শ্যামসুন্দর

ত্রিপুরার শ্যামসুন্দর কোং জুয়েলার্স আরোও একধাপ এগিয়ে!

হীরার গয়নার জগতে নতুন সংযোজন নিয়ে এলো শ্যামসুন্দর কোং জুয়েলার্স‘গ্লিটেরিয়া নামে এক্সক্লুসিভ হীরার গহনার ব্র্যান্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলো আগরতলায় এক আনন্দঘন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এই নতুন কালেকশন আধুনিক নারীর প্রতিদিনের মুহূর্তকে আরও উজ্জ্বল করে তুলতে ডিজাইন করা হয়েছে।

আগরতলার ফ্ল্যাগশিপ শোরুমে ‘গ্লিটেরিয়া‘ ব্র্যান্ড জোনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ত্রিপুরার পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী দর্শনা বণিক এই অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং গ্লিটেরিয়া গয়না পরে অতিথি ও গ্রাহকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে শ্যামসুন্দর কোং জুয়েলার্সের তরুণ মুখ মিঠুন দেববর্মা ও খুমজার দেববর্মা অতিথিদের সঙ্গে মিশে যান এবং নতুন কালেকশন সম্পর্কে ধারণা দেন। জনপ্রিয় গায়িকা পারমিতা দেববর্মার গান পরিবেশনা গোটা অনুষ্ঠানে অন্য এক মাত্রা যোগ করে।

বিশেষ লঞ্চ অফার

গ্লিটেরিয়া ব্র্যান্ডের উদ্বোধন উপলক্ষে ৪ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১২ দিনের বিশেষ অফার ঘোষণা করা হয়েছে। এই অফার ত্রিপুরার আগরতলা, উদয়পুর ও ধর্মনগর এবং কলকাতার গড়িয়াহাট, বেহালা ও বারাসাত শোরুমে প্রযোজ্য। এই অফারে থাকছে—

✅ হীরের গয়নার মজুরিতে ১০০% ছাড়
✅ সোনার গয়নার মজুরিতে ১৫% ছাড়
✅ প্রতি কেনাকাটায় নিশ্চিত উপহার
✅ মেগা লাকি ড্র-তে একটি হীরের নেকলেস ও তিনটি হীরের নেকচেন জেতার সুযোগ।

শ্যামসুন্দর কোং জুয়েলার্সের ডিরেক্টর রূপক সাহা বলেন, “গ্লিটেরিয়া” আমাদের প্রথম এক্সক্লুসিভ হীরার গহনার ব্র্যান্ড এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে আধুনিক নারীর প্রতিদিনের মুহূর্তগুলো আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

ডিরেক্টর অর্পিতা সাহা বলেন, “গ্লিটেরিয়া ব্র্যান্ড জোন আমাদের স্টোরের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠবে। গ্রাহকদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, তারা এসে আমাদের বিশেষ অফার কাজে লাগান এবং নতুন কালেকশন দেখুন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী শ্যামসুন্দর কোং জুয়েলার্সকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আমি ‘গ্লিটেরিয়া’র সম্পূর্ণ সাফল্য কামনা করছি, যা এই রাজ্যে প্রথমবারের মতো নতুন রূপে যাত্রা শুরু করলো।” তিনি আরোও বলেন, এ রাজ্যে এমন একটি ব্র্যান্ড আত্মপ্রকাশ করল, যা এখানকার গয়না প্রেমীদের জন্য দারুণ সুযোগ আনবে।

দর্শনা বণিক তার মোহময়ী উপস্থিতি ও গ্লিটেরিয়ার সৌন্দর্যে অতিথি ও গ্রাহকদের মুগ্ধ করেন। এই নতুন কালেকশন এবং বিশেষ অফার ইতিমধ্যেই গয়না প্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। হীরার গহনার জগতে গ্লিটেরিয়া হতে চলেছে এক নতুন নাম, যা শ্যামসুন্দর কোং জুয়েলার্সের গৌরব আরও বাড়াবে

ত্রিপুরা

ত্রিপুরার চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ‘বিকাশ দাস’ গ্রেপ্তার!

ত্রিপুরার বহুচর্চিত চিটফান্ড কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ দাসকে মহারাষ্ট্রের থানের ভিওয়ান্দি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। ২০১৩ সাল থেকে পলাতক থাকা বিকাশ দাস সিবিআই-এর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় ছিল এবং তার বিরুদ্ধে দুইটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। ত্রিপুরা সরকারের অনুরোধে সিবিআই এই মামলার তদন্ত শুরু করে।

সিবিআই-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে আত্মগোপনে থাকা বিকাশ দাসকে ২০২৪ সালের ১৬ আগস্ট আগরতলার বিশেষ সিবিআই আদালত ‘প্রক্লেমড অফেন্ডার’ ঘোষণা করে এবং তার বিরুদ্ধে স্থায়ী গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অভিযুক্তকে ধরতে সিবিআই ২০,০০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। অবশেষে প্রযুক্তিগত নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মহারাষ্ট্রে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিবিআই জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ ও ৭ মার্চ বিকাশ দাস ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ, Suchana Real Estate Pvt. Ltd. নামের একটি সংস্থা বিনিয়োগকারীদের উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা সংগ্রহ করত। কিন্তু ২০১২ সালে হঠাৎ সব অফিস বন্ধ করে প্রতারকরা পালিয়ে যায়। শুধু একটি মামলাতেই ৬.৬ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যা আরও বড় অঙ্কের হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিবিআই, ২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারি  বিকাশ দাস, সুজিৎ দাস এবং তাদের কোম্পানির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে। সিবিআই জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া বিকাশ দাসকে যথাযথ আদালতে পেশ করা হবে এবং পরবর্তী তদন্ত প্রক্রিয়া সেখান থেকেই এগোবে।

সিবিআই-এর এই সফল অভিযানে ত্রিপুরার বহু প্রতারিত বিনিয়োগকারী নতুন আশার আলো দেখছেন। তবে মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা এখনও পলাতক আছে কিনা, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।

কালো

জৈব পদ্ধতিতে কালো চালের চাষ কৃষকদের জন্য আশার আলো!

ত্রিপুরার জুমিয়া কৃষকদের উৎপাদিত বিশেষ সুগন্ধিযুক্ত জৈব কালো চাল বা অর্গানিক ব্ল্যাক রাইস সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো বহিঃরাজ্যে রপ্তানি করা হয়েছে। উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর মহকুমায় উৎপাদিত ১৩০০ কেজি অর্গানিক ব্ল্যাক রাইস দিল্লির ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ লিমিটেডের কাছে প্রতি কেজি ১৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে। মহকুমা কৃষি আধিকারিক জানান, এই প্রথম রাজ্যের কৃষকদের উৎপাদিত এই চাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় বহিঃরাজ্যে রপ্তানি করা হলো, যা কৃষি ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

কালো চাল, যা বেগুনি চাল নামেও পরিচিত, এটি ধানের একটি বিশেষ প্রজাতি যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে,–

✔ এই চালে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে
✔ প্রোটিন, আয়রন, ফাইবার, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন ও ফলিক অ্যাসিডে সমৃদ্ধ
✔ বাদামি চালের তুলনায় বেশি পুষ্টিগুণসম্পন্ন

বিশ্বব্যাপী এই চালের ব্যাপক চাহিদা থাকায় রাজ্যের কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন। বর্তমানে রাজ্যের বড় বড় শপিংমলগুলোতে এই চাল ৩০০-৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে উত্তর জেলার যুবরাজনগর কৃষি মহকুমার নিজস্ব উদ্যোগে ১৫০০ কেজি কালো চাল বহিঃরাজ্যে রপ্তানি করা হয়েছিল। এই বিশেষ ধানের চাষে কৃষকরা অত্যন্ত উৎসাহিত। এবছর রাজ্যের কৃষকরা প্রায় ৫৫০০ কেজি কালো চাল উৎপাদন করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। কৃষকরা জানাচ্ছেন, এই চালের ভালো বাজার দর পাওয়ায় আগামী বছর আরও বেশি পরিমাণে এই ধানের চাষ করা হবে। কৃষকদের মতে, সাধারণ ধানের তুলনায় কালো চাল প্রায় চারগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে, ফলে কৃষি খাতে এই উদ্যোগ একটি বিপ্লব আনতে চলেছে।

সারা রাজ্যে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে জৈব কৃষি চাষ করা হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আরও সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে জৈব পদ্ধতিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। মিশন ফর অর্গানিক ভ্যালু চেইন ডেভেলপমেন্ট অফ নর্থ ইস্টার্ন রিজনের মিশন অধিকর্তা রাজীব দেব্বর্মা জানান, রাজ্যের কৃষকদের জৈব কৃষিতে উৎসাহিত করতে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৪০টি ফার্মার প্রোডিউসার কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত জৈব পণ্য সরাসরি বাজারজাত করতে রাজ্যে ৮টি জৈব আউটলেট খোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সব মিলিয়ে, ত্রিপুরায় জৈব কৃষির প্রসার এবং কালো চালের বহিঃরাজ্যে রপ্তানির সাফল্য কৃষকদের নতুন সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

সমবায়

সমবায় আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করার উপর জোর মুখ্যমন্ত্রীর।

সমবায় ক্ষেত্রের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে শক্তিশালী করা সম্ভব বলে মন্তব্য করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। শুধু রাজ্য নয়, সমবায়ের প্রসারে দেশও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবে। সমবায়কে কেন্দ্র করে দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। মঙ্গলবার, আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত “সমবায়ের প্রচার ও উন্নয়ন” সম্পর্কিত একদিনের রাজ্যভিত্তিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন ও রাজ্য সমবায় দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সমবায় আন্দোলন একটি রক্তপাতহীন আন্দোলন। এর মাধ্যমে সমাজ ও অর্থনীতি কিভাবে শক্তিশালী হতে পারে, তা অনেকেরই জানা নেই।” তিনি আরও বলেন, “সমবায় সমিতিগুলিকে শক্তিশালী করা গেলে দেশ আর্থিকভাবে আরও এগিয়ে যাবে। বর্তমানে ভারত অর্থনীতির দিক দিয়ে বিশ্বে পঞ্চম স্থানে রয়েছে, যা একসময় ১১তম স্থানে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এখন আমরা তৃতীয় স্থানে ওঠার লক্ষ্যে কাজ করছি।” তিনি আরও জানান, এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য সমবায়ের সফলতা ও ব্যর্থতা বিশ্লেষণ করা। ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করে ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা স্থির করাই এই আলোচনার অন্যতম উদ্দেশ্য।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে পৃথক সমবায় মন্ত্রক গঠনের পর সমবায় ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব গতি এসেছে। বিশেষ করে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সমবায় মন্ত্রকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নীতিগত সংস্কার আরও গতি পেয়েছে। ত্রিপুরা সরকারের সমবায় দপ্তর প্রতি বছরই সমবায় সপ্তাহ উদযাপন করে। এতে আলোচনা সভা, প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়। ত্রিপুরার প্রায় ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ৯ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমবায় সমিতির সঙ্গে যুক্ত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখন বাকি জনগণের মধ্যেও সমবায় আন্দোলনের চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দিতে হবে।” সমবায় মন্ত্রকের “সমবায়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধি” শ্লোগানকে সামনে রেখে দেশে প্রায় ৫৪টি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে,–

✔ প্যাক্স (Primary Agricultural Credit Society) সমিতিগুলির ডিজিটালাইজেশন
✔ দুগ্ধ ও মৎস্য সমবায় সমিতি গঠন
✔ প্যাক্সের মাধ্যমে ই-পরিষেবা চালু করা
✔ সমবায়ের মাধ্যমে পেট্রোল-ডিজেল ডিলারশিপ ও এলপিজি বিতরণ ব্যবস্থার অনুমোদন

ত্রিপুরায় ১০০% সমবায় সমিতিগুলিকে কম্পিউটারাইজড করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আসবে এবং দুর্নীতিও হ্রাস পাবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সমবায় সমিতিগুলিকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।

✔ ল্যাম্পস (LARGE AREA MULTI-PURPOSE SOCIETIES) ও প্যাক্সকে আর্থিকভাবে উন্নত করতে বিশেষ অনুদান
✔ সমবায় সংগঠনের কর্মীদের জন্য আয়কর ছাড়ের প্রস্তাব
✔ “প্রধানমন্ত্রী কিষান সমৃদ্ধি কেন্দ্র” প্রকল্পের সম্প্রসারণ
✔ নতুন “জাতীয় সমবায় নীতি” গঠনের পরিকল্পনা

সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, ন্যাশনাল কোঅপারেটিভ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলীপ সাঙ্গানি, চিফ এক্সিকিউটিভ ড. সুধীর মহাজন, এবং সমবায় দপ্তরের সচিব তাপস রায় সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া বলেন, “সমবায় আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে সরকার আরও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”

সমবায় খাতকে আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ত্রিপুরাকে দারিদ্র্যমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কেন্দ্র ও রাজ্যের সমবায় নীতির ফলে আগামী দিনে ত্রিপুরার অর্থনীতিতে সমবায় ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে, এমনটাই আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রশাসন

প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষুব্ধ ত্রিপুরা রাবার অ্যাসোসিয়েশন!

রাবার বোঝাই গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায়, পাঁচ দিন পরও পুলিশ প্রশাসনের ঘুম ভাঙ্গেনি! ত্রিপুরায় রাবার উৎপাদন শিল্প ক্রমশ সংকটে পড়ছে। দুষ্কৃতিকারীদের দৌরাত্ম্যে রাবার চাষীরা আতঙ্কে রয়েছেন। একের পর এক রাবার চাষীদের ওপর আক্রমণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, কখনো বা রাবার বাগানে আগুন, আবার কখনো রাবারের মজুদঘরে চুর!

৩০ জানুয়ারি সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ কলাছড়া থেকে এক রাবার বোঝাই ট্রাক আমতলী থানা হয়ে বাইপাস ধরে খয়েরপুরের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ মহেন্দ্র কোম্পানির কাছে ৪-৫ জন দুষ্কৃতিকারী গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশির নামে চালককে বিভ্রান্ত করে। তারা চালককে জানায়, গাড়িতে নাকি গাঁজা রয়েছে, তাই তল্লাশি চালাতে হবে। কিছু বোঝার আগেই তিন দুষ্কৃতী চালককে বাইকে বসিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়, আর বাকি সদস্যরা গাড়িটি কাঁঠালতলির দিকে নিয়ে যেতে শুরু করে। কিন্তু চালক বুদ্ধি করে চলন্ত বাইক থেকে লাফ দিয়ে চিৎকার শুরু করেন। তার আওয়াজ শুনে এলাকাবাসী ছুটে আসে এবং এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে। এরপর প্রায় আধঘণ্টা পর ছিনতাইকারীরা বাধ্য হয়ে রাবার বোঝাই ট্রাকটি ফেরত দেয়।

ঘটনার পরপরই আমতলী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। চার-পাঁচজন দুষ্কৃতীর নাম ও ছবি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, আজ পাঁচ দিন পার হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। ত্রিপুরা রাবার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কল্যাণ দেববর্মা সরস্বতী পুজোর দিন এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “আমতলী থানার পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে চায়নি। পরে মামলা নেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। দুষ্কৃতীদের নাম, পরিচয় ও ছবি দেওয়ার পরেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?” সংগঠনের সাবরুম বিভাগের সম্পাদক শংকর সিনহা বলেন, “এভাবে যদি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা কীভাবে ব্যবসা চালাব? পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় আমরা ক্ষুব্ধ।”

ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, প্রশাসন যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারে, তাহলে তারা কীভাবে বহিরাজ্যে রাবার পাঠাবেন? ত্রিপুরা রাবার অ্যাসোসিয়েশন, প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার এবং ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, “যদি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে তারা রাবার রপ্তানি বন্ধ করতে বাধ্য হবে।” বিগত কয়েক মাসে দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন সময় জিএসটি আধিকারিক কিংবা পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়ি থামিয়ে রাবার লুট করছে। এই সব ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দানা বাঁধছে।

ত্রিপুরার রাবার শিল্প রাজ্যের অন্যতম প্রধান রাজস্ব আহরণের উৎস হলেও চাষিরা নিরাপদ নন। সরকার ও প্রশাসন যদি দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না করে, তাহলে ত্রিপুরার রাবার ব্যবসায়ীরা ভয়াবহ সংকটে পড়বেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ত্রিপুরার রাবার শিল্পের ভবিষ্যৎ এখন পুলিশের সক্রিয়তার ওপর নির্ভর করছে! প্রশাসন কি এবার দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এটাই এখন দেখার!