৩টি কেন প্রয়োজনে আরো ১০টি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত পাকিস্তান!
ভারতের সামরিক শক্তি বা আধুনিক প্রযুক্তিতে পাকিস্তান ভীত নয় বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কাশ্মীরের জন্য প্রয়োজন হলে পাকিস্তান আরও ১০টি যুদ্ধ করতে প্রস্তুত।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির ঘোষণা করেছেন যে, কাশ্মীরের জন্য প্রয়োজন হলে পাকিস্তান আরও ১০টি যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। ভারতের সামরিক শক্তি বা আধুনিক প্রযুক্তিতে পাকিস্তান ভীত নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। কাশ্মীরকে ‘পাকিস্তানের শিরা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাশ্মীর একদিন স্বাধীন হয়ে পাকিস্তানের অংশ হবে। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত।
মুজাফফরাবাদ সফরে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কাশ্মীরে নিযুক্ত পাক সেনাদের নিষ্ঠা, দারিত্ব ও যুদ্ধ প্রস্তুতির প্রশংসা করেন এবং বলেন, “জাতির সামনে সাময়িক চ্যালেঞ্জ থাকলেও, পাকিস্তান ভারতীয় রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে কাশ্মীরি ভাইদের পাশে থাকবে।” এ সময় তিনি জম্মু ও কাশ্মীরকে “অবৈধভাবে অধিকৃত” বলে উল্লেখ করেন এবং কাশ্মীরিদের প্রতি পাকিস্তানের অবিচল সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। ভারতের নীতির সমালোচনা করে পাক সেনাপ্রধান বলেন, “ভারতীয় নৃশংসতা ও হিন্দুত্ববাদী উগ্রবাদের উত্থান কাশ্মীরি জনগণের স্বাধীনতার সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করবে।”

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরের যুদ্ধের হুঁশিয়ারির কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সামরিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কাশ্মীর চিরকাল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল এবং থাকবে। পাকিস্তানের যুদ্ধের হুমকি শুধু রাজনৈতিক চমক এবং বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করেন, পাকিস্তান তার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য এই ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্য করছে। এক ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তার ভাষায়, “নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় লড়াই করছে পাকিস্তান। অথচ তারা যুদ্ধের কথা বলছে! পাকিস্তানের উচিত দেশের অর্থনীতি ও নিরাপত্তার উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া, ভারতের বিরুদ্ধে অবাস্তব হুমকি দেওয়া নয়।”
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কড়া প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “যদি পাকিস্তান ১০টি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে থাকে, তবে ভারত ১০০টি যুদ্ধ জয়ের ক্ষমতা রাখে। ভারত পাকিস্তানের কোনো হুমকিকে ভয় পায় না।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং চিরকাল ভারতেরই থাকবে। পাকিস্তানের মিথ্যা প্রচারণা এবং হুমকির মাধ্যমে সত্য বদলাবে না। বরং ভারতীয় সেনাবাহিনী ও জনগণ কাশ্মীরের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, পাকিস্তান, যে নিজেই আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক দেশ হিসেবে পরিচিত, তারা কাশ্মীর প্রসঙ্গে নৈতিকতার বুলি আওড়ানোর কোনো অধিকার রাখে না। “নিজেদের দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চরম সংকট চলছে, অথচ তারা কাশ্মীরের ‘অধিকার’ নিয়ে কথা বলছে—এটা নিছক হাস্যকর!”
ভারত সরকার স্পষ্ট করেছে যে তারা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চায়, তবে কেউ যদি আগ্রাসনের চেষ্টা করে, তাহলে ভারত কঠোর ও উপযুক্ত জবাব দেবে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, “ভারত যুদ্ধ চায় না, কিন্তু পাকিস্তান যদি সংঘাত চায়, তাহলে তারা তাদের অতীতের মতোই পরাজিত হবে।”
ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করেন, “পাকিস্তান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে জর্জরিত। যুদ্ধের কথা ভাবার আগে তাদের উচিত নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করা।” ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে—কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং কোনো ধরনের যুদ্ধ বা উস্কানি ভারতের এই অবস্থান পরিবর্তন করতে পারবে না। পাকিস্তানের যুদ্ধের হুমকি হাস্যকর এবং এটি বাস্তবতার সাথে কোনোভাবেই মিল নেই। ভারত শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চাইলেও দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।