সীমান্ত

সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যাবস্থায় পুলিশের ডি.জি!

সীমান্ত নিরাপত্তায় পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক!

সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক অমিতাভ রঞ্জনের পৌরোহিত্যে বৃহস্পতিবার পুলিশ সদরদপ্তরে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মহানির্দেশক ক্রাইম অনুরাগ রাজ্যের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অপরাধ এবং পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে রাজ্যের আট জেলার পুলিশ সুপারগন নিজ নিজ জেলার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। বৈঠকে ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের উপর বিশেষ নজরদারি করার জন্য গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বেআইনি অনুপ্রবেশ এবং ক্রস বর্ডার ক্রাইম প্রতিরোধে পুলিশ কে সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেয়া হয়।

দুটি দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দফায় আট জেলার পুলিশ সুপারদের নিয়ে বৈঠক করেন পুলিশের মহানির্দেশক। দ্বিতীয় দফায় টিএসআর এর কমান্ডেন্ট এবং ডেপুটি কমান্ডেন্টদের নিয়ে বৈঠকে বসেন তিনি। আট জেলার পুলিশ সুপার দের কাছ থেকে জেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে খোঁজখবর করেন পুলিশের মহানির্দেশক। কোথায় দুর্বলতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার নির্দেশেই আট জেলার পুলিশ সুপার এবং টিএসআর এর কমান্ডেন্টদের নিয়ে বৈঠকে বসেন পুলিশের মহানির্দেশক। রাজ্যের সীমান্ত এলাকাগুলোর নিরাপত্তা এবং নজরদারি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তার কারণ হলো সীমান্ত এলাকাগুলো অতি স্পর্শকাতর জোন হিসেবে পরিচিত।রাজ্যে বৈরীরা মাথাচাড়া দিচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর। পাশাপাশি পাকিস্তানের আইএসআই বাহিনী এবং বাংলাদেশের মদত রয়েছে। এই অবস্থায় সীমান্ত এলাকাগুলোতে বিএসএফের নজরদারির পাশাপাশি পুলিশ ও টিএসআর বাহিনীকে সক্রিয় করতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তর নড়েচড়ে বসেছে। হাসিনার বিদায়ের পর সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশজুড়ে মৌলবাদের দাপট ভয়াবহ আকার নিয়েছে। আইএসআই-এর মদতে সেখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বহু জঙ্গি সংগঠন। তারই অন্যতম আনসারুল্লা বাংলা টিম। এই টিমের জঙ্গিরা রাজ্যকে করিডোর করে দেশের অন্য রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে স্বরাষ্ট্র দপ্তর। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মাটিতে জেহাদের বিষ ছড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে আল কায়দার ছায়া সংগঠন। যদিও তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই জেহাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে ‘অপারেশন প্রঘাত’ শুরু করেছে পুলিশ। এই অভিযানে এখনও পর্যন্ত আসামে ১১ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে আগে থেকেই সতর্ক রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তর। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, গত মাসে বাংলা, কেরল ও অসমে অভিযান চালিয়ে আনসারুল্লা বাংলা টিমের ৮ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে অসম পুলিশের এসটিএফ। বড়দিনের আগে পাকড়াও করা হয় এই জঙ্গি সংগঠনের ২ সদস্যকে, যাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক ও বিস্ফোরক তৈরির সামগ্রী। অসমের ধুবড়ির বান্ধবপাড়া থেকে শাহিনুর ইসলাম নামে আরও এক জঙ্গি।প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, মুম্বই হামলার ধাঁচে দেশের নানা প্রান্তে নাশকতার ছক ছিল এই জঙ্গিদের। এমনকী বাংলায় গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করেছিল আনসারুল্লা বাংলা টিম। চলছিল তার প্রশিক্ষণ। যদিও ভয়াবহ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই আনসারুল্লা শিকড় উপড়ে ফেলতে কোমর বেঁধে নামলেন তদন্তকারীরা।

বাংলাদেশি জঙ্গিদের টার্গেট এখন উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো! একাধিক জায়গায় সক্রিয় হয়েছে ৪০টিরও বেশি স্লিপার সেল। পুরোদমে কাজ করছে তাদের নেটওয়ার্ক। আসরে ধুলিয়ান ও জলঙ্গী মডিউলও। সীমান্ত পেরিয়ে নাশকতার বিজ বপন করছে বাংলাদেশের জঙ্গিনেতারা। ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরির কাজ চলছে এই সমস্ত স্লিপার সেলে। কাঁচামাল আসছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। এমনকী নিত্য নতুন বিস্ফোরক তৈরির জন্য রীতিমতো গবেষণাও চলছে।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সব রাজ্যগুলোকে সতর্ক করেছে৷ এ অবস্থায় রাজ্য কতটা প্রস্তুত, জেলাগুলোর নিরাপত্তা কতটা আটেসাটো তা নিয়ে মুলত বৈঠক। রুটিন বৈঠক হলেও পুলিশের সাফল্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর। আগামী দিনের পরিকল্পনা স্থির করা হয়েছে।