প্রয়াত প্রাক্তন

প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। মৃত্যকালে বয়স হয়েছিল ৯২। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৯ টা ৫১ মিনিট নাগাদ দিল্লির এইমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ড. মনমোহন সিংহ একজন বিশিষ্ট ভারতীয় অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ এবং ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন সময়ে ভারত উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন লাভ করেছিল। তাঁর জীবনগল্প একাধারে সংগ্রামের ও সাফল্যের সাক্ষী।

শৈশব ও শিক্ষাজীবন

মনমোহন সিংহ ১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গাহ গ্রামে (বর্তমান পাকিস্তানে) জন্মগ্রহণ করেন। দেশভাগের সময় তাঁর পরিবার ভারতে স্থানান্তরিত হয়। শৈশব থেকেই তিনি মেধাবী ছাত্র ছিলেন। চণ্ডীগড়ের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডক্টরেট সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন

ড. সিংহ তার কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষকতা দিয়ে। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পদে যোগ দেন। এরপর তিনি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর এবং পরবর্তীতে পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসাবে কাজ করেন।

রাজনৈতিক জীবন

ড. মনমোহন সিংহের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৯১ সালে, যখন তিনি ভারতের অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। ভারতের অর্থনীতিকে উদারীকরণের ক্ষেত্রে তিনি একটি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেন। তার নেতৃত্বে ভারত বিশ্বায়নের পথে এগিয়ে যায় এবং অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই সংস্কার প্রক্রিয়া ভারতকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে দেয়।

২০০৪ সালে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস মনমোহন সিংহকে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত করে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেন। তাঁর আমলে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়।

ব্যক্তিগত জীবন

ড. মনমোহন সিংহ একজন শান্ত, বিনয়ী এবং মিতভাষী মানুষ হিসেবে পরিচিত। তাঁর স্ত্রী গুরশরণ কউর এবং তাঁদের তিন কন্যা রয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত সাদাসিধে এবং সহজ-সরল জীবনযাপন করেন।

ড. মনমোহন সিংহ তাঁর জীবন এবং কাজের মাধ্যমে ভারতীয় অর্থনীতি ও রাজনীতিতে একটি গভীর ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারত একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি অর্জন করে। তাঁর কাজের জন্য তিনি দেশ-বিদেশে প্রশংসিত এবং সম্মানিত হয়েছেন। ড. মনমোহন সিংহ একজন অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে শুধু ভারতের নয়, সারা বিশ্বের কাছে একটি প্রেরণার উৎস।

২০২১ সালের

২০২১ সালের স্বপ্ন অনুযায়ী, ১০০ শতাংশ বুথে যুবা সভাপতি

২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি; প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজনীতিতে নিঃস্বার্থ ও গঠনমূলকভাবে অবদান রাখার জন্য যুবসম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছিলেন। দ্বিতীয় জাতীয় যুব সংসদ উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে সেদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো রাজনীতিতেও আজ বড়সড় পরিবর্তন হয়েছে। রাজনীতির আঙিনাতেও যুবসম্প্রদায়ের উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী যুবসম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, সৎ মানুষরা এখন কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এর ফলে, রাজনীতির বিভিন্ন অসাধু কাজকর্মের বিষয়ে যে পুরনো ধারণা ছিল, সেগুলি বদলানো সম্ভব হচ্ছে।

২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি, প্রধানমন্ত্রী যুবসম্প্রদায়কে রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এর মাধ্যমে পরিবার-ভিত্তিক রাজনীতির অবসান হবে। “আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য আপনাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। স্বামী বিবেকানন্দের মতো মহান পথপ্রদর্শক আপনারা পেয়েছেন। আর তাঁর অনুপ্রেরণায় আমাদের যুবসম্প্রদায় যদি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন, তা হলে দেশ শক্তিশালী হবেই”। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজ্যে যুবাদের মূল দায়িত্বে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য বিজেপি। বৃদ্ধতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে যুবাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসার মধ্য দিয়ে বার্তা দিতে চাইল রাজ্য বিজেপি। সিপিএমে যখন যুব নেতৃত্বের অভাব, যুবারা বামেদের থেকে দূরে থাকতেই যখন বেশি আগ্রহী তখন ডাবল ইঞ্জিন অর্থাৎ বিজেপিতে যুবাদের ছড়াছড়ি। সিপিএমের শাখা, অঞ্চল, মহকুমা সম্মেলন শেষ হয়ে এখন চলছে জেলা সম্মেলেন৷ জানুয়ারীতে হবে রাজ্য সম্মেলেন৷ দেখা গেছে সম্মেলেনগুলো থেকে বৃদ্ধদের উপরই ভরসা রাখছেন নেতৃত্বরা৷ তার কারন হলো যুব নেতৃত্বের অভাব। যুবাদের তৈরি করা হয় নি। যে ভুলটা সিপিএম দল করেছিলো সেই ভুল করতে নারাজ শাসক শিবির বিজেপি। ২৫ বছরের বেশি সময় এই রাজ্যে বামেরা শাসন করেছেন। কিন্তু মানিক, বাদল কিংবা জিতেনবাবুরা তাদের উত্তরসূরী বাছাই করেননি। নৃপেনবাবু তাঁর উত্তরসূরি তৈরি করেছিলেন বলেই ২০ বছর মুখ্যমন্ত্রীত্ব করতে পেরেছেন মানিক সরকার। কিন্তু ক্ষমতা আগলে রাখার জন্যে মানিকবাবুরা ২০ বছরে উত্তরসূরি তৈরি করতে পারেননি। যার খেসারত এখন দিতে হচ্ছে দলকে। দলে নেই যুবা নেতৃত্ব। ফলে এখন সাংগঠনিক সম্মেলনগুলোতে বুড়োদের ফের দায়িত্বে আনা হচ্ছে। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই দলের কাছে। নেই জনজাতি নেতা। যুব নেতৃত্বের মধ্যেও গ্রহণযোগ্য নেতার অভাব। কিন্তু বিজেপি এই ভুলটা করতে চাইছে না। উল্লেখ করা যেতে পারে এক সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর মন কী বাত অনুষ্ঠানে যুবাদের এগিয়ে আসার জন্যে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার মানে রাজনীতিতে যাতে যুবারা এগিয়ে আসে তার জন্যে তিনি আহ্বান করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীও চাইছেন আগামীদিনে যুবাদের নেতৃত্বদানের জন্যে তৈরি করা। আর সেটাই করে দেখালো রাজ্য বিজেপি। ২০২১ সালের প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন অনুযায়ী; ৬০টি মণ্ডলের মধ্যে এক-দুটি মন্ডল বাদ দিলে বাকি সবকটি মন্ডলে নতুন যুবা মুখ। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে রাজ্য বিজেপিও এবার ৪৫ এর নিচে যাদের বয়স তাদেরকে মন্ডল সভাপতি পদে অভিষিক্ত করেছেন। মাত্র দুয়েকটি মন্ডলে পুরনোদের উপর ভরসা রাখতে বাধ্য হয়েছে বিজেপির শিবির। কারণ তাদের কাজকর্মে দল এবং সেইসব মন্ডলের জনপ্রতিনিধি বা বিজিত নেতারা খুশি। ফলে আগামী দিনে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তাদেরকেই মন্ডল সভাপতি পদে রাখাটা জরুরি বলে মনে করেছেন ওইসব নেতৃত্বরা। মন্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত সারা রাজ্যে ক্ষোভ, গোষ্ঠীবাজির কোন ঘটনা নেই৷ বরং দলীয় কার্যকর্তারা কর্মীদের নতুন সভাপতিদের বরন করে নিতে মাঠে নেমে পড়েছেন। ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকলেও তা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন নেতারা।

এনইসি

এনইসি বৈঠকে রাজ্যের প্রাপ্তি অনেক: মুখ্যমন্ত্রী

এনইসি বৈঠক নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা জানান; “ত্রিপুরার ইতিহাসে এত বড় বৈঠক আর হয়নি। এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”

সম্প্রতি কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চিঠি দিয়েছিলেন। তিনি জানতে চেয়েছিলেন উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদ তথা এনইসি বৈঠকের প্রাপ্তি কি। আবার প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করলেন রাজ্যে পানীয়জল ৮৭ শতাংশ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ধরনের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয় একটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ প্রকল্প হল জল জীবন মিশন। সম্প্রতি এন ই সি পোর্টালে যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে গত ছয় বছরে ৮৫.৭ কোটি টাকা ১৩ টি প্রকল্পের জন্য এন ই সি মঞ্জুর করেছে। এরমধ্যে ব্যয় হয়েছে মাত্র ২১.৩৮ কোটি টাকা।

বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী জানান উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলোর মধ্যে সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এটাই বড় প্রাপ্তি। ত্রিপুরা সম্পর্কে বুঝতে, জানতে পেরেছেন উত্তর পূর্বাঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীরা, রাজ্যপাল ও আধিকারিকরা। এনইসি  বৈঠকের ফলে; কৃষ্টি-সংস্কৃতির বিনিময় হয়েছে, এতে বাড়বে জিডিপি। আগর বাশবেত শিল্প সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিতে পেরেছেন তারা। রাজ্যের পর্যটনের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এটাই ত্রিপুরার মানুষের কাছে বড় প্রাপ্তি। এনইসি বৈঠক উপলক্ষে রাজ্যে এসেছেন ইসরুর চেয়ারম্যান। সারা দেশের ব্যাংকের আধিকারিকরা এসেছেন। এখানে ব্যাংকার্সদের বৈঠক হয়েছে। ত্রিপুরায় যে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ আছে সেটা জানতে পেরেছেন তারা। এটাই তো বড় প্রাপ্তি। ব্রু শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য ৫০০ কোটি টাকার প্যাকেজ দিয়েছিল কেন্দ্র। তা এখন এক বেড়ে ৮০০ কোটি টাকার উপর হয়েছে। রাজ্যের বারোটি জায়গায় ব্রদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন দেখে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজ্যে যে ভালো ভালো কাজ হচ্ছে তার অভিজ্ঞতা নিয়ে গেলেন তিনি। রিয়াং শরণার্থীরা যারা পুনর্বাসন পেয়েছে তারা ঠিকভাবে ঘর পেয়েছে কিনা, তাদের জন্য রাস্তাঘাট নির্মিত হয়েছে কিনা, তাদের রেশন প্রদান ঠিকঠাক ভাবে চলছে কিনা তাও উপলব্ধি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে কেউ কখনো কোনদিন চিন্তা করেনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরা চিন্তা করেছেন তাদের জন্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন এটাই হচ্ছে রাজ্যের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। রাজ্যে ভবিষ্যৎ উন্নয়নের প্রশ্নে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের পক্ষ থেকে এইমসের জন্য ফের দাবি জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। সীমান্ত নিরাপত্তা কতটুকু তা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন এই বৈঠকের ফলে এই অঞ্চলের রাজ্যগুলোর মধ্যে কৃষ্টি সংস্কৃতির বিনিময় হবে। এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়নের সহায়ক হবে। বৈঠকে এই অঞ্চলের বৃষ্টিপাত সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিভাবে আরো আগে দুর্যোগের আভাস পাওয়া যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে দখলকৃত সরকারি জমি উদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলোকে নেশার বিষয়ের জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়শই বলেন অষ্ট লক্ষ্মীর আয়তন উত্তরপ্রদেশ থেকেও বেশি। ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো থেকে জিডিপি বৃদ্ধি সারা দেশের অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মোট কথা রাজ্যের প্রাপ্তি অনেক বেশি বলেই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।

উত্তর পূর্বাঞ্চল

উত্তর পূর্বাঞ্চলকে অষ্টলক্ষী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

উত্তর পূর্বাঞ্চলের সার্বিক বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এজন্য উত্তর পূর্বাঞ্চলকে অষ্টলক্ষী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। একই ধারায় ত্রিপুরায় সকল অংশের মানুষকে সুশাসন দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। এজন্য আলাদা করে ত্রিপুরায় সুশাসন বিভাগ চালু করা হয়েছে। মঙ্গলবার হরিয়ানার গুরুগ্রামের এসজিটি ইউনিভার্সিটিতে কার্যকরী বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুশাসন সম্পর্কিত বিষয়ে আয়োজিত সম্মেলনে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, এসজিটি ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। এবার ত্রিপুরায় প্রথমবারের মতো নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিলের অধিবেশন অনু্ঠিত হয়েছে। এরপরই আমাকে এখানে আসতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি উত্তর পূর্বাঞ্চলের একজন প্রতিনিধি। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় উত্তর পূর্বাঞ্চলকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। সিকিম সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যকে অষ্টলক্ষী নাম দিয়েছেন তিনি। এই অঞ্চলের উন্নয়নে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন যতক্ষন পর্যন্ত অষ্টলক্ষীর উন্নয়ন হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত দেশের উন্নয়ন হবে না। এটা আমাদের জন্য খুবই বড় বিষয়। আগে প্রাক্তন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। এরপর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অষ্টলক্ষীর উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছেন। তিনি আমাদের হিরা মডেল দিয়েছেন। এজন্য ত্রিপুরায় এখন একটি থেকে ৬টি জাতীয় সড়ক হয়েছে। এই নতুন নতুন জাতীয় সড়ক আগামীতে আমাদের পথ চলার দিশা দেখাচ্ছে। পাশাপাশি, ত্রিপুরার ইন্টারনেট এখন দেশের মধ্যে তৃতীয় শক্তিশালী ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করছে, আর ত্রিপুরার এমবিবি এয়ারপোর্ট এখন উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম সেরা এয়ারপোর্ট হয়েছে। আগে এই এয়ারপোর্ট ছোট পরিসরে সিঙ্গারবিল এয়ারপোর্ট হিসেবে পরিচিত ছিল। এটি নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর। তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে এই এয়ারপোর্টের নামকরণ মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের নামে করা হয়েছে। এখন ত্রিপুরায় রেল পরিষেবার অসামান্য উন্নয়ন ঘটেছে। সবটাই এখন ব্রডগেজ রেল লাইন হয়েছে। দক্ষিণ জেলার প্রান্তিক শহর সাব্রুম পর্যন্ত রেল পরিষেবা চালু হয়েছে। আগামীতে বন্দে ভারত ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়ে যাবে। আগে ত্রিপুরা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস চালুর কথা আমরা কখনো ভাবতে পারি নি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের গুরুত্ব ভালোভাবে অনুধাবন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগে এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ কায়েম ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আজ উত্তর পূর্বাঞ্চল বিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে। এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলে প্রায় ১২টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আর সেটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগের কারণে। এখন শান্তির পরিবেশ কায়েম রয়েছে গোটা উত্তর পূর্বে। ত্রিপুরায় এনএলএফটি ও এটিটিএফ বৈরীরা আত্মসমর্পন করে মূলস্রোতে চলে এসেছে। এখন সন্ত্রাসবাদ মুক্ত ত্রিপুরা হয়েছে। এদিন বক্তব্যে নিজের চাকরি জীবনের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় চাকরি করতে কি কি প্রতিবন্ধকতার সামনে পড়তে হয়েছে সেটাও আলোচনা করেন।

ডাঃ সাহা বলেন, ত্রিপুরায় বামফ্রন্টের শাসনে দীর্ঘ পুরনো ব্রু শরনার্থীদের সমস্যা সমাধান করার জন্য কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কিন্তু ২৩ বছরের এই সমস্যা প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সাফল্য পেয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের জন্য ৫০০ কোটি টাকার প্যাকেজ ছিল। কিন্তু সেটা বৃদ্ধি পেয়ে ৮০০ কোটি টাকার অধিক হয়েছে। ব্রু শরনার্থীদের সুষ্ঠু পুনর্বাসনের জন্য যা যা করার প্রয়োজন সবই করা হয়েছে। মোট ১২টি জায়গায় তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ত্রিপুরা দ্রুত বিকাশের দিশায় এগিয়ে চলছে। মৈত্রী সেতুর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। শুধু বাংলাদেশের পরিবর্ত পরিস্থিতির কারণে সেটা চালু করা যাচ্ছে না। আগরতলা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেল ট্র্যাক নির্মাণও হয়েছে। আর এসব পরিষেবা শুরু হলে আগামীতে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে হয়ে উঠবে ত্রিপুরা। উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্য সহ ত্রিপুরায় পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। ত্রিপুরায় শান্তির পরিবেশ কায়েম রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার দিক থেকে দেশের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে নিচের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। ত্রিপুরা রাজ্যে ইতিমধ্যে ৬টি ইউনিভার্সিটি হয়েছে। একটি সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি, ৩টি মেডিকেল কলেজ ও একটি ডেন্টাল কলেজ গড়ে উঠেছে। একটি নার্সিং কলেজ, ফার্মাসিস্ট কলেজ রয়েছে। আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথি কলেজ খোলার জন্যও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ত্রিপুরায় কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে হয়েছে। এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য চিন্তাভাবনা চলছে। এর পাশাপাশি চিকিৎসা পরিষেবার জন্য ৯টি সুপার স্পেশালিটি পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার পাশাপাশি শিক্ষা, কৃষি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্যও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা সকল অংশের মানুষকে সুশাসন দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। এজন্য আলাদা করে ত্রিপুরায় সুশাসন বিভাগ চালু করা হয়েছে। এই বিভাগের কাজ হচ্ছে রাজ্য সরকারের অন্যান্য দপ্তরের কাজ ঠিকঠাকভাবে হচ্ছে কিনা সেটা নজর রাখা। সম্মেলনে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সৈনি, ছত্তিশগড়ের অর্থমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌধুরী, এসজিটি ইউনিভার্সিটির ম্যানেজিং ট্রাস্টি মনমোহন সিং চাওলা, এসজিটি ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. মদন মোহন চতুর্বেদি, জয়ন্ত কুলকার্নি সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।

"জাগো গ্রাহক জাগো"

“জাগো গ্রাহক জাগো” কর্মসূচি

“জাগো গ্রাহক জাগো” কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে; খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা সুরক্ষা বিষয়ক দপ্তরের উদ্যোগে। খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা সুরক্ষা বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেছেন যুব সমাজ ও মানুষকে সচেতন করতে পরিবহন দপ্তর ও খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা সুরক্ষা বিষয়ক দপ্তর যৌথ উদ্যোগে আগামী ১সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের ২৫টি কলেজে নেশা, সড়ক দুর্ঘটনা ও ক্রেতা স্বার্থ বিষয়ের উপর “জাগো গ্রাহক জাগো” কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে আজ খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা সুরক্ষা বিষয়ক দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় ভোক্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী বলেন প্রতারিত হওয়ার থেকে রক্ষা পেতে জনসচেতনতা হচ্ছে অন্যতম উপায় “জাগো গ্রাহক জাগো”। তিনি বলেন আজকাল মানুষ বুঝতে পারছেন যে তিনি প্রতারিত হচ্ছেন। তা সত্ত্বেও জাতীয় ভোক্তা ফোরাম, রাজ্য ভোক্তা ফোরাম বা জেলা ভোক্তা ফোরামে অভিযোগ দায়ের করছেন না। তিনি বলেন তাতে সেই মানুষটি প্রতারিত হওয়ার সাথে সাথে সমাজের ও ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। শ্রী চৌধুরী বলেন যতদিন না মানুষ সচেতন হচ্ছে ততদিন কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে মানুষের কল্যানে গৃহীত অর্থরাশির সঠিক ভাবে মূল্যায়ন করা যাবে না। তিনি বলেন রাজ্য সরকার অপরিহার্য পণ্য আইনকে সংশোধন করে কালোবাজারিদের কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য বদ্ধপরিকর। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে কেন্দ্রের অনুমোদন দরকার। আগামীদিনে যদি কেন্দ্র সেই ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করে তাহলে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আইন সচিব সঞ্জয় ভট্টাচাৰ্য বলেন জাতীয় ভোক্তা দিবস পালন বহু গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ের আন্দোলনের নিদর্শন। তিনি বলেন ১৯৮৬সালে ভোক্তা সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ হয়। পরে আজকের দিনে তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায়। সেদিন থেকে আজকের দিনটি জাতীয় ভোক্তা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তিনি বলেন যদিও আজকের দিনটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্রেতা সুরক্ষা। কিন্তু ভোক্তা তার নিজের ব্যাপারে নিজেই সচেতন নয়। শ্রী ভট্টাচাৰ্য বলেন বর্তমানে রাজ্য ভোক্তা ফোরামে কেবলমাত্র ৩৯টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে, ৪টি জেলা ভোক্তা ফোরামে ২৮৫টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তিনি মানুষকে নিজের অধিকারের বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা বিচারপতি রুহিদাস পাল, সদর মহকুমা শাসক মানিক লাল দাস, খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা সুরক্ষা বিষয়ক দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব অভিজিৎ বিশ্বাস প্রমুখ।

আগরতলায় বি এস এফ এর সদর কার্যালয়ে,  ভারত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নিয়োগ পত্র

আগরতলায় বি এস এফ এর সদর কার্যালয়ে,  ভারত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নিয়োগ পত্র

আগরতলায় বি এস এফ এর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত রোজগার মেলার অনুষ্ঠানে ভারত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ পত্র নিলেন ত্রিপুরার ৩১১ জন যুবক যুবতী। তাদের প্রত্যেকের চোখে মুখে খুশীর ঝলক। কেউ পেয়েছেন বি এস এফে চাকরির নিযুক্তি পত্র। আবার কেউ পেয়েছেন সি আর পি এফ, সি আই এস এফ, আই টি বি পি, এস এস বি এবং আসাম রাইফেলস বাহিনীতে চাকরির নিযুক্তি পত্র।

পোস্টাল ডিপার্টমেন্ট এবং এস বি আই’তেও নিযুক্তিপত্র পেয়েছেন ১৮ জন। আগরতলার শালবাগানস্থিত বি এস এফ’ র সদর কার্যালয়ে আজ সকালে রোজগার মেলার অনুষ্ঠানে তাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেয়া হয়। দেশের ৪৫ টি স্থানে আজ আগরতলায় এধরনের রোজগার মেলার মাধ্যমে ৭১ হাজার যুবক যুবতীকে নিয়োগ পত্র বন্টন করা হয়। দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি বোতাম টিপে এই রোজগার মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মন্ত্রী জীতেন্দ্র সিংও। আগরতলার অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বি এস এফ’ র ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ারের আই জি এ কে শর্মা। উপস্থিত ছিলেন সি আর পি এফ’ র আই জি দর্শনলাল গোলাসহ বি এস এফ, সি আই এস এফ, এস এস বি, আসাম রাইফেলস ইত্যাদি বাহিনীর আধিকারিকরা। ছিলেন নতুন নিয়োগ প্রাপ্তদের অভিভাবক ও আত্মীয় পরিজনরাও।

অনুষ্ঠানে এ কে শর্মা সহ আধিকারিকরা একে একে ৩১১ জন যুবক যুবতীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ কে শর্মা নিয়োগ পত্র গ্রহণ কারীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আত্মনির্ভর ভারত গঠনের স্বপ্ন পুরনে যুবকদের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৩১১ জন নিয়োগ পত্র প্রাপকের মধ্যে ছিলেন আগরতলার সুভাষ নগরের দুই যমজ বোনও। উভয়েই সি আই এস এফ- এ নিযুক্তিপত্র পেয়েছেন। তারা একসাথে চাকরি পেয়ে দারুণ খুশী বলে জানান। এদিকে নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে প্রত্যেকেই দারুণ খুশী বলে জানান। এধরণের মেলার মাধ্যমে বেকার যুবক যুবতীদের সরকারি চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় তারা ভারত সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানান ।About Us

পাহাড়ে

পাহাড়ের রাজনৈতিক অবস্থা এখন কোন দিকে?

পাহাড়ে একসময় রাজনৈতিক দল মানেই ছিল কমিউনিস্ট পার্টি বা জিএমপি। উপজাতি গনমুক্তি পরিষদের গর্ভগৃহ ছিল পাহাড়। তাদের ভোট ব্যাঙ্ক ছিল জনজাতিরা। উপজাতি যুব সমিতি বা পরে আইএনপিটি পাহাড়ে জিএমপির বিকল্প হতে পারে নি। উপজাতি যুব সমিতি ভেঙে তৈরি হয়েছিল আইএনপিটি। আইএনপিটি ও নিজেদের বিলুপ্ত করে মিশে গেল তিপ্রামথায়। এর পর ধীরে ধীরে পাহাড়ে নিজেদের ভীত শক্তিশালী করতে শুরু করে আইপিএফটি। চ্যালেন্জ ছুড়ে দেয় জিএমপিকে। একটা সময় আইপিএফটির দাপট আর বাড়বাড়ন্তে পাহাড়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো কোনঠাসা হয়ে পরে।তিপ্রাল্যান্ডের শ্লোগান শুনলেই আতংকে কাঁপতে থাকের পাহাড়বাসী। মানুষ অতিষ্ঠ হলেও ২০১৮ সালের ভোটে বিজেপির সাথে জোট করে পাহাড়ের ৮ টি আসনের দখল নেয় তারা। অন্যদিকে ১১টি জনজাতি সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী দিয়ে ১০ টিতেই জয়ী হয় বিজেপি।

এডিসি ভোটের আগে থেকেই পাহাড়ে একচ্ছত্র সাম্রাজ্য বিস্তার করতে শুরু করেছিল আইপিএফটি। পাহাড় জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। কিন্তু আচমকা তিপ্রামথার এন্ট্রি আর এডিসি জয়ের পর কোনঠাসা আইপিএফটি। এক সময় পাহাড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করা দল সাইনবোর্ডে পরিনত হয়েছে। দলের ৮ বিধায়ক থেকে এখন সবেধন নীলমনি শুক্লাচরন।একই অবস্থা জিএমপির। মুকুটহীন রাজা দশরথ, বিদ্যা, সুধ্বন্যাদের তৈরি করা বাগান খা খা করছে। উত্তরসুরিরা সেই বাগান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন। ভিলেজ কমিটির নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো ঘোষণা না হলেও পাহাড় দখলে নেমে পড়েছে জিএমপি। মথা পরিচালিত এডিসি প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে মাঠ গরম করতে শুরু করেছে জিএমপি নেতারা৷ কিন্তু প্রদ্যুতের প্রতি তিপ্রাসাদের আবেগ, মথার জনপ্রিয়তাকে কিভাবে জিএমপি নেতারা ট্যাগেল দেন সেটাই দেখার।
তিপ্রাসাদের ধারণা প্রদ্যুত তিপ্রাসার জন্য পৃথক রাজ্য তৈরি করে দিতে সক্ষম হবেন।নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন হলে জনসংখ্যার নিরিখে আরো দুর্বল হয়ে পড়বে জনজাতিরা। এবং রাজ্যে এন আর সি লাগু হলে বিদেশি বিতরণ করা সম্ভব হবে।

মূলত এই এজেন্ডা গুলিকে সামনে রেখেই পাহাড়ে কাজ করে সফলতা পেয়েছেন তিপ্রার সুপ্রিমো প্রদ্যুত কিশোর। এই জন্যই পাহাড়ে প্রদ্যুত ধরে রেখেছে তার জনপ্রিয়তা।এখনো প্রতিদিন প্রদ্যুত ভাঙ্গন ধরাছেন বিজেপি,আইপিএফটি ও সিপিআইএম শিবিরে। এই ধারাবাহিকতা রাখলে ২০২৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও আইপিএফটি, সিপিআইএম ও বিজেপিকে যে প্রচন্ড হ্যাপা পোহাতে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাহাড়ে তিপ্রা ব্যাতিত কোনো রাজনৈতিক দল মাথা তুলে যে দাঁড়াতে পারবে না,তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সড়ক নিরাপত্তা

সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের ১৫তম বৈঠকে, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে!

রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সতর্কতা ও জনসচেতনতা অবলম্বনের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব। সড়ক সুরক্ষার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যস্তরে জনসচেতনতা-মূলক বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সচিবালয়ে রাজ্য সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের ১৫তম বৈঠকে পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা বলেন। উল্লেখ্য, রাজ্য সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান হচ্ছেন পরিবহন মন্ত্রী। রাজ্য সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রয়েছেন ১১ জন।

বৈঠকে পরিবহন মন্ত্রী বলেন, রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এবং সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমিয়ে আনতে সরকার জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি জারি রেখেছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার, ইন্টারসেপ্টার ভেহিক্যাল ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্থ লোকেদের দ্রুত চিকিৎসায় এগিয়ে আসা সাহায্যার্থিদের ৫ হাজার টাকা গুড সামারিটান পুরস্কারের সংস্থান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের ২৫টি কলেজে সহসাই সড়ক সুরক্ষা, ভোক্তা সুরক্ষা, মাদক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কিত বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। পরিবহন, খাদ্য এবং স্বারাষ্ট্র দপ্তরের সমন্বয়ে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। বৈঠকে পূর্তদপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, পরিবহন দপ্তরের সচিব সি কে জমাতিয়া, ডিআইজি মনচক ইপ্পার, ট্রাফিক পুলিশের সুপার মনিক দাস, বিভিন্ন দপ্তরের অধিকারিকগণ সহ, পরিবহন দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে পরিবহন দপ্তরে অতিরিক্ত সচিব সুব্রত চৌধুরী সড়ক সুরক্ষা বিষয়ে দপ্তরের কাজকর্মের সাফল্য, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে গৃহীত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নতুন উদ্যোগ সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সড়ক সুরক্ষা কমিটির নির্দেশিকায় প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ১০ শতাংশ কমানোর উল্লেখ রয়েছে। সেই নির্দেশ মোতাবেক সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে রাজ্যে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ১৩ শতাংশ কমেছে। এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জেলাস্তরে, জেলা সড়ক সুরক্ষা কমিটির সভা, প্রতি মাসে দু-বার করে আয়োজন করা, রাজ্যে একটি ডেডিকেটেড রোড সেফটি উইং গঠন ইত্যাদি নির্দেশিকাও রয়েছে। তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসকে সড়ক সুরক্ষা মাস হিসাবে পালন করা হবে। তিনি আরও বলেন, পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে ত্রিপুরা ভেহিক্যাল স্ক্র্যাপিং পলিসি-২০২৪ সুচনা করা হয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন ও সম্যক ধারণা অর্জনের জন্য বিদ্যালয়স্তর  থেকে বিশ্ববিদ্যালয়স্তর পর্যন্ত অ্যান্টি-ড্রাগ আডিকশান কমিটি এবং সড়ক সুরক্ষা কমিটি গঠনের নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রযুক্তিগত মনিটরিং-এর জন্য eDAR পরিসেবাটি শীঘ্রই চালু করার বিষয় সভায় প্রাধান্য পায়। বৈঠকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পথচারীদের জন্য ফুটপাথের সু-ব্যবস্থা, রাজ্য এবং জেলার দুর্ঘটনা প্রবন এলাকা ও ব্ল‍্যাকস্পটগুলিতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া; ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়।

২০২৫ সালের

২০২৫ সালের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করল ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ!

ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। আজ ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদের সভাপতি ড. ধনঞ্জয় গণ চৌধুরী একথা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পর্ষদের সচিব দুলাল দে। সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা আলিম পরীক্ষা। মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা আলিম পরীক্ষা সমাপ্ত হবে ১৮ মার্চ; এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে শুরু হবে উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য বিভাগ এবং মাদ্রাসা ফাজিল আর্টস ও থিওলজি পরীক্ষা। উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা সমাপ্ত হবে ১৭ মার্চ। মাধ্যমিক, মাদ্রাসা আলিম, উচ্চমাধ্যমিক, মাদ্রাসা ফাজিল আর্টস ও থিওলজি পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ শুরু হবে ১০ জানুয়ারি থেকে। ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ পর্যন্ত ফর্ম ফিলআপের কাজ চলবে।