ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্তে উগ্রপন্থী অনুপ্রবেশের আশঙ্কা!
ত্রিপুরা ও বাংলাদেশে সীমান্তের এলাকাগুলিতে উগ্রপন্থী তৎপরতা বৃদ্ধির আশঙ্কায় রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। বিশেষত, পাহাড়ি অঞ্চল এবং ত্রিপুরা-মিজোরাম-বাংলাদেশ সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করা হয়েছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) নজরদারি বাড়িয়েছে এবং আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ত্রিপুরা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার আইজি কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী সম্প্রতি ঊনকোটি ও উত্তর ত্রিপুরা জেলা সফর করেন এবং সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সীমান্তবর্তী এলাকায় উগ্রপন্থী তৎপরতা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এতে সীমান্ত দিয়ে জঙ্গি ও চোরাকারবারীদের অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ত্রিপুরার ৮৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের মধ্যে ২৬.৬৪ কিলোমিটার এখনো কাঁটাতারবিহীন। অন্যদিকে, মিজোরামের ৩১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত পুরোপুরি অরক্ষিত, যা নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে, মিজোরামেও নিরাপত্তা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর, ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (NLFT) এবং অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স (ATTF)-এর একাধিক উগ্রপন্থী সদস্য ত্রিপুরা সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করা এই জঙ্গিদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলেও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, এখনো কিছু উত্তর-পূর্বের জঙ্গি বাংলাদেশে লুকিয়ে আছে।
সীমান্তে নিরাপত্তা আরও কঠোর করতে BSF আধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি, কুকুর বাহিনী এবং উন্নত নজরদারি যন্ত্র ব্যবহার করছে। সীমান্ত পরিদর্শনে রয়েছেন BSF-এর শীর্ষ আধিকারিকরা। রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে যাতে কোনো উগ্রপন্থী বা চোরাকারবারী ভারতের মাটিতে প্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়ে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।