বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল ভারত!

ভারত-বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মহারণে ছয় উইকেটে জয় ভারতের!

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর গ্রুপ ‘এ’ ম্যাচে ভারত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশকে ছয় উইকেটে পরাজিত করেছে। শুভমান গিলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ শামির বিধ্বংসী বোলিংয়ের সুবাদে ভারত অনায়াসেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়

বাংলাদেশের হুংকার!

বাংলাদেশ টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুটা মোটেও সুখকর ছিল না, কারণ ভারতের বোলিং আক্রমণের সামনে প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। তবে মিডল অর্ডারে তৌহিদ হৃদয় একাই প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তার অনবদ্য ১০০ রানের ইনিংস দলকে সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মাত্র ১৭ রান করে আউট হন, যা দলকে চাপে ফেলে দেয়। শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদের ছোট কিন্তু কার্যকরী ইনিংসের ফলে বাংলাদেশ ৪৯.৩ ওভারে ২২৯ রান করতে সক্ষম হয়। ভারতের হয়ে মোহাম্মদ শামি ৫৩ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট শিকার করেন, যা বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইনআপকে কাঁপিয়ে দেয়।

ভারতীয় জবাব!

২২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভারতের ওপেনাররা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। তবে রোহিত শর্মা মাত্র ২৫ রানে আউট হলে ভারত কিছুটা চাপে পড়ে। এরপর বিরাট কোহলি ও শুভমান গিলের মধ্যে ৭৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে ওঠে। কোহলি ৩৯ রান করে বিদায় নিলেও, গিল নিজের খেলা চালিয়ে যান। দলের জয়ের ভিত গড়ে দেন শুভমান গিল, যিনি ১০১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। তার ব্যাট থেকে আসে ১১টি চারের মার ও ১টি ছয়। তার সঙ্গে অপরাজিত থেকে কেএল রাহুল ৪১ রান করেন এবং দলকে সহজ জয়ের দিকে নিয়ে যান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তাসকিন আহমেদ ২টি উইকেট নেন, তবে বাকি বোলাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ওপর তেমন চাপ সৃষ্টি করতে পারেননি।

ম্যাচ সারাংশ ও গাফিলতিঃ

মোহাম্মদ শামি, যিনি ৫৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামান। তার দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সই ভারতের জয়ের মূল ভিত্তি হয়ে ওঠে। ম্যাচ শেষে মোহাম্মদ শামিকে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত করা হয় তার দুর্দান্ত পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বের জন্য।ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এই ম্যাচে জয় পেলেও কিছু অবহেলা ও দুর্বলতা স্পষ্ট ধরা পড়েছে, যা বড় ম্যাচগুলোতে সমস্যার কারণ হতে পারে।

এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল রোহিত শর্মার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া, যার ফলে অক্ষর প্যাটেলের সম্ভাব্য হ্যাটট্রিক হাতছাড়া হয়। এছাড়া ওপেনিং পার্টনারশিপেও স্থিতিশীলতা দেখা যায়নি,কারণ রোহিত শর্মা ২৫ রান করেই আউট হন। মাঝের ওভারে ভারতের স্পিনাররা বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেননি, যার ফলে তৌহিদ হৃদয় বাংলাদেশের হয়ে বড় ইনিংস খেলতে সক্ষম হন। বিরাট কোহলিও ৩৯ রানে একটি অপ্রয়োজনীয় শট খেলে আউট হন, যা তার অভিজ্ঞতার তুলনায় অযথা ঝুঁকি ছিল। একই সঙ্গে, প্রতিদ্বন্দ্বী দলের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দ্রুত আউট করতে না পারার কারণে শেষ দিকে কিছু বাড়তি রান ভারতকে হজম করতে হয়। এই ভুলগুলো ভারতকে ভবিষ্যতে আরও সতর্ক হতে শেখাবে, বিশেষ করে পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে।

পরবর্তী ম্যাচঃ

এই জয়ের ফলে ভারত গ্রুপ পর্বে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। ভারতের পরবর্তী ম্যাচ ২৩ ফেব্রুয়ারি, যেখানে তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে। বাংলাদেশকে এখন তাদের বাকি ম্যাচগুলোতে জয় ছিনিয়ে নিতে হবে, যদি তারা সেমিফাইনালে যেতে চায়। ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য আরও বড় উত্তেজনা অপেক্ষা করছে, এখন নজর ২৩ ফেব্রুয়ারির ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিকে!About Us

শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ

৩৩ জন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকর্তার।

শিক্ষকদের শিক্ষাদানে জোরপূর্বক মনোযোগী করে তুলতে রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক পরিদর্শন চালানো হয়েছে। বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকর্তা এন. সি. শর্মার নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযান এবারে আরও ব্যাপকতা অর্জন করেছে, যা পূর্ববর্তী পরিদর্শনগুলোর তুলনায় অনেক বেশি বিস্তৃত।

এই পরিদর্শন ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল পর্যন্ত রাজ্যের দুটি জেলায় একযোগে পরিচালিত হয়। বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম অধিকর্তা (মধ্যশিক্ষা) রাকেশ দেববর্মা, উপ-অধিকর্তা (বুনিয়াদি শিক্ষা) রুদ্রদীপ নাথ সহ একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। পরিদর্শনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল জম্পুই পাহাড়ের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সরেজমিনে তদন্ত। সাধারণত এসব এলাকায় বিদ্যালয় পরিদর্শকদের উপস্থিতি খুবই কম দেখা যায়। পরিদর্শনকারী দল ভাংমুন, সাবুয়াল, ফুলডংসাই, ত্রিপুরার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বেটলিংসিপসহ অন্যান্য প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে যান। সেখানে পরিদর্শন শেষ করে কাঞ্চনপুর দশদা হয়ে উত্তর ত্রিপুরার অন্যান্য অঞ্চলেও অভিযান চালানো হয়।

রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘ফাউন্ডেশনাল লিটারেসি ও নিউমারেসি (এফএলএন) সপ্তাহ’ কর্মসূচি চালু করেছে, যা চলবে ১ মার্চ পর্যন্ত। রাজ্যের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ভাষাগত ও গাণিতিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেওয়া এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো:

  • পাঠ্যবইয়ের অন্তর্ভুক্ত বিষয়বস্তুর সঠিক অর্থ বুঝতে পারা ও সাবলীলভাবে পড়ার দক্ষতা অর্জন।
  • লেখার দক্ষতা ও গাণিতিক সমস্যার সমাধানের ক্ষমতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া।
  • শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষাগত দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান।

এই কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকর্তা এন. সি. শর্মার নেতৃত্বে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পরিদর্শন চালানো হচ্ছে। গত তিন দিনে জম্পুই, দশদা, কাঞ্চনপুর, দামছড়া, কলাছড়া, যুবরাজনগর, পানিসাগর, কুমারঘাট, কৈলাশহরসহ বিভিন্ন মহকুমায় পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে।

পরিদর্শনের সময় কিছু বিদ্যালয়ে সন্তোষজনক অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেলেও, বেশ কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দায়িত্ব পালনে চরম উদাসীনতা এবং গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। শিক্ষাদান নিয়ে যথাযথ পরিকল্পনার অভাব, শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবস্তুর প্রতি আগ্রহ তৈরিতে অনীহা ও উদ্যমহীনতা দেখা গেছে। এসব কারণে কিছু বিদ্যালয়ে এফএলএন কার্যক্রম কাঙ্ক্ষিত মান অর্জন করতে পারেনি। এ ধরনের গাফিলতির পরিপ্রেক্ষিতে ৩৩ জন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের ডাইস নন করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, যেসব বিদ্যালয়ে এফএলএন কর্মসূচি দৃষ্টান্তমূলকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশংসা ও অভিনন্দন জানিয়েছে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর। পরবর্তীতে তাদের শংসাপত্র প্রদানের ব্যবস্থাও করা হবে। শুধু উত্তর ত্রিপুরা নয়, খোয়াই জেলার কমলপুর, খোয়াই এমসি, ঊনকোটি জেলার বিভিন্ন মহকুমাসহ অন্যান্য জেলাগুলিতেও পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিদর্শন চলছে। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এফএলএন সপ্তাহ চলাকালীন অন্যান্য জেলা ও মহকুমাতেও আরও ব্যাপক পরিদর্শন চালানো হবে। এর মাধ্যমে কর্মসূচির কার্যকারিতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষাগত দক্ষতা নিশ্চিত করা হবে। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পরিদর্শনের এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং কর্মসূচির মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও দপ্তর পিছপা হবে না।

দিল্লির শপথ গ্রহণে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী!

দিল্লির নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা!

দিল্লির নবনির্বাচিত সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রাজধানী দিল্লিতে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। দেশের রাজনৈতিক মহলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ডাঃ মানিক সাহা দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও টেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) নেতা এন. চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গেও সাক্ষাৎ ও আলোচনা করছেন। তাঁদের এই বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাজ্যগুলোর উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও তিনি অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং রাজ্য পরিচালনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে মতবিনিময় করেন।

দিল্লিতে উপস্থিত থেকে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একের পর এক রাজ্যে বিজয় অর্জন করছে। এর মূল কারণ হল প্রধানমন্ত্রী দরিদ্র, যুবক, মহিলা এবং কৃষকদের সার্বিক কল্যাণে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তাঁর উন্নয়নমূলক নীতি এবং জনহিতকর কর্মসূচিগুলোর জন্য দেশজুড়ে বিজেপির প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে।” তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ২৭ বছর পর দিল্লিতে সরকার গঠন করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক রাজনৈতিক সাফল্য। দিল্লির অর্থ ‘দিল’ বা হৃদয়, তাই বলা যায় বিজেপি দেশের হৃদয় জিতেছে।

দিল্লির সদ্য নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত এবং তাঁর পুরো মন্ত্রিসভাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, “আমি আশা করি, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশিকা অনুসরণ করে দিল্লির সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন। দিল্লি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য এবং এখানে উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বিজেপি সরকার দিল্লিবাসীর কল্যাণে একনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।”

মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুধু দেশের উন্নয়নেই মনোযোগী নন, তিনি দেশের সুরক্ষার জন্যও নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। তাই এই বিজয় আমাদের আরও শক্তিশালী করবে এবং আগামী দিনে দিল্লিতে আরও ব্যাপক অগ্রগতি হবে।” দিল্লির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, যা ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধান

একসময়ের পুলিশ চালানো প্রধান পুলিশের হাতেই গ্রেফতার!

সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সিপিআইএম দলের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হাবিব উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি কৈলাসহরের গৌরনগর ব্লকের অন্তর্গত শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার কৈলাসহরের মহকুমা পুলিশ অফিসার জয়ন্ত কর্মকার জানান, ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর গৌরনগর ব্লকের তৎকালীন বিডিও ইরানি থানায় শ্রীনাথপুর পঞ্চায়েতের দুর্নীতি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগে বলা হয়, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে হ্যান্ড পাম্প বসানোর কাজ এবং প্যালাসিডিং প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সে সময় সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তৎকালীন পঞ্চায়েত সচিব ইয়ামির আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর ইয়ামির আলী আদালত থেকে জামিন পান। তদন্ত চলাকালীন ইয়ামির আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর হাবিব উদ্দিনের নাম উঠে আসে।

এরপর থেকে হাবিব উদ্দিন পুলিশের নজর এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। তবে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় মহকুমা পুলিশ অফিসার জয়ন্ত কর্মকার ও ইরানি থানার প্রাক্তন ওসি ইন্সপেক্টর যতীন্দ্র দাসের নেতৃত্বে বিশেষ পুলিশ বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার হাবিব উদ্দিনকে কৈলাসহর আদালতে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় এবং ১৩ পি.সি. অ্যাক্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উল্লেখ্য, শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতি এই প্রথম নয়। এর আগেও এই পঞ্চায়েতের এক সচিব অন্য এক দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। তবে, সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রাক্তন প্রধান হাবিব উদ্দিনের গ্রেফতার হওয়ায় শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তির বাতাবরণ দেখা যাচ্ছে।

এক সময় বাম শাসনে হাবিব উদ্দিন এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন যে, তার কথাতেই পুলিশ কার্যত পরিচালিত হতো বলে অভিযোগ। কিন্তু আজ সেই পুলিশই তাকে গ্রেফতার করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে পুলিশের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

জাতীয়

বর্ষার প্রাক্কালেই জাতীয় সড়কের বেহাল দশা!

২০৮ নং জাতীয় সড়কে বিপজ্জনক ভাঙন দেখা দিয়েছে, যা বর্ষার প্রাক্কালে যান চালকদের জন্য চরম দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতি নিম্নমানের নির্মাণ কাজের ফলে এক বছরের মধ্যেই রাস্তার বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত ও ধসে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

কমলপুরের মানিকভান্ডার থেকে খোয়াইয়ের বেহালাবাড়ি, বাচাইবাড়ি, চেরমা, সিঙ্গিছড়া, জাম্বুরা এবং গনকী হয়ে আগরতলা পর্যন্ত বিস্তৃত ২০৮ নং জাতীয় সড়কের প্রায় ৮০ কিলোমিটার অংশের মধ্যে বেশ কিছু স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে খোয়াইয়ের বেহালাবাড়ি থেকে বাচাইবাড়ি, চেরমা এবং জাম্বুরা পর্যন্ত রাস্তাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুকনো মরশুমেই যখন রাস্তার এই অবস্থা, তখন বর্ষাকালে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হবে তা নিয়েই শঙ্কিত স্থানীয় মানুষজন।

স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের ফলে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বহিরাজ্যের একাধিক এজেন্সির মাধ্যমে জাতীয় সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও নির্মাণের সময় গুণগত মান বজায় রাখা হয়নি। মাত্র এক বছরের মধ্যেই রাস্তার বিভিন্ন অংশ ধসে পড়েছে, অনেক স্থানে কয়েক ফুট মাটির নিচে বসে গেছে, এবং বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

জাতীয় সড়ক নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও কাজের মান নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে। খোয়াই মহকুমার বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও শাসক দলের পক্ষ থেকে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। রাস্তা নির্মাণে ব্যবহৃত বালু ও পাথর স্থানীয় প্রভাবশালী নেতৃত্বরা সরবরাহ করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুকুর-ডোবা বা ধানক্ষেতের উপরে মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করা হলেও যথাযথভাবে মাটি চাপানো হয়নি, যার ফলে কিছু স্থানে রাস্তা দুই ফুট পর্যন্ত বসে গেছে এবং কোথাও বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষা আসার আগেই এই রাস্তা মেরামত না করা হলে সড়কটি যান চলাচলের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি উঠেছে, অবিলম্বে সড়কটির পুনর্নির্মাণ এবং গুণগত মান নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক, যাতে বর্ষার সময় যান চালক ও সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে না হয়।

ত্রিপুরার

শিক্ষা, রেল ও প্রযুক্তি খাতে ত্রিপুরার উন্নয়নের জোরালো দাবি!

নয়াদিল্লিতে গুরুত্বপূর্ণ সফরে গিয়ে কেন্দ্রীয় দুই মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। রাজ্যের শিক্ষা, রেল পরিকাঠামো এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক দাবি উত্থাপন করেন।

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বিদ্যাজ্যোতি স্কুলগুলির আরও উন্নয়ন, মহিলা কলেজকে মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা এবং ত্রিপুরা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিকে (টিআইটি) একটি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে রূপান্তরের প্রস্তাব দেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই উদ্যোগ রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রের পরিকাঠামো শক্তিশালী করবে এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করবে।

এদিন নয়াদিল্লির রেল ভবনে কেন্দ্রীয় রেল ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে এক পৃথক বৈঠকে মিলিত হন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বৈঠকে তিনি ত্রিপুরার রেল পরিকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী, অতি শীঘ্র বন্দে ভারত ট্রেন চালুর দাবি জানান, পাশাপাশি আগরতলা-গুয়াহাটি আন্তঃশহর ট্রেন, ধর্মনগর-সাব্রুম লোক্যাল ট্রেন এবং বোধজংনগর-জিরানিয়া (শিল্প নগরী) ও ধর্মনগর-কৈলাশহরের মধ্যে নতুন রেলপথ স্থাপনের প্রস্তাব দেন। রাজ্যের কৃষকদের স্বার্থে আগরতলা ও গুয়াহাটির মধ্যে সংযুক্ত একটি কিষান ট্রেন চালুরও অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই উদ্যোগ কৃষি পণ্য পরিবহণ সহজ করবে এবং কৃষকদের লাভবান করবে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের আইটি পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজিটাল ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে আলোচনা করেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও নতুন সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য তিনি কেন্দ্রের সহযোগিতা কামনা করেন। এই সফরের মাধ্যমে ত্রিপুরার সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী, যা ভবিষ্যতে রাজ্যের অগ্রগতির পথ সুগম করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

SPO

চরম অনিশ্চয়তায় SPO জওয়ানদের পরিবারগুলো!

ত্রিপুরা রাজ্যে একসময় উগ্রবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা SPO (স্পেশাল পুলিশ অফিসার) জওয়ানরা আজ চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। একসময় বৈরি সন্ত্রাস দমন করতে গিয়ে জীবন বাজি রেখে কাজ করা এই জওয়ানদের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে।

২০০০ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের নেতৃত্বে নৃপেন চক্রবর্তীর আমলে রাজ্যে SPO বাহিনী গঠিত হয়। রাজ্য থেকে উগ্রবাদ দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত SPO জওয়ানদের জঙ্গল অভিযানে পাঠানো হত। তাঁরা রাজ্য পুলিশের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতেন। তাঁদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে রাজ্যে ধীরে ধীরে উগ্রবাদী কার্যকলাপ হ্রাস পায় এবং বর্তমানে ত্রিপুরা শান্তিপূর্ণ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। কিন্তু উগ্রবাদ নির্মূল হওয়ার পর এই বাহিনীর কদর কমতে শুরু করে।

২০০০ সালে গঠিত হওয়ার পর থেকে একটানা ২৪ বছর কর্তব্য পালন করলেও এসপিও জওয়ানদের নিয়মিত করা হয়নি। এমনকি তাঁদের বেতন ও ভাতার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার আগে নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, এসপিওদের রাজ্য পুলিশের মতো নিয়মিত করা হবে এবং সমস্ত সুবিধা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবে রূপ পায়নি। বর্তমানে রাজ্যের ৩৭০০ জন এসপিও জওয়ানকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও থানার গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মাঝে মাঝে তাঁদের প্রশিক্ষণের জন্য ডাকা হলেও কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। একসময় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এসপিওদের নিজস্ব ক্যাম্প থাকলেও, আজ তাঁরা অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।

প্রথম দিকে এসপিও জওয়ানরা ৭,০০০ টাকা মাসিক পারিশ্রমিক পেতেন, যা সম্প্রতি ১২,০০০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। তবে তাঁদের দাবি, এই সামান্য বেতন দিয়ে পরিবার চালানো অসম্ভব। তাছাড়া, তাঁদের নিয়মিত পুলিশ কর্মীদের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। একজন এসপিও যদি কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যান, তবে তাঁর পরিবারের জন্য নেই কোনো সরকারি সহায়তা। ২০০০ সাল থেকে এপর্যন্ত ১২৬ জন এসপিও জওয়ান মৃত্যুবরণ করেছেন, কিন্তু তাঁদের পরিবারকে সরকার এক টাকাও অনুদান দেয়নি। ফলে তাঁদের পরিবার চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছে। আজ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল এসপিও জওয়ানদের সমস্যার সমাধানে জোরালো দাবিতে সরব হয়নি। ফলে তাঁদের দুর্দশা ক্রমশ বাড়ছে।

একসময় জীবন বাজি রেখে রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এসপিও জওয়ানরা আজ অস্থায়ী কর্মীর মতো কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের নিয়মিতকরণের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন জওয়ান ও তাঁদের পরিবার। ভুক্তভোগী এসপিও জওয়ানদের একটাই প্রশ্ন— তাঁরা কি কখনো ত্রিপুরা পুলিশের মতো স্বীকৃতি পাবেন? নাকি তাঁদের সারা জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যেই কাটাতে হবে?

বাজার

আগরতলা শহরের বাজারগুলির হাল বেহাল!

আগরতলা শহরের অন্যতম ব্যস্ত ও ঘিঞ্জি এলাকা মহারাজগঞ্জ বাজার, যেখানে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তীব্র যানজট লেগেই থাকে। নেতাজি সুভাষ রোড, কামান চৌমুহনী, সেন্ট্রাল রোড, এমবিবি ক্লাব সংলগ্ন এলাকা— সর্বত্রই একই চিত্র। একদিকে অবৈধ পার্কিং, অন্যদিকে রাস্তায় লরি থামিয়ে লোডিং-আনলোডিং, ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

এই দীর্ঘদিনের সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করেই বুধবার ট্রাফিক বিভাগ এক লোক দেখানো অভিযান চালায়। অভিযান পরিচালনা করেন ট্রাফিক সুপার মানিক লাল দাস, যিনি অবৈধ পার্কিংকে যানজটের প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করলেও রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা লরিগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। কয়েক বছর আগে নাগিছড়া বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় আনলোডিং স্টেশন চালু করা হলেও, সেটি কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হয়নি। এখনও মহারাজগঞ্জ বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী আনলোডিং চলছেই, যা যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ।

আগরতলা পুর নিগমের দায়িত্ব নেওয়ার পর মেয়র দীপক মজুমদার মহারাজগঞ্জ বাজার এবং বটতলা বাজার পরিদর্শন করেছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, রাস্তা দখল করে বর্হিরাজ্যের লরি থেকে মাছ ও অন্যান্য পণ্য আনলোডিং বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু দুই বছর পার হলেও দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বুধবার ট্রাফিক সুপার মানিক লাল দাস ও পুর নিগমের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার যৌথ অভিযান চালিয়ে ফুটপাত দখল মুক্ত করার চেষ্টা করেন। কিছু ব্যবসায়ীর সামগ্রী জব্দ করা হলেও, তেমন কোনো বড় পদক্ষেপ বা জরিমানা করা হয়নি। ট্রাফিক সুপার জানান, ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাচল করবে, সেটি কেন দখল হয়ে থাকবে?

শহরবাসীর চাওয়া, লোক দেখানো অভিযান নয়, বাস্তবসম্মত ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করুক সরকার। মহারাজগঞ্জ বাজারের যানজট দূর করতে এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে নাগিছড়া আনলোডিং স্টেশন কার্যকর করা ও অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা জরুরি। ভুক্তভোগী মানুষের একটাই প্রশ্ন— যানজট সমস্যা থেকে মুক্তি কবে?