আগ্নেয়াস্ত্র

খোয়াই সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার মণিপুরের যুবক!

আগরতলা কাস্টমস ডিভিশনের কর্মকর্তারা গোপন সূত্রে খবর পান যে মণিপুরের এক ব্যক্তি লামডিং থেকে আগরতলায় পিস্তল ও কার্তুজ নিয়ে এসেছে। তাদের তৎপরতায় ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয় এবং খোয়াই জেলার সিঙ্গিছড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের সময় হাতেনাতে ধরা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম দাংশাওয়া মোলজি (২৫)। তাঁর কাছ থেকে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র (রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতীয় তৈরি), ১৫০টি কার্তুজ এবং ৫টি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন।

বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা!

সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তবে সরকার দেশটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ। এছাড়া, শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং তাঁর সমর্থকদের বর্তমান সরকারের স্বৈরাচারীতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। অপরদিকে ইউনুস সরকার ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে যাতে শেখ হাসিনা এমন কোনো বক্তব্য না দেন যাতে তাঁর সমর্থকরা উজ্জীবিত হতে পারে, যা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।

তবে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, সাধারণ মানুষ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি বিভিন্ন দেশ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খোয়াই সীমান্তে দাংশাওয়া মোলজির গ্রেপ্তার এ ধরনের কার্যকলাপেরই একটি উদাহরণ। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশে আইনি হয়রানি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সরকারকে সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

ভারতের প্রতিক্রিয়া!

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সীমান্তে বেড়ে চলা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে, আগরতলা সীমান্তে অস্ত্রসহ এক মণিপুরের যুবকের গ্রেপ্তারের ঘটনায় ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতা এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহিংস কর্মকাণ্ড আমাদের জন্যও উদ্বেগের বিষয়। সীমান্তে অবৈধ অস্ত্র পাচার রুখতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব এবং বাংলাদেশ সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।” এছাড়া, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বাংলাদেশ থেকে সম্ভাব্য নিরাপত্তা হুমকি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বাংলাদেশের নতুন সরকারকে সন্ত্রাস দমনে আরও সক্রিয় হতে অনুরোধ জানিয়েছে।

কংগ্রেসের

পাবিয়াছড়া বিধানসভার দাঙ্গারাই পাড়ায় ৫৬ জন ভোটারের কংগ্রেসে যোগদান!

ত্রিপুরার ৫০ নম্বর পাবিয়াছড়া বিধানসভার অন্তর্গত মাছমারা সেক্টরের দাঙ্গারাই পাড়া ADC ভিলেজে এক বিশাল যোগদান সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় পানবাগান ও দাঙ্গারাই পাড়া এলাকার ৫৬ জন ভোটার আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি ছেড়ে জাতীয় কংগ্রেস দলে যোগদান করেন।

এই যোগদান সভায় নবাগত সদস্যদের কংগ্রেসের পতাকা প্রদান করে স্বাগত জানান ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা। তিনি এই যোগদানকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং বলেন, “ত্রিপুরার জনগণ বিজেপির জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে জাতীয় কংগ্রেসই একমাত্র বিকল্প।”

উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক সত্যবান দাস, ঊনকোটি জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সমীরন দাস, পাবিয়াছড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অসিত দেব, প্রাক্তন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সুসেন ভৌমিকসহ মাছমারা সেক্টরের কংগ্রেস নেতৃত্ববৃন্দ। তারা নবাগত সদস্যদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং দলকে আরও শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

স্থানীয় যোগদানকারীদের মতে, বিজেপি সরকার জনস্বার্থে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই তারা কংগ্রেসের প্রতি আস্থা রেখে দলে যোগদান করেছেন। নতুন যোগদানকারীরা আরোও জানান, কংগ্রেসই একমাত্র দল যারা জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে এবং প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সক্ষম।

সভা শেষে এক বিশাল মিছিলের মাধ্যমে কংগ্রেস কর্মীরা দাঙ্গারাই পাড়া ও সংলগ্ন এলাকায় জনসংযোগ করেন এবং সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শোনেন। কংগ্রেস নেতৃত্বরা জানান যে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জনগণের সমর্থনে কংগ্রেস সরকার গঠনের লক্ষ্যে কাজ করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাহাড়ে রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এই ধরনের দলবদলের ঘটনাগুলোর মাধ্যমে। রাজ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ এবং কংগ্রেসের প্রতি জনসমর্থনের বৃদ্ধি ভবিষ্যতে রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

 

মণিপুরের

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন এন বীরেন সিং!

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং আজ তার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। রাজ্যপালকে উদ্দেশ্য করে পাঠানো এক আনুষ্ঠানিক চিঠিতে তিনি তার পদত্যাগপত্র জমা দেন।

পদত্যাগপত্রে তিনি মণিপুরের জনগণের সেবা করার সুযোগ পাওয়াকে অত্যন্ত সম্মানজনক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং রাজ্যের উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও জনগণের স্বার্থে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য তাদের অব্যাহত সহযোগিতার প্রশংসা করেন।

পদত্যাগপত্রে এন বীরেন সিং রাজ্যের অগ্রাধিকারমূলক কিছু বিষয়কে তুলে ধরে মাননীয় রাজ্যপালকে লিখেছেন, “আপনার মাধ্যমে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আন্তরিক অনুরোধ জানাই, এই উদ্যোগগুলো চালিয়ে যেতে। আমি এই সুযোগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, যেগুলোর প্রতি মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি” উল্লেখযোগ্য পয়েন্টগুলো হল:-

১. মণিপুরের ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রাখা, যার একটি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্য রয়েছে।
২. সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করা এবং অবৈধ অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন।
৩. মাদক এবং নার্কো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া।
৪. সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য কঠোর এবং সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ, যাতে বায়োমেট্রিক যাচাই প্রক্রিয়ার মতো উন্নত পদ্ধতি কার্যকর থাকে।
৫. নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সীমান্ত ব্যবস্থাকে আরও দ্রুত এবং কার্যকর করে তোলা।

এন বীরেন সিং-এর পদত্যাগ মণিপুরের রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন রাজ্যের পরবর্তী নেতৃত্ব কে হবেন এবং কীভাবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে, সেটি দেখার বিষয়। এই রাজ্যের জনগণ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে এন বীরেন সিং-এর পদত্যাগ নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। তবে, রাজ্যের ভবিষ্যৎ প্রশাসনিক কাঠামো কীভাবে সাজানো হবে, তা নিয়ে এখন সবার নজর।

লংতরাই

হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে লংতরাই গুড়া মশালা  ব্র্যান্ডের উদ্যোগে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা!

হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত ৩৫তম ত্রিপুরা শিল্প ও বাণিজ্য মেলা-তে লংতরাই গুড়া মশালার উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ এবং শিশু-কিশোরদের সৃজনশীল প্রতিভা উন্মোচনের লক্ষ্যে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় বিপুল সংখ্যক প্রতিযোগী অংশ নেয়।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের বয়সভিত্তিক পাঁচটি বিভাগে (ক, খ, গ, ঘ, ঙ) ভাগ করা হয়। বালক ও বালিকা উভয় বিভাগ মিলিয়ে মোট ৮০০ জন প্রতিযোগী এতে অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতার নিবন্ধন শুরু হয় সকাল ১০টায়, এবং প্রতিযোগিতা শুরু হয় সকাল ১১টায়।

প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন করেন লংতরাই ব্র্যান্ডের জেনারেল ম্যানেজার সুব্রত দেবনাথ। তিনি বলেন, “লংতরাই শুধুমাত্র একটি ব্র্যান্ড নয়, এটি শিল্প ও সংস্কৃতির প্রসারেও কাজ করে। শিশু-কিশোরদের সৃজনশীলতা বিকাশের সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতেও আমরা এমন আয়োজন চালিয়ে যাবো।”

প্রতিযোগীরা তাদের ক্যানভাসে সৃজনশীল চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়ে মুগ্ধ করেছে বিচারকদের। প্রতিযোগিতা শেষে বিচারকমণ্ডলীর রায়ে প্রত্যেক বিভাগ থেকে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয় এবং তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এই আয়োজন আগরতলার শিল্প-সংস্কৃতি অনুরাগীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। ব্র্যান্ডের এই মহতী উদ্যোগকে সকলে সাধুবাদ জানিয়েছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতেও তাঁরা এ ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশে উৎসাহিত করবেন। ৩৫তম ত্রিপুরা শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় লংতরাই ব্র্যান্ডের এই আয়োজন শিল্পপ্রেমী শিশু-কিশোরদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে থাকলো।

BJP

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ২৭ বছর পর ক্ষমতায় ফিরল BJP!

দিল্লির রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় পরিবর্তন এনে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিশাল জয় লাভ করেছে। দীর্ঘ ২৭ বছর পর দিল্লির ক্ষমতায় ফিরে এসেছে BJP, যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলের জন্য ঐতিহাসিক অর্জন। ৭০ আসনের দিল্লি বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছে ৪৮টি আসন, যা সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়েও অনেক বেশি। বিপরীতে, আম আদমি পার্টি (AAP) ২২টি আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী দলে পরিণত হয়েছে। কংগ্রেস একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি এবং শূন্য আসনে থেকে আরও একবার রাজ্যের রাজনীতিতে তাদের অস্তিত্ব সংকট স্পষ্ট হয়েছে।

বিজেপির এই ঐতিহাসিক জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “দিল্লির জনগণ উন্নয়ন, স্বচ্ছ প্রশাসন এবং জাতীয়তাবাদকে সমর্থন করেছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, দিল্লির প্রত্যেক নাগরিকের জন্য আমরা কাজ করব।” বিজেপির দিল্লি শাখার প্রধান মনোজ তিওয়ারি বলেন, “এটা শুধু এক রাজনৈতিক দলের জয় নয়, বরং দিল্লির জনগণের আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন। আমরা এবার দিল্লিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।” অপরদিকে, আম আদমি পার্টির নেতা এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পরাজয় স্বীকার করে বলেন, “আমরা জনগণের রায়ে শ্রদ্ধা জানাই। বিজেপিকে অভিনন্দন জানাই। তবে আমরা জনগণের স্বার্থে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব।”

২০২৫ সালের দিল্লি নির্বাচনে ভোটদানের হার ছিল ৬০% এর বেশি, যা প্রায় ১.৫ কোটি ভোটারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। এবারের নির্বাচনে মূল ইস্যু ছিল উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, জল সংকট, নারী নিরাপত্তা এবং কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সংঘাত। বিশ্লেষকদের মতে, BJP-র পক্ষে একাধিক বিষয় কাজ করেছে—

  • নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা: জাতীয় রাজনীতিতে মোদির শক্তিশালী অবস্থান দিল্লির ভোটারদের প্রভাবিত করেছে।
  • কেজরিওয়ালের সরকারবিরোধী হাওয়া: দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পর এএপি সরকারের বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ বাড়ছিল।
  • কেন্দ্রের সাথে সংঘাত: দিল্লি সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বন্দ্ব অনেক ভোটারকে বিজেপির দিকে ঠেলে দিয়েছে।
  • হিন্দুত্ব ও জাতীয়তাবাদ: বিজেপির প্রচারকৌশলে জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মীয় সংবেদনশীলতা একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ফলাফল শুধু দিল্লির জন্য নয়, বরং ২০২৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের দিকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করছে। মোদির নেতৃত্বে BJP ফের জাতীয় রাজনীতিতে তাদের আধিপত্য আরও সুদৃঢ় করতে চাইবে। বিজেপি এখন সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কারা দায়িত্ব নেবেন, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীদের মধ্যে মনোজ তিওয়ারি, বিজেন্দ্র গুপ্ত এবং গৌতম গম্ভীরের নাম উঠে আসছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বিজেপি আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার গঠনের দাবি জানাবে এবং নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেবেন। দিল্লির জনগণ এখন তাকিয়ে আছে নতুন সরকারের দিকেই—তারা দেখতে চায়, বিজেপি তাদের প্রতিশ্রুত উন্নয়ন ও পরিবর্তন কতটা বাস্তবে রূপ দিতে পারে।About Us

বৈদ্যুতিক ট্রেন

ত্রিপুরা ও দক্ষিণ আসামে শীঘ্রই চালু হচ্ছে বৈদ্যুতিক ট্রেন, সফল ট্রায়াল রান!

ত্রিপুরা ও দক্ষিণ আসামের বাসিন্দাদের জন্য সুখবর! খুব শীঘ্রই এই অঞ্চলে বৈদ্যুতিক ট্রেন চালু হতে চলেছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এনএফআর) দ্রুততার সঙ্গে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে, বদরপুর (আসাম) থেকে ত্রিপুরার জিরানিয়া পর্যন্ত প্রথম পণ্যবাহী ট্রেনের ট্রায়াল রান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে যাত্রীবাহী বৈদ্যুতিক ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা আরও জোরালো হলো।

শীঘ্রই চালু হতে পারে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস!

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই বৈদ্যুতিক লোকোমোটিভসহ যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করা হবে। এর পাশাপাশি, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালুর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। শিলচর (আসাম) থেকে আগরতলা পর্যন্ত বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সম্প্রসারিত করা হবে বলে জানা গেছে। গত বছর আগরতলা রেলওয়ে স্টেশনে একটি জেনেরিক ঔষধ কাউন্টার উদ্বোধন করতে এসে সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য জানান, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালুর জন্য প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ছোটখাটো কিছু কাজ বাকি থাকলেও সেগুলো দ্রুত শেষ করা হবে।

ত্রিপুরার রেললাইন বিদ্যুতায়ন প্রকল্প!

ত্রিপুরায় রেললাইন বিদ্যুতায়নের জন্য ২০২২ সালে ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এর মাধ্যমে ত্রিপুরাকে জাতীয় রেল গ্রিডের সঙ্গে বৈদ্যুতিক ট্রেন সংযোগে যুক্ত করার কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশন লিমিটেড (TSECL) রেলওয়ে বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। বর্তমানে ত্রিপুরা থেকে দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই, পাটনা, ফিরোজপুরসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহরের সঙ্গে একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেনের সংযোগ রয়েছে, তবে সবগুলোই ডিজেল চালিত। বৈদ্যুতিক ট্রেন চালু হলে রেল পরিষেবা আরও দ্রুত, আরামদায়ক ও পরিবেশবান্ধব হবে।

উত্তর-পূর্বে রেল পরিকাঠামো

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির রেল পরিষেবা উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প বন্দে ভারত এক্সপ্রেস গত বছরের ২৯ মে আসামের গুয়াহাটি ও পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে চালু করা হয়। এই ট্রেনটি মাত্র ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছে যায় এবং সপ্তাহে ছয় দিন চলাচল করে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে বর্তমানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গের সাতটি জেলা ও উত্তর বিহারের পাঁচটি জেলায় পরিষেবা প্রদান করছে। এদিকে, ত্রিপুরাবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কবে থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচল শুরু করবে।

লাভ কী হবে?

✅ ভ্রমণের সময় কমবে
✅ আরও আরামদায়ক ও আধুনিক ট্রেন পরিষেবা মিলবে
✅ ডিজেল চালিত ট্রেনের তুলনায় পরিবেশবান্ধব হবে
✅ বিদ্যুতায়নের ফলে দীর্ঘমেয়াদে রেলের ব্যয় কমবে

সব মিলিয়ে, ত্রিপুরা ও দক্ষিণ আসামের জনগণের জন্য বৈদ্যুতিক ট্রেন পরিষেবা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা!

ত্রিপুরা Destination Tripura

 ত্রিপুরা সরকারের সঙ্গে ৮৭ জন উদ্যোগপতির ৩,৭০০ কোটি টাকার মৌ স্বাক্ষর!

শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল ত্রিপুরা সরকার। রাজ্যে বিনিয়োগের লক্ষ্যে ৮৭ জন উদ্যোগপতি রাজ্য সরকারের সঙ্গে মোট ৩,৭০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। শনিবার আগরতলার এক বেসরকারি হোটেলে আয়োজিত ‘ডেস্টিনেশন ত্রিপুরা‘ বিজনেস কনক্লেভে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছর ধরে দেশ-বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য রাজ্য সরকার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সেই উদ্যোগ এখন সফল। তিনি বলেন, “মানুষ চায় যেখানেই বিনিয়োগ করবেন, সেখানে যেন শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। আমরা রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলার পরিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে দেশের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখানে আসতে আগ্রহী হচ্ছেন।”

ত্রিপুরায় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে রাজ্য সরকার বিভিন্ন ধরনের আর্থিক প্রণোদনা ও নীতি-সহায়তা দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, বিনিয়োগকারীদের জন্য বিদ্যুৎ খাতে সাবসিডি, মূলধনী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রণোদনা, এবং বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে বিশেষ নীতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

শিল্পোন্নয়নের জন্য ‘ডেস্টিনেশন ত্রিপুরা’ বিজনেস কনক্লেভ রাজ্য সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন এবং ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি গ্রহণ করেছেন। ত্রিপুরা, যা উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম সম্ভাবনাময় রাজ্য, বাংলাদেশ-সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপযুক্ত ক্ষেত্র তৈরি করছে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই রাজ্যের অর্থনীতি মূলত কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীল। এখানে প্রচুর প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রাজ্যে ইতিমধ্যে ‘লক্ষ্য ২০৪৭’ নামে একটি উন্নয়ন ভিশন চালু হয়েছে। রাজ্যের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৭৭,৭২৩ টাকা, যা ২০১২ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। জিএসডিপি বৃদ্ধির হার ৮.৯%, যা উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘হীরা মডেল’ অনুসারে রাজ্যের সড়ক, বিমান ও রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তন এসেছে। আগরতলার মহারাজা বীর বিক্রম (এমবিবি) বিমানবন্দর উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম সুন্দর ও ব্যস্ততম বিমানবন্দরে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি, সাব্রুমে মৈত্রী সেতু চালু হলে এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে। ইতিমধ্যে সেখানে স্পেশাল ইকোনমিক জোন (SEZ) গড়ে তোলা হয়েছে এবং বিনিয়োগকারীরা এতে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ত্রিপুরায় শিল্প স্থাপনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষত—
✅ রাবার শিল্প
✅ বাঁশ ও আগর কাঠের শিল্প
✅ প্রাকৃতিক গ্যাস ভিত্তিক শিল্প
✅ কৃষিভিত্তিক শিল্প ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ
✅ পর্যটন ও হস্তশিল্প

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, টিআইডিসি চেয়ারম্যান নবাদল বণিক, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, ডিজি ইন্টেলিজেন্স অনুরাগ, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, এবং আসামের শিল্প দপ্তরের সচিব ইন্দিরা কলিতা-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ত্রিপুরার অর্থনৈতিক ও শিল্পোন্নয়নের পথে এই নতুন বিনিয়োগ রাজ্যের ভবিষ্যৎকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।