেও বৈঠক করতে পারেন।
ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। প্রজ্ঞা ভবনে হবে বৈঠক। আগরতলা বিমানবন্দর থেকে প্রজ্ঞা ভবন পর্যন্ত রাস্তার দুদিক ঝাড়পোছ, রঙ চলছে৷ সরকারি অতিথি শালা সহ বেশ কিছু হোটেল সাজিয়ে তোলার কাজ চলছে৷ আগামী ২২ নভেম্বর এনইসি বৈঠকের রুপরেখা ঠিক করতে আসছেন ডোনার সচিব সহ উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা৷ সেদিন বৈঠক হবে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের কনফারেন্স হলে হবে বৈঠক। বৈঠকের পরেই সরকারিভাবে এনইসি বৈঠকের দিনক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। আগামী ২৪ নভেম্বর থেকেই উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যের আধিকারিকরা রাজ্যে আসতে শুরু করবেন৷
উত্তর পূর্বাঞ্চলের আট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও পুলিশের মহানির্দেশকরা যোগ দেবেন বৈঠকে৷ ২০০৮ সালের ১৩ মে আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে এনইসির ৫৬ তম বৈঠক হয়৷ নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিল হল উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের নোডাল সংস্থা যা আটটি রাজ্য অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম এবং ত্রিপুরা নিয়ে গঠিত। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর ডাক্তার মানিক সাহা এনইসির দুটো সভায় যোগ দিয়েছিলেন৷
নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিলের ৭০ তম পূর্ণাঙ্গ সভা হয় ২০২৩ সালের ৮-৯ অক্টোবর গুয়াহাটির আসাম আজাদ প্রশাসনিক কলেজে । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উত্তর পূর্ব পরিষদের চেয়ারম্যান অমিত শাহ এই পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা সেই বৈঠকে উত্তর-পূর্বের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় যেমন এসডিজি, উত্তর-পূর্বের জন্য জেলা নির্দেশক কাঠামো, উত্তর-পূর্বে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ (পিপিপি), ৫জি পরিষেবা, ডিজিটাল স্কুল চালু করা ইত্যাদির উপর গুরত্ব দিয়েছিলেন।
৭১ তম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি শিলংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। স্টেট কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত বৈঠকে
মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা যোগ দেন এবং ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য এনইসির তহবিল বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানান। তিনি ত্রিপুরার উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। এনইসি তহবিল বরাদ্দ বাড়ানো, টিএমসিকে এইমস-এর মতো ইনস্টিটিউটে উন্নীত করা, এডিসি এলাকায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, শিল্প উদ্দেশ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, আগরতলা- কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের প্রাথমিক কার্যক্রম চালু করার দাবি করেছিলেন। এবার আগরতলায় হবে এনইসির বৈঠক। প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে বলে খবর।
২০১৪ সালে কেন্দ্রে মোদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরই ইউপিএ সরকারের ‘লুক ইস্ট’ পলিসির পরিবর্তে ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ পলিসি চালু করেছে। ফলে স্বভাবতই উত্তর পূর্বাঞ্চলের পর্যদের এই বৈঠকটি নিঃসন্দেহে রাজ্যগুলির কাছে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বৈঠকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাদের নিজ নিজ রাজ্যের রাজ্যের সার্বিক রূপরেখা তুলে ধরে থাকেন।