সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হবে ত্রিপুরায়?
সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য প্রশাসনিক স্তরে চলছে আলোচনা। রাজ্য সরকার চাইছে বেসরকারি সংস্থাগুলো রাজ্যে এসে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলুক। রাজ্য শিল্প কল-কারখানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। এমনটাই বলছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি মুম্বাইয়ের বাণিজ্য কনক্লেভে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বিনিয়োগকারীদের রাজ্যে আসার আমন্ত্রণ করেছেন। রাজ্য সরকার সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রকে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বর্হিরাজ্যের সংস্থা রাজ্যে মেডিকেল কলেজ স্থাপনে উৎসাহ দেখিয়েছে। অনেক সংস্থা মেডিকেল কলেজ স্থাপন করেছে।
বর্হিরাজ্যের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই রাজ্যে হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বিভিন্ন কর্মসূচিতে গিয়ে জানিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো মনিপুরের সিজা হাসপাতাল। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই এই সংস্থাকে জমিয়ে দেওয়ার জন্য চিন্তা ভাবনা করছে। এবার প্রখ্যাত হাসপাতাল উডল্যান্ড রাজ্যে হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। বুধবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে মহাকরণে বৈঠক হয়। বৈঠকে রাজ্য সরকারের পদস্থ আধিকারিকরা ছিলেন। রাজ্যে কি সুবিধা রয়েছে সে সম্পর্কিত বিষয়ে তাদের সম্ম্যক ধারণা দেওয়া হয়েছে। উডল্যান্ডের কর্মকর্তারাই বুধবার এ খবর জানিয়েছেন। বেসরকারি সংস্থা কোন রাজ্যে এলে সেই রাজ্যের উন্নয়ন সম্ভব। রাজ্য সরকার চাইছে রাজ্যের কোন মানুষকে যাতে চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে না হয়। তার জন্য বহিরাজ্যের প্রতিষ্ঠিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংস্থাকে রাজ্যে হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার উডল্যান্ডের সাথে প্রাথমিকভাবে কথাবার্তা হয়েছে বলে সংস্থার এমডি জানিয়েছেন। আগামী দিনে আরও বৈঠক হবে। তবে তার আগে শহরের কোন ক্লিনিকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এ রাজ্যে এনে চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করতে চায় উডল্যান্ড৷ তার মানে বাজার যাচাই করে রাজ্যে বড় পদক্ষেপ নেবে উডলেন্ড। প্রথম ধাপে টেলি মেডিসিন পরিষেবা ও শুরু করতে আগ্রহী তারা। পরবর্তী ধাপে জমি অধিগ্রহণ করে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবে বলে উডলেন্ডের কর্তৃপক্ষরা জানিয়েছেন। এর জন্য রাজ্য সরকারের সাথে প্রয়োজনীয় আরো আলাপ আলোচনা ও হবে বলে তারা জানান। রাজ্যে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বড়ই অভাব। আর সেই অভাবটা পূরণ করতে চাইছে উডলেন্ড। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও সর্বতোভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে উডল্যান্ডের এমডি জানিয়েছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে উডল্যান্ডস হসপিটালের এমডি জানান, বিশ্ব মানের উন্নত প্রযুক্তি ও আধুনিক পরিষেবা সম্পন্ন চিকিৎসা পরিষেবায় অনন্য নজির গড়েছে উডল্যান্ডস হাসপাতাল। আর পি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপের অঙ্গ এই হাসপাতাল শুধু মাত্র কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গেই নয় সমগ্র পূর্ব ভারতের রোগীদের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে এক উন্নত নাম। এই হাসপাতালকে আরো আধুনিক করে তোলা হচ্ছে ও ১৫০ টি শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। ২০২৬ সালের মধ্যে কলকাতায় মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং ক্যান্সার কেয়ার সেন্টার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে এই হাসপাতাল। উন্নত ও আধুনিক পরিষেবায় উডল্যান্ড হাসপাতাল ইতিমধ্যেই এন এ বি এইচ, এন এ বি এল, আই এস ও ২৭০০০ এর অনুমোদন ও স্বীকৃতি প্রাপ্ত। পূর্ব ভারতের প্রথম ক্যাথ ল্যাব এবং বাইপাস সার্জারির ক্ষেত্রে অনন্য সফলতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি সফল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। রোবোটিক সার্জারীর ক্ষেত্রেও রয়েছে অনন্য সফলতা। রয়েছে ২৫৬ স্লাইস ৭৬৮ রি কনস্ট্রাকশন ডুয়েল এনার্জি মডেল সমাটম ড্রাইভ সি টি সিমেন্স মডেল, মেগনেটম ভেরিও ৩ টেসলা এম আর আই মেশিন যা কার্ডিয়াক এম আর এপ্লিকেশন এ সুফলদায়ক।
রয়েছে অত্যাধুনিক ওটি ও ল্যাব এর পরিষেবা। উডল্যান্ডস হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা সি ই ও রূপক বড়ুয়া জানান সম্প্রতি ত্রিপুরার প্রত্যন্ত গ্রামের এক রোগী খুব জটিল পর্যায়ে ছিল। অন্য কোনো হাসপাতালে অসফল অস্ত্রোপচারের পর তাকে উডল্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ইন্টারভ্যানসোনাল রেডিওলজি প্রণালীতে চিকিৎসার পর রোগী অনেক সুস্থ আছেন বলে তিনি জানান। এভাবে শুধু কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ নয় পূর্ব ভারত ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতেও পরিষেবায় ছড়িয়ে পড়েছে উডল্যান্ডস হাসপাতালের এর নাম। এবার এই হাসপাতাল রাজ্যের মানুষের জন্য পরিসেবা প্রদান করার চিন্তা ভাবনা করছে বলে তিনি জানিয়েছেন। উডল্যন্ডের পরিচালন কমিটির সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তারা জানান।