জমি

শিল্প দপ্তরের অধিকর্তা কাইজার দেববর্মা জমি কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার!

ত্রিপুরায় ১৩৩ কানি জমি কেলেঙ্কারি নিয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে শিল্প দপ্তরের প্রাক্তন অতিরিক্ত অধিকর্তা কাইজার দেববর্মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তাকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে পশ্চিম থানার পুলিশ কৃষ্ণনগরের বাড়ি থেকে কাইজার দেববর্মাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, জাল জমির দলিল তৈরি করে ১৩৩ কানি জমি বিক্রি করেছেন এবং ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ১.২৫ কোটি টাকা হাতিয়েছেন। এই কেলেঙ্কারির মূল মামলাটি দায়ের করেছিলেন দিল্লির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ার্ল্ড এডুকেশন মিশন’-এর অধিকর্তা হিমাংশু পাঞ্চাল।

২০২৩ সালের ১২ জুলাই দায়ের হওয়া এই মামলার পর থেকেই কাইজার দেববর্মা পলাতক ছিলেন। পুলিশ ইতিমধ্যে এই মামলায় দেবাশীষ চক্রবর্তী, বিপ্লব শর্মা, রাজেশ ত্রিপুরা, সুব্রত আচার্য এবং উত্তম সাহাকে গ্রেফতার করেছিল। তবে কাইজার দেববর্মা এতদিন পালিয়ে ছিলেন এবং আগাম জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা খারিজ করে দেয়।

ভিযোগ অনুসারে, মোহনপুর মহকুমা শাসক অফিস থেকে জাল জমির দলিল তৈরি করে ১৩৩ কানি জমি বিক্রি করেছিলেন কাইজার দেববর্মা। জমি বিক্রির পাশাপাশি, ওয়ার্ল্ড এডুকেশন মিশনের কাছ থেকে ১.২৫ কোটি টাকা অগ্রিম নিয়েছিলেন তিনি। প্রথমে বোধজংনগরে জমি দেখালেও পরে মোহনপুরের কাছে ১৩৩ কানি জমি দেখানো হয়। জমি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় মিশনের অধিকর্তা হিমাংশু পাঞ্চাল প্রথমে মোহনপুর মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ জানান। সাড়া না পেয়ে তিনি ২০২৩ সালের ১২ জুলাই দিল্লিতে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ, যার ফলে পাঁচজন গ্রেফতার হলেও এতদিন পলাতক ছিলেন কাইজার দেববর্মা।

কাইজার দেববর্মা শিল্প দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা থাকাকালীন খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদের দায়িত্বে ছিলেন। তখন তিনি মৌমাছি পালনের জন্য সুবিধাভোগীদের সরকারি সামগ্রী প্রদান না করে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেন। তার বিরুদ্ধে জমির জালিয়াতি ছাড়াও সরকারি অর্থ আত্মসাতের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

বাম আমল থেকেই কাইজারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তিনি এক বাম নেত্রীর সহায়তায় খাদি পর্ষদকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছিলেন। ২০০৬ সালে রাজ্যে প্রথমবার যোগগুরু রামদেবকে এনে কোটি কোটি টাকা রোজগার করেন তিনি এবং শিল্প দপ্তরের অফিসার পদে দীর্ঘদিন থেকে নিজের ব্যাংক ব্যালেন্স ফুলিয়েছেন কাইজার।

পশ্চিম থানার বড়বাবু জানিয়েছেন, কাইজারকে সাত দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানানো হলেও আদালত তিন দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তাকে জেরা করে এই কেলেঙ্কারিতে আরও কারা জড়িত রয়েছে, তাদের নাম জানার চেষ্টা করবে পুলিশ। তদন্তকারীরা আশা করছেন, কাইজারের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়ে আরও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা যাবে। ১৩৩ কানি জমি কেলেঙ্কারি ত্রিপুরার প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। শিল্প দপ্তরের প্রাক্তন অতিরিক্ত অধিকর্তা কাইজার দেববর্মার গ্রেফতারি প্রমাণ করে যে প্রশাসন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর। এই মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া কী মোড় নেয়, তা এখন দেখার বিষয়।

মহাকুম্ভে

মহাকুম্ভে পুণ্যস্নান করে ত্রিপুরার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর!

 

প্রয়াগরাজ, উত্তরপ্রদেশের  ত্রিবেণী সঙ্গমের মহাকুম্ভে পবিত্র স্নান করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আধ্যাত্মিক ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে নিমগ্ন হয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেন তিনি। মহাকুম্ভে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা লেখেন, “মহাকুম্ভ উপলক্ষে প্রয়াগরাজ তীর্থে পৌঁছে পবিত্র ত্রিবেণী সঙ্গমে পূণ্যস্নানে সামিল হয়ে এক অদ্ভুত আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। ত্রিপুরার মানুষের মঙ্গল, অগ্রগতি ও সুস্বাস্থ্যের জন্য গঙ্গা মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি।”

সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেকদিন ধরেই মহাকুম্ভে পূণ্যস্নান করার ইচ্ছা ছিল, যা অবশেষে পূর্ণ হলো। তিনি বলেন, “ত্রিপুরাবাসীর সুখ-সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেছি। রাজ্য যাতে আরো উন্নতি করে এবং ‘এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা’ গড়ে ওঠে, সেই কামনা করেছি।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সেই লক্ষ্যেই আমরা ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।”

মহাকুম্ভের সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “যেভাবে এত বড় আয়োজনকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা হয়েছে, তা প্রশংসার যোগ্য।” তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। যেখানে ভারতীয় জনতা পার্টির শাসন রয়েছে, সেখানেই ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সুফল পাওয়া যাচ্ছে।”

দেশের রাজনীতির প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দিল্লিতে ২৭ বছর পর বিজেপি সরকার আসতে চলেছে। কংগ্রেস শূন্য পেয়েছে, কমিউনিস্টরা নোটার সমান এবং আপ সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দুর্নীতির মাধ্যমে কেউ সফল হতে পারে না। স্বচ্ছ প্রশাসন কিভাবে চালাতে হয়, তা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শিখতে হবে।” মহাকুম্ভের পুণ্যস্নান ও আধ্যাত্মিক পরিবেশের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য প্রার্থনা করে তার পুণ্যস্নান সম্পন্ন করেন।

আগরতলা

আগরতলাচলতি মাসেই শুরু হতে পারে আগরতলা-গুয়াহাটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রা!

বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে চলতি মাসের শেষ দিকে কিংবা আগামী মার্চের প্রথম দিকে আগরতলা-গুয়াহাটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হতে পারে। আগরতলা থেকে গুয়াহাটির মধ্যে এই দ্রুতগতির ট্রেন চালুর জন্য প্রয়োজনীয় রেললাইন বৈদ্যুতিকরণের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং ট্রায়াল রানও সফলভাবে শেষ হয়েছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা।

রেললাইনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত

আগরতলা থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালুর জন্য উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এনএফআর) ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। আগরতলা-গুয়াহাটি রুটে বৈদ্যুতিক লোকোমোটিভ ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ইতিমধ্যেই প্রস্তুত। বদরপুর থেকে ত্রিপুরার জিরানিয়া স্টেশন পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেনের সফল ট্রায়াল রান শেষ হয়েছে। অতি দ্রুত যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করার পরিকল্পনা চলছে বলে এনএফআরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

ট্রেনের সময়সূচি ও স্টপেজ

আগরতলা-গুয়াহাটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল ৬টায় আগরতলা থেকে ছাড়বে এবং দুপুর ১:৩০ মিনিটে গুয়াহাটিতে পৌঁছাবে। আবার দুপুর ২টায় গুয়াহাটি থেকে ছেড়ে রাত ৯:৩০ মিনিটে আগরতলায় পৌঁছাবে। পথে আমবাসা, ধর্মনগর, নিউ করিমগঞ্জ, বদরপুর এবং হোজাই স্টেশনে থামবে।

সময় সাশ্রয় ও টিকিটের মূল্য

এই ট্রেনটি ৫৭১ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে এবং বর্তমানের দ্রুততম তেজস এক্সপ্রেসের তুলনায় প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় সাশ্রয় করবে। তেজস এক্সপ্রেস যেখানে ১২ ঘণ্টা সময় নেয়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সেই পথ অতিক্রম করবে মাত্র ৭ ঘণ্টায় এবং টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এসি চেয়ার কারের জন্য প্রায় ১৩৮০ টাকা এবং এক্সিকিউটিভ চেয়ার কারের (EC) জন্য ২৩৯৫ টাকা।

উত্তর পূর্বাঞ্চলের নতুন দিগন্ত

ত্রিপুরার প্রথম এবং আসামের দ্বিতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু হওয়ার মাধ্যমে উত্তর-পূর্বের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর আগরতলা এবং গুয়াহাটির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও মজবুত হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের প্রকল্প হিসেবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২২ সালে ত্রিপুরায় রেললাইন বিদ্যুতায়নের জন্য ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ কর্পোরেশন লিমিটেড (TSCL) রেলওয়ে বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। অবকাঠামো প্রস্তুত হওয়ার সাথে সাথেই আসামের শিলচর এবং আগরতলা পর্যন্ত বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসের শেষের দিকেই আগরতলা-গুয়াহাটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচল শুরু হতে পারে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর ট্রেন চালুর নির্দিষ্ট তারিখ জানা যাবে। এই ট্রেন চালু হলে ত্রিপুরার বাসিন্দারা উপকৃত হবেন এবং ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে সাশ্রয় হবে। আগরতলা থেকে গুয়াহাটির মধ্যে এই অত্যাধুনিক বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালুর খবরে ত্রিপুরাবাসীর মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উন্নত সেবা ও দ্রুতগতির যাত্রা উপভোগ করতে মুখিয়ে আছেন যাত্রীরা। এখন শুধু দিন গণনার পালা।

ভারত

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে আত্মবিশ্বাসী ভারত!

ভারত সফরে এসে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, যেখানে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-২০ সিরিজে দারুণভাবে জয়ী হয়ে ভারত নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। এই সফরে ভারতীয় দল ব্যাটিং ও বোলিং উভয় ক্ষেত্রেই অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, যা আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।

ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ করল ভারত। সিরিজের শেষ ম্যাচটি আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভারত ১৪২ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় লাভ করে। এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৫০ ওভারে ৩৫৬ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে। দলের ওপেনার শুভমান গিল অসাধারণ ব্যাটিং করে ১১২ রান করেন, যা তার ক্যারিয়ারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সেঞ্চুরি। এছাড়া শ্রেয়াস আইয়ার ও সূর্যকুমার যাদবের অর্ধশতক দলের স্কোর আরও মজবুত করে তোলে। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ ভারতীয় বোলারদের সামনে টিকতে পারেনি এবং ৩৪.২ ওভারে ২১৪ রানে অলআউট হয়। ভারতের পক্ষে আর্শদীপ সিং, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব এবং হর্ষিত রানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে, আর্শদীপ সিং ৩টি উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখেন।

টি-২০ সিরিজেও ভারত দাপটের সঙ্গে খেলে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত প্রথম টি-২০ ম্যাচে অভিষেক শর্মা ৭৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, যার সুবাদে ভারত ৭ উইকেটে জয় লাভ করে। দ্বিতীয় ম্যাচেও ভারত নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখে জয় তুলে নেয়। তবে তৃতীয় টি-২০ ম্যাচে রাজকোটে ইংল্যান্ড ২৬ রানে জয়লাভ করে, যা সফরে তাদের একমাত্র সান্ত্বনা ছিল। শেষ দুটি ম্যাচে ভারতীয় বোলাররা ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের দমিয়ে রেখে জয় নিশ্চিত করে। সিরিজ জয়ের মাধ্যমে ভারত টি-২০ ক্রমতালিকায় তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করে। যদিও এই সফরে শুধুমাত্র সীমিত ওভারের ম্যাচ ছিল, তবে ইংল্যান্ড দল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল ভারতীয় ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে, যেখানে ভারতীয় বোলারদের সামনে তাদের দুর্বলতা প্রকাশ পায়।

ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, “পুরো দল অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে। বিশেষ করে তরুণ খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস দেখে আমি অভিভূত। সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি রয়েছে, সেখানে এই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।”
অন্যদিকে, ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার পরাজয় স্বীকার করে বলেন, “ভারত সত্যিই দুর্দান্ত খেলেছে। আমাদের কিছু দুর্বলতা রয়েছে, যা ঠিক করতে হবে। তবে তরুণ খেলোয়াড়রা কিছু ইতিবাচক মুহূর্ত উপহার দিয়েছে।” তবে এই সফরে বিশেষ কিছু দিক পরিলক্ষিত হয়েছে, যেগুলো হলোঃ

  • শুভমান গিলের দুর্দান্ত ব্যাটিং ফর্ম, বিশেষ করে ওয়ানডে সিরিজে সেঞ্চুরি।
  • আর্শদীপ সিং ও কুলদীপ যাদবের অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্স।
  • অভিষেক শর্মার প্রথম টি-২০ ম্যাচে ৭৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস।
  • পুরো সিরিজে ভারতীয় দলের ফিল্ডিং ও বোলিং ইউনিটের দৃঢ়তা।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই জয় ভারতের জন্য বড় সাফল্য এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে দলকে আত্মবিশ্বাস যোগাবে। পুরো সিরিজে ভারতীয় দল তাদের ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের সমন্বয়ে প্রতিপক্ষকে একপেশে খেলায় হারিয়েছে।ভারতের এই জয় ক্রিকেট বিশ্বে তাদের শক্ত অবস্থানকে আরও মজবুত করেছে।

উগ্রপন্থা

ত্রিপুরাকে উগ্রপন্থার মাধ্যমে অশান্ত করার পরিকল্পনা!

ত্রিপুরায় নতুন করে উগ্রপন্থা ছড়ানোর চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। বুধবার পশ্চিম ত্রিপুরার জিরানিয়া মোটরস্ট্যান্ড কমপ্লেক্সে ৪০.৫৮ কোটি টাকার পাঁচটি নতুন পরিবহন প্রকল্পের শিলান্যাস এবং একটি প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে, কেউ কেউ ত্রিপুরায় আবার উগ্রপন্থা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমি তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, এবার কিন্তু কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অনেক পরিশ্রমের পর রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই কেউ এই শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ডাঃ সাহা জানান, “ত্রিপুরা এখন উগ্রপন্থা মুক্ত রাজ্য। এটিটিএফ এবং এনএলএফটি বৈরী গোষ্ঠীর সঙ্গে মৌ স্বাক্ষরের মাধ্যমে তারা মূল স্রোতে ফিরে এসেছে। অতীতে রাজ্যে অরাজকতা এবং সন্ত্রাসের যে পরিবেশ ছিল, তা দূর করতে আমরা সফল হয়েছি। তাই এবার কেউ উগ্রপন্থার বীজ বপনের চেষ্টা করলে কঠোরতম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “ত্রিপুরায় উগ্রপন্থা দমনের মাধ্যমে যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা রক্ষা করার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চাই রাজ্যের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন ও সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে।”

কমিউনিস্ট শাসনের সময় রাজ্যে অরাজকতা এবং সন্ত্রাসের পরিবেশ ছিল উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগে নির্বাচনের আগে এবং পরে সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটত। কিন্তু এখন রাজ্যে স্থিতিশীলতা এসেছে। আমরা কখনও সেই পুরনো অশান্ত পরিবেশে ফিরতে দেব না।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তুলতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ত্রিপুরা দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যে ছয়টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে।”

পরিবহন দপ্তরের উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা মোট ৪০.৫৮ কোটি টাকার পাঁচটি নতুন পরিবহন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। নতুন প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে –

  • জিরানিয়া মোটরস্ট্যান্ড
  • জোলাইবাড়ি মোটরস্ট্যান্ড
  • মেলাঘর মোটরস্ট্যান্ড
  • তেলিয়ামুড়া, খোয়াই জেলার জেলা পরিবহন অফিস
  • শান্তিরবাজার, দক্ষিণ ত্রিপুরার জেলা পরিবহন অফিস

এছাড়া ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হয় খোয়াই জেলার পুরান বাজারের ইন্টিগ্রেটেড পার্কিং কমপ্লেক্স। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, জিরানিয়া নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান রতন কুমার দাস, পরিবহন দপ্তরের সচিব সি কে জমাতিয়া, পরিবহন দপ্তরের কমিশনার সুব্রত চৌধুরী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

ত্রিপুরায় নতুন করে উগ্রপন্থা সৃষ্টির চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে ত্রিপুরাকে উগ্রপন্থা মুক্ত রাখাও এখন সরকারের মূল লক্ষ্য।