সীমান্তে

সীমান্তে ‘রঙিন ঘোড়া’র দাপট!

সীমান্তে মাদক পাচারে মহিলা ব্রিগেড!

রাজ্যে বাড়ছে মাদক পাচার। ত্রিপুরার সীমান্তেকে করিডোর বানিয়ে বহিরাজ্যে যাচ্ছে শুকনো গাঁজা, আর বাইরে থেকে আসছে গন্ধহীন মাদক। সীমান্তে বিএসএফের কড়া নজরদারির পরও কীভাবে মাদক পাচার বাড়ছে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, রাতের অন্ধকারে সীমান্তের চোরাপথে ‘রঙিন ঘোড়া’ পাচার হচ্ছে। তবে এটি কোনও জীবন্ত ঘোড়া নয়, বরং ইয়াবা ট্যাবলেটের সাংকেতিক নাম। এই মাদকের কোটি কোটি টাকার কারবার চলছে সীমান্ত জুড়ে, যেখানে তৈরি হয়েছে মহিলা পাচারকারীদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক।

সাম্প্রতিক এক অভিযানে আমবাসার বেতবাগান নাকা পয়েন্টে একটি ১২ চাকার লরির তেলের ট্যাঙ্ক থেকে ৯ লক্ষ ২৪ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃত মাদকের বাজারমূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। গ্রেফতার করা হয়েছে আসামের দুই যুবককে। গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, ইয়াবা দেখতে সাধারণ ওষুধের মতোই— গোলাপি, হলুদ ও সবুজ রঙের ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়। এই মাদক মূলত থাইল্যান্ড ও মায়ানমার থেকে আসছে এবং ত্রিপুরার সীমান্ত ব্যবহার করে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। ছোট আকারের হওয়ায় সহজেই ব্যাগ বা গোপন জায়গায় লুকিয়ে বহন করা সম্ভব।

ইয়াবাকে সাধারণত ওষুধের মতো খাওয়া হয় না। এটি হেরোইনের মতো ব্যবহার করা হয়— অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে গরম করে, ধোঁয়া শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। ফলে খুব দ্রুত নেশার প্রভাব পড়ে। কেউ কেউ আবার জল মিশিয়ে পান করে। তরুণ প্রজন্মের ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও এই মাদকের শিকার হচ্ছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভারতে ইয়াবার ব্যবহার তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও বাংলাদেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে বিএসএফ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মাদক চক্র রুখতে সক্রিয় হয়েছে। কড়া নজরদারির ফলে পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক ভাঙার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনও সীমান্তের এজেন্টদের মাধ্যমে এই চোরাকারবার চলছেই। মাদক পাচার রুখতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে হবে, এমনটাই মত সমাজবিদদের।