ত্রিপুরার চাতক পাখিরা সপ্তমের জায়গায় পেলেন ৫%
ত্রিপুরার ইতিহাসে সেই জুট আমলই ছিল কর্মচারীদের জন্য একমাত্র সুষময়। কারণ জুট আমলেই ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রথম এবং শেষ পে কমিশন দিয়েছিল। তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় টানা বাম আমলের। বামপন্থীরা তাদের নীতিগত কারণে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বঞ্চনা অব্যাহত রাখে এবং পে-কমিশন দেয়ার কোন সদিচ্ছা তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। উপরন্ত কেন্দ্রীয় বঞ্চনা বলে মিছিলের লাইন লম্বা করে পুরোটা সময় কাটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের কাছে সেই বাম আমলে কর্মচারীদের পে কমিশন দেয়ার জন্য কখনো টাকাই চাওয়া হয়নি। আর ঠিক তাই ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা পুরোটা বাম আমলেই তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছে।
২০১৮ সালে বিজেপি নামক রাজনৈতিক দলটি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে,পুরো কর্মচারী কূল কে মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের দলে নিয়েছিলয এবং বলেছিল তারা ক্ষমতায় আসলে ত্রিপুরাতে পূর্ণাঙ্গ সপ্তম পে কমিশন চালু করবে। তখন তারা হিসাব করে দেখিয়েছিল ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা প্রকৃতপক্ষে কত টাকা করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ত্রিপুরার কর্মচারী সমাজ ভেবেছিল দীর্ঘ বহু বছর পর হয়তোবা তারা আবার প্রকৃত পে কমিশন পাবেন! হায়রে পোড়া কপাল, সেটা ছিল পুরুই একটা ফাঁদ, আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ তাদের পক্ষে মত দান করেন। ফলস্বরূপ ২০১৮ সালে বিজেপি নামক রাজনৈতিক দলটি ক্ষমতার আসনে বসেন।
ক্ষমতায় বসেই তারা তাদের প্রকৃত রূপে এসে যান এবং শুরু হয় কর্মচারীদের ওপর বিভিন্ন লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার প্রেক্ষাপট। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় বিপ্লব কুমার দেব কর্মচারীদের উপর প্রয়োগ করেন এক দানবীয় আইন যার নাম “এজমা”, বন্ধ করে দেওয়া হয় কর্মচারীদের পেনশন নামক সুবিধা টুকুও, যা বাম আমলে, তাদের সংগ্রামের ফল বলে টিকিয়ে রেখেছিল। শুরু হয় কর্মচারী বঞ্চনার আরেক নতুন অধ্যায়ের।
২০১৮ সালে নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে আসামের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরায় এসে বলেছিলেন “যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে প্রথম কেবিনেটেই সিদ্ধান্ত করে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ সপ্তম পে কমিশন চালু করে দেয়া হবে। আর যদি না দেওয়া হয় তাহলে লোকসভা ইলেকশনে বা তারপরে কখনো বিজেপিকে আর ভোট দেবেন না”। আর এই নিয়ে “ঘুমা ঘুমা কে চালানো” একটি প্রবাদ ও নেট দুনিয়ায় খুব ভাইরাল হয়েছিল, যা আপামোর ত্রিপুরাবাসিরই জানা আছে।
যেখানে বলা হয়েছিল প্রথম কেবিনেটে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশন দেয়া হবে সেই জায়গায় দেখা গেল উল্টো একচিত্র। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন যে ত্রিপুরা রাজ্যের মন্ত্রী এবং এম এল এ দের মাসিক পারিশ্রমিক বাবদ যে ভাতা তারা পেতেন তা বাড়িয়ে নিজেদের ইচ্ছামত প্রায় তিনগুণ করে দেওয়া হবে এবং কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশনের জায়গায় সামান্য কিছু বেতন বৃদ্ধি করে ক্ষান্ত হয়ে গেলেন। যা ছিল সপ্তম পে কমিশনের তুলনায় সামান্য কিছু ভিক্ষার সমতুল্য। উপরন্ত বছরে যে দুবার D.A দেয়া হতো তা ভুলেই গিয়েছিলেন কর্মচারী সমাজ।
এমতাবস্থায় বিজেপি সরকারের প্রায় শেষ লগ্নে ঘটলো এক নাটকীয় পরিবর্তন আবির্ভূত হল এক নতুন চেহারার “ডক্টর মানিক সাহা”। ত্রিপুরার ইতিহাসে এই প্রথম; পেশায় ডাক্তার, নিছক ভদ্রলোক, শিক্ষিত এবং বুদ্ধিমান মুখ্যমন্ত্রী। যিনি পরবর্তী নির্বাচনের প্রাক মুহুর্তে ঘোষণা করা হয়েছিল ত্রিপুরার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংখ্যার D.A, কিন্তু কমিয়ে আনা যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের সঙ্গে পার্থক্য।
ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী সমাজ তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন তো হয়ইনি বরং মুষ্টিমেয় কিছু লোকের ভাগ্যের পরিবর্তন করে দিয়েছেন। কর্মচারী সমাজ যেখানে ছিলেন, আজও ঠিক সেখানেই আছেন বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে উলটো পিছিয়ে পড়েছে। যেমন ত্রিপুরা রাজ্যের নার্সদের পোশাক এবং পোশাক পরিস্কার রাখার জন্য মাসিক মাত্র ১৫০ টাকা ভাতা দেয়া হতো, যেখানে সপ্তম পে কমিশন অনুযায়ী এই ভাতার পরিমাণ মাসিক ১৮০০ টাকা, যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ নার্সরা পাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত নার্সদের প্রাপ্য হ্যাজার্ড এলাউন্স, যা তারা বহুদিন ধরে দাবি করে আসছিল তা আজও তারা পায়নি। সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী নার্সদের নাম পরিবর্তন করে Nursing Officer করা হয়েছে এবং তাদেরকে গ্রুপ B কর্মচারী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার নার্সদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন থেকে শুধু নাম টুকু এনে ওদেরকে Nursing Officer বানিয়ে দিয়েছে। আর এতেই বর্তমানে নার্সদের নেতা হিসেবে পরিচয় দেওয়া কিছু নার্স, তাদের নবনির্মিত সংগঠনের সাফল্য হিসেবে প্রচার করছেন। অথচ ত্রিপুরা রাজ্যে প্রায় সব সরকারি পদেরই পদোন্নতি হয়েছে, একমাত্র নার্সদেরই কোন পদোন্নতি হয়নি এবং এ নিয়ে ওইসব স্বার্থান্বেষী সংগঠনগুলির কোন বক্তব্যও নেই, হাসপাতাল গুলিতে রোগী এবং নার্স এর অনুপাত নিয়েও এদের কোন হেলদোল নেই, ফলস্বরূপ সাধারণ রোগীরা তাদের পরিষেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত থাকছেন এবং সরকারি হাসপাতাল গুলিতে পরিষেবা দিন দিন তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। স্বাভাবিক কারণেই নার্সদের প্রতি সাধারণ মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ত্রিপুরা রাজ্যে এই প্রথম একজন ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী পেয়ে নার্স সমাজ ভেবেছিল যে তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার হয়তো এবার সমাপ্তি হবে। সেই গুড়ে বালি ঢেলে দিয়ে, ডাক্তার পরিচালিত ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার, নার্সদের একমাত্র ভাতা ১৫০ টাকা, তাও বন্ধ করে দিয়েছেন।
এদিকে ১৬ তম অর্থ কমিশন এর সময় চলে এসেছে, কিন্তু ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের কিছু কিছু পদের গ্রেট পে এর পার্থক্য আজও বহাল রয়ে গেছে, কিছু কিছু পথ গ্রুপ B কর্মচারী হওয়ার কথা যা আজও গ্রুপ C ই রয়ে গেছে। কর্মচারী সমাজে কান পাতলেই শোনা যায় তাদের বিভিন্ন বঞ্চনার কথা। সরকার সদিচ্ছা নিয়ে যদি এই বঞ্চনা গুলি দূর না করে এবং সপ্তম বেতন কমিশন না দেন, তবে ১৬ তম অর্থ কমিশন ও তাদের টাকা কমিয়ে দেবেন এবং কর্মচারী সমাজের সপ্তম বেতন কমিশনার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে।
উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্পেশাল প্যাকেজ চালু রয়েছে। তা সত্ত্বেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলির সরকারি কর্মচারীদের তুলনায়, ডাবল ইঞ্জিন পরিচালিত ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা সবচেয়ে কম বেতন পাচ্ছেন। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যে হারে বেড়ে চলেছে এতে করে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সমাজ তাদের আয়ের সাথে ব্যায়ের কোন সামঞ্জস্য রাখতে পারছেন না। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বেতন ঠিকই বেড়ে চলেছে, কিন্তু রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের বেতন সেই তুলনায় বাড়ছে না। আর বাজার কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বেতনের সমানুপাতিক হারে তার দামও বাড়িয়ে দিচ্ছে, ফলে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী সমাজ বাজারের সাথে তাদের সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে পারছে না।
এই বিজেপি পরিচালিত সরকারের আমলে কোন কর্মচারী সংগঠন আছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। ১৬ অর্থ কমিশনের পূর্বে যদি কর্মচারী সংগঠনগুলি সরকারের সাথে আলোচনা করে এই বঞ্চনার সূরাহা না করেন তবে এই বঞ্চনা আবারো আগামী পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী হয়ে যাবে।
বামফ্রন্ট আমলে শুধু শোনা যেত “কেন্দ্র দেয়না”! এখন সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তবে সত্যিই কি কেন্দ্র দেয়না? না কি রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাব?
বিজেপি পরিচালিত সরকার, “তাদের প্রথম কেবিনেটে সপ্তম বেতন কমিশন দিয়ে দেবেন” এই স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আর ক্ষমতায় এসেই তাদের মন্ত্রী, এম এল এ দের বেতন ভাতা, তাদের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নিয়েছেন, মাঝখান থেকে ফেঁসে গেছেন ত্রিপুরার সপ্তম বেতন কমিশনের আশায় বসে থাকা চাতক পাখিরা। তাদের D.A এর পার্থক্য যতই হওক না কেন, এখন তাদেরকে এই ৫% নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
ত্রিপুরার ইতিহাসে সেই জুট আমলই ছিল কর্মচারীদের জন্য একমাত্র সুষময়। কারণ জুট আমলেই ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রথম এবং শেষ পে কমিশন দিয়েছিল। তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় টানা বাম আমলের। বামপন্থীরা তাদের নীতিগত কারণে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বঞ্চনা অব্যাহত রাখে এবং পে-কমিশন দেয়ার কোন সদিচ্ছা তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। উপরন্ত কেন্দ্রীয় বঞ্চনা বলে মিছিলের লাইন লম্বা করে পুরোটা সময় কাটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু কোন অর্থ মন্ত্রকের কাছে সেই বাম আমলে কর্মচারীদের পে কমিশন দেয়ার জন্য কখনো টাকাই চাওয়া হয়নি। আর ঠিক তাই ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা পুরোটা বাম আমলেই তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছে।
২০১৮ সালে বিজেপি নামক রাজনৈতিক দলটি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে,পুরো কর্মচারী কূল কে মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের দলে নিয়েছিলয এবং বলেছিল তারা ক্ষমতায় আসলে ত্রিপুরাতে পূর্ণাঙ্গ সপ্তম পে কমিশন চালু করবে। তখন তারা হিসাব করে দেখিয়েছিল ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা প্রকৃতপক্ষে কত টাকা করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ত্রিপুরার কর্মচারী সমাজ ভেবেছিল দীর্ঘ বহু বছর পর হয়তোবা তারা আবার প্রকৃত পে কমিশন পাবেন! হায়রে পোড়া কপাল, সেটা ছিল পুরুই একটা ফাঁদ, আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ তাদের পক্ষে মত দান করেন। ফলস্বরূপ ২০১৮ সালে বিজেপি নামক রাজনৈতিক দলটি ক্ষমতার আসনে বসেন।
ক্ষমতায় বসেই তারা তাদের প্রকৃত রূপে এসে যান এবং শুরু হয় কর্মচারীদের ওপর বিভিন্ন লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার প্রেক্ষাপট। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় বিপ্লব কুমার দেব কর্মচারীদের উপর প্রয়োগ করেন এক দানবীয় আইন যার নাম “এজমা”, বন্ধ করে দেওয়া হয় কর্মচারীদের পেনশন নামক সুবিধা টুকুও, যা বাম আমলে, তাদের সংগ্রামের ফল বলে টিকিয়ে রেখেছিল। শুরু হয় কর্মচারী বঞ্চনার আরেক নতুন অধ্যায়ের।
২০১৮ সালে নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে আসামের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরায় এসে বলেছিলেন “যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে প্রথম কেবিনেটেই সিদ্ধান্ত করে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ সপ্তম পে কমিশন চালু করে দেয়া হবে। আর যদি না দেওয়া হয় তাহলে লোকসভা ইলেকশনে বা তারপরে কখনো বিজেপিকে আর ভোট দেবেন না”। আর এই নিয়ে “ঘুমা ঘুমা কে চালানো” একটি প্রবাদ ও নেট দুনিয়ায় খুব ভাইরাল হয়েছিল, যা আপামোর ত্রিপুরাবাসিরই জানা আছে।
যেখানে বলা হয়েছিল প্রথম কেবিনেটে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশন দেয়া হবে সেই জায়গায় দেখা গেল উল্টো একচিত্র। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন যে ত্রিপুরা রাজ্যের মন্ত্রী এবং এম এল এ দের মাসিক পারিশ্রমিক বাবদ যে ভাতা তারা পেতেন তা বাড়িয়ে নিজেদের ইচ্ছামত প্রায় তিনগুণ করে দেওয়া হবে এবং কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশনের জায়গায় সামান্য কিছু বেতন বৃদ্ধি করে ক্ষান্ত হয়ে গেলেন। যা ছিল সপ্তম পে কমিশনের তুলনায় সামান্য কিছু ভিক্ষার সমতুল্য। উপরন্ত বছরে যে দুবার D.A দেয়া হতো তা ভুলেই গিয়েছিলেন কর্মচারী সমাজ।
এমতাবস্থায় বিজেপি সরকারের প্রায় শেষ লগ্নে ঘটলো এক নাটকীয় পরিবর্তন আবির্ভূত হল এক নতুন চেহারার “ডক্টর মানিক সাহা”। ত্রিপুরার ইতিহাসে এই প্রথম; পেশায় ডাক্তার, নিছক ভদ্রলোক, শিক্ষিত এবং বুদ্ধিমান মুখ্যমন্ত্রী। যিনি পরবর্তী নির্বাচনের প্রাক মুহুর্তে ঘোষণা করা হয়েছিল ত্রিপুরার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংখ্যার D.A, কিন্তু কমিয়ে আনা যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের সঙ্গে পার্থক্য।
ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী সমাজ তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন তো হয়ইনি বরং মুষ্টিমেয় কিছু লোকের ভাগ্যের পরিবর্তন করে দিয়েছেন। কর্মচারী সমাজ যেখানে ছিলেন, আজও ঠিক সেখানেই আছেন বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে উলটো পিছিয়ে পড়েছে। যেমন ত্রিপুরা রাজ্যের নার্সদের পোশাক এবং পোশাক পরিস্কার রাখার জন্য মাসিক মাত্র ১৫০ টাকা ভাতা দেয়া হতো, যেখানে সপ্তম পে কমিশন অনুযায়ী এই ভাতার পরিমাণ মাসিক ১৮০০ টাকা, যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ নার্সরা পাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত নার্সদের প্রাপ্য হ্যাজার্ড এলাউন্স, যা তারা বহুদিন ধরে দাবি করে আসছিল তা আজও তারা পায়নি। সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী নার্সদের নাম পরিবর্তন করে Nursing Officer করা হয়েছে এবং তাদেরকে গ্রুপ B কর্মচারী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার নার্সদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন থেকে শুধু নাম টুকু এনে ওদেরকে Nursing Officer বানিয়ে দিয়েছে। আর এতেই বর্তমানে নার্সদের নেতা হিসেবে পরিচয় দেওয়া কিছু নার্স, তাদের নবনির্মিত সংগঠনের সাফল্য হিসেবে প্রচার করছেন। অথচ ত্রিপুরা রাজ্যে প্রায় সব সরকারি পদেরই পদোন্নতি হয়েছে, একমাত্র নার্সদেরই কোন পদোন্নতি হয়নি এবং এ নিয়ে ওইসব স্বার্থান্বেষী সংগঠনগুলির কোন বক্তব্যও নেই, হাসপাতাল গুলিতে রোগী এবং নার্স এর অনুপাত নিয়েও এদের কোন হেলদোল নেই, ফলস্বরূপ সাধারণ রোগীরা তাদের পরিষেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত থাকছেন এবং সরকারি হাসপাতাল গুলিতে পরিষেবা দিন দিন তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। স্বাভাবিক কারণেই নার্সদের প্রতি সাধারণ মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ত্রিপুরা রাজ্যে এই প্রথম একজন ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী পেয়ে নার্স সমাজ ভেবেছিল যে তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার হয়তো এবার সমাপ্তি হবে। সেই গুড়ে বালি ঢেলে দিয়ে, ডাক্তার পরিচালিত ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার, নার্সদের একমাত্র ভাতা ১৫০ টাকা, তাও বন্ধ করে দিয়েছেন।
এদিকে ১৬ তম অর্থ কমিশন এর সময় চলে এসেছে, কিন্তু ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের কিছু কিছু পদের গ্রেট পে এর পার্থক্য আজও বহাল রয়ে গেছে, কিছু কিছু পথ গ্রুপ B কর্মচারী হওয়ার কথা যা আজও গ্রুপ C ই রয়ে গেছে। কর্মচারী সমাজে কান পাতলেই শোনা যায় তাদের বিভিন্ন বঞ্চনার কথা। সরকার সদিচ্ছা নিয়ে যদি এই বঞ্চনা গুলি দূর না করে এবং সপ্তম বেতন কমিশন না দেন, তবে ১৬ তম অর্থ কমিশন ও তাদের টাকা কমিয়ে দেবেন এবং কর্মচারী সমাজের সপ্তম বেতন কমিশনার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে।
উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্পেশাল প্যাকেজ চালু রয়েছে। তা সত্ত্বেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলির সরকারি কর্মচারীদের তুলনায়, ডাবল ইঞ্জিন পরিচালিত ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা সবচেয়ে কম বেতন পাচ্ছেন। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যে হারে বেড়ে চলেছে এতে করে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সমাজ তাদের আয়ের সাথে ব্যায়ের কোন সামঞ্জস্য রাখতে পারছেন না। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বেতন ঠিকই বেড়ে চলেছে, কিন্তু রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের বেতন সেই তুলনায় বাড়ছে না। আর বাজার কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বেতনের সমানুপাতিক হারে তার দামও বাড়িয়ে দিচ্ছে, ফলে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী সমাজ বাজারের সাথে তাদের সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে পারছে না।
এই বিজেপি পরিচালিত সরকারের আমলে কোন কর্মচারী সংগঠন আছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। ১৬ অর্থ কমিশনের পূর্বে যদি কর্মচারী সংগঠনগুলি সরকারের সাথে আলোচনা করে এই বঞ্চনার সূরাহা না করেন তবে এই বঞ্চনা আবারো আগামী পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী হয়ে যাবে।
বামফ্রন্ট আমলে শুধু শোনা যেত “কেন্দ্র দেয়না”! এখন সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তবে সত্যিই কি কেন্দ্র দেয়না? না কি রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাব?
বিজেপি পরিচালিত সরকার, “তাদের প্রথম কেবিনেটে সপ্তম বেতন কমিশন দিয়ে দেবেন” এই স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আর ক্ষমতায় এসেই তাদের মন্ত্রী, এম এল এ দের বেতন ভাতা, তাদের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নিয়েছেন, মাঝখান থেকে ফেঁসে গেছেন ত্রিপুরার সপ্তম বেতন কমিশনের আশায় বসে থাকা চাতক পাখিরা। তাদের D.A এর পার্থক্য যতই হওক না কেন, এখন তাদেরকে এই ৫% নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
ত্রিপুরার ইতিহাসে সেই জুট আমলই ছিল কর্মচারীদের জন্য একমাত্র সুষময়। কারণ জুট আমলেই ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রথম এবং শেষ পে কমিশন দিয়েছিল। তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় টানা বাম আমলের। বামপন্থীরা তাদের নীতিগত কারণে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বঞ্চনা অব্যাহত রাখে এবং পে-কমিশন দেয়ার কোন সদিচ্ছা তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। উপরন্ত কেন্দ্রীয় বঞ্চনা বলে মিছিলের লাইন লম্বা করে পুরোটা সময় কাটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের কাছে সেই বাম আমলে কর্মচারীদের পে কমিশন দেয়ার জন্য কখনো টাকাই চাওয়া হয়নি। আর ঠিক তাই ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা পুরোটা বাম আমলেই তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছে।
২০১৮ সালে বিজেপি নামক রাজনৈতিক দলটি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে,পুরো কর্মচারী কূল কে মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের দলে নিয়েছিলয এবং বলেছিল তারা ক্ষমতায় আসলে ত্রিপুরাতে পূর্ণাঙ্গ সপ্তম পে কমিশন চালু করবে। তখন তারা হিসাব করে দেখিয়েছিল ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা প্রকৃতপক্ষে কত টাকা করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ত্রিপুরার কর্মচারী সমাজ ভেবেছিল দীর্ঘ বহু বছর পর হয়তোবা তারা আবার প্রকৃত পে কমিশন পাবেন! হায়রে পোড়া কপাল, সেটা ছিল পুরুই একটা ফাঁদ, আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ তাদের পক্ষে মত দান করেন। ফলস্বরূপ ২০১৮ সালে বিজেপি নামক রাজনৈতিক দলটি ক্ষমতার আসনে বসেন।
ক্ষমতায় বসেই তারা তাদের প্রকৃত রূপে এসে যান এবং শুরু হয় কর্মচারীদের ওপর বিভিন্ন লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার প্রেক্ষাপট। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় বিপ্লব কুমার দেব কর্মচারীদের উপর প্রয়োগ করেন এক দানবীয় আইন যার নাম “এজমা”, বন্ধ করে দেওয়া হয় কর্মচারীদের পেনশন নামক সুবিধা টুকুও, যা বাম আমলে, তাদের সংগ্রামের ফল বলে টিকিয়ে রেখেছিল। শুরু হয় কর্মচারী বঞ্চনার আরেক নতুন অধ্যায়ের।
২০১৮ সালে নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে আসামের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরায় এসে বলেছিলেন “যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে প্রথম কেবিনেটেই সিদ্ধান্ত করে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ সপ্তম পে কমিশন চালু করে দেয়া হবে। আর যদি না দেওয়া হয় তাহলে লোকসভা ইলেকশনে বা তারপরে কখনো বিজেপিকে আর ভোট দেবেন না”। আর এই নিয়ে “ঘুমা ঘুমা কে চালানো” একটি প্রবাদ ও নেট দুনিয়ায় খুব ভাইরাল হয়েছিল, যা আপামোর ত্রিপুরাবাসিরই জানা আছে।
যেখানে বলা হয়েছিল প্রথম কেবিনেটে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশন দেয়া হবে সেই জায়গায় দেখা গেল উল্টো একচিত্র। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন যে ত্রিপুরা রাজ্যের মন্ত্রী এবং এম এল এ দের মাসিক পারিশ্রমিক বাবদ যে ভাতা তারা পেতেন তা বাড়িয়ে নিজেদের ইচ্ছামত প্রায় তিনগুণ করে দেওয়া হবে এবং কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশনের জায়গায় সামান্য কিছু বেতন বৃদ্ধি করে ক্ষান্ত হয়ে গেলেন। যা ছিল সপ্তম পে কমিশনের তুলনায় সামান্য কিছু ভিক্ষার সমতুল্য। উপরন্ত বছরে যে দুবার D.A দেয়া হতো তা ভুলেই গিয়েছিলেন কর্মচারী সমাজ।
এমতাবস্থায় বিজেপি সরকারের প্রায় শেষ লগ্নে ঘটলো এক নাটকীয় পরিবর্তন আবির্ভূত হল এক নতুন চেহারার “ডক্টর মানিক সাহা”। ত্রিপুরার ইতিহাসে এই প্রথম; পেশায় ডাক্তার, নিছক ভদ্রলোক, শিক্ষিত এবং বুদ্ধিমান মুখ্যমন্ত্রী। যিনি পরবর্তী নির্বাচনের প্রাক মুহুর্তে ঘোষণা করা হয়েছিল ত্রিপুরার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংখ্যার D.A, কিন্তু কমিয়ে আনা যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের সঙ্গে পার্থক্য।
ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী সমাজ তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন তো হয়ইনি বরং মুষ্টিমেয় কিছু লোকের ভাগ্যের পরিবর্তন করে দিয়েছেন। কর্মচারী সমাজ যেখানে ছিলেন, আজও ঠিক সেখানেই আছেন বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে উলটো পিছিয়ে পড়েছে। যেমন ত্রিপুরা রাজ্যের নার্সদের পোশাক এবং পোশাক পরিস্কার রাখার জন্য মাসিক মাত্র ১৫০ টাকা ভাতা দেয়া হতো, যেখানে সপ্তম পে কমিশন অনুযায়ী এই ভাতার পরিমাণ মাসিক ১৮০০ টাকা, যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ নার্সরা পাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত নার্সদের প্রাপ্য হ্যাজার্ড এলাউন্স, যা তারা বহুদিন ধরে দাবি করে আসছিল তা আজও তারা পায়নি। সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী নার্সদের নাম পরিবর্তন করে Nursing Officer করা হয়েছে এবং তাদেরকে গ্রুপ B কর্মচারী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার নার্সদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন থেকে শুধু নাম টুকু এনে ওদেরকে Nursing Officer বানিয়ে দিয়েছে। আর এতেই বর্তমানে নার্সদের নেতা হিসেবে পরিচয় দেওয়া কিছু নার্স, তাদের নবনির্মিত সংগঠনের সাফল্য হিসেবে প্রচার করছেন। অথচ ত্রিপুরা রাজ্যে প্রায় সব সরকারি পদেরই পদোন্নতি হয়েছে, একমাত্র নার্সদেরই কোন পদোন্নতি হয়নি এবং এ নিয়ে ওইসব স্বার্থান্বেষী সংগঠনগুলির কোন বক্তব্যও নেই, হাসপাতাল গুলিতে রোগী এবং নার্স এর অনুপাত নিয়েও এদের কোন হেলদোল নেই, ফলস্বরূপ সাধারণ রোগীরা তাদের পরিষেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত থাকছেন এবং সরকারি হাসপাতাল গুলিতে পরিষেবা দিন দিন তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। স্বাভাবিক কারণেই নার্সদের প্রতি সাধারণ মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ত্রিপুরা রাজ্যে এই প্রথম একজন ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী পেয়ে নার্স সমাজ ভেবেছিল যে তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার হয়তো এবার সমাপ্তি হবে। সেই গুড়ে বালি ঢেলে দিয়ে, ডাক্তার পরিচালিত ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার, নার্সদের একমাত্র ভাতা ১৫০ টাকা, তাও বন্ধ করে দিয়েছেন।
এদিকে ১৬ তম অর্থ কমিশন এর সময় চলে এসেছে, কিন্তু ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের কিছু কিছু পদের গ্রেট পে এর পার্থক্য আজও বহাল রয়ে গেছে, কিছু কিছু পথ গ্রুপ B কর্মচারী হওয়ার কথা যা আজও গ্রুপ C ই রয়ে গেছে। কর্মচারী সমাজে কান পাতলেই শোনা যায় তাদের বিভিন্ন বঞ্চনার কথা। সরকার সদিচ্ছা নিয়ে যদি এই বঞ্চনা গুলি দূর না করে এবং সপ্তম বেতন কমিশন না দেন, তবে ১৬ তম অর্থ কমিশন ও তাদের টাকা কমিয়ে দেবেন এবং কর্মচারী সমাজের সপ্তম বেতন কমিশনার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে।
উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্পেশাল প্যাকেজ চালু রয়েছে। তা সত্ত্বেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলির সরকারি কর্মচারীদের তুলনায়, ডাবল ইঞ্জিন পরিচালিত ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা সবচেয়ে কম বেতন পাচ্ছেন। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যে হারে বেড়ে চলেছে এতে করে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সমাজ তাদের আয়ের সাথে ব্যায়ের কোন সামঞ্জস্য রাখতে পারছেন না। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বেতন ঠিকই বেড়ে চলেছে, কিন্তু রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের বেতন সেই তুলনায় বাড়ছে না। আর বাজার কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বেতনের সমানুপাতিক হারে তার দামও বাড়িয়ে দিচ্ছে, ফলে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী সমাজ বাজারের সাথে তাদের সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে পারছে না।
এই বিজেপি পরিচালিত সরকারের আমলে কোন কর্মচারী সংগঠন আছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। ১৬ অর্থ কমিশনের পূর্বে যদি কর্মচারী সংগঠনগুলি সরকারের সাথে আলোচনা করে এই বঞ্চনার সূরাহা না করেন তবে এই বঞ্চনা আবারো আগামী পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী হয়ে যাবে।
বামফ্রন্ট আমলে শুধু শোনা যেত “কেন্দ্র দেয়না”! এখন সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তবে সত্যিই কি কেন্দ্র দেয়না? না কি রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাব?
বিজেপি পরিচালিত সরকার, “তাদের প্রথম কেবিনেটে সপ্তম বেতন কমিশন দিয়ে দেবেন” এই স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আর ক্ষমতায় এসেই তাদের মন্ত্রী, এম এল এ দের বেতন ভাতা, তাদের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নিয়েছেন, মাঝখান থেকে ফেঁসে গেছেন ত্রিপুরার সপ্তম বেতন কমিশনের আশায় বসে থাকা চাতক পাখিরা। তাদের D.A এর পার্থক্য যতই হওক না কেন, এখন তাদেরকে এই ৫% নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।