বিএসএফের গুলিতে সীমান্তে নিহত বাংলাদেশী পাচারকারী!
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আবারও রক্ত ঝরল। ত্রিপুরার কলমচৌড়া থানার অন্তর্গত পুটিয়া সীমান্তের ৬ নম্বর গেট এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে এক বাংলাদেশি পাচারকারী নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম আলামিন, তিনি বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার সালদা নদী বিওপি (বর্ডার আউট পোস্ট) অধীনস্থ পুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
ঘটনা!
সূত্রের খবর, সীমান্তে পাচারকারীদের একটি দল চিনি পাচারের চেষ্টা করছিল। বিএসএফ সদস্যরা তাদের বাধা দিলে বাংলাদেশ দিক থেকে পাচারকারীরা পাথর নিক্ষেপ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে বিএসএফ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। এতে আলামিন গুরুতর আহত হন। বিএসএফ সদস্যরা আহত পাচারকারীকে উদ্ধার করে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উত্তেজনা!
এই ঘটনার পরপরই বিশালগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তে পাচারকারীরা নিয়মিত অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় এবং আইন অমান্য করে অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। বিএসএফের দাবি, পাচারকারীরা সীমান্ত সুরক্ষাকে উপেক্ষা করেই ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। নিহতের মৃতদেহ বর্তমানে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত এ ধরনের ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানায় এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্যোগ!
সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে ভারত-বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং বিএসএফের মধ্যে আজ একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে। ওই বৈঠকের মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির মরদেহ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সীমান্ত এলাকায় এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। অবৈধ পাচার রোধে বিএসএফ ও বিজিবি উভয় পক্ষকেই আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।
সম্পর্ক!
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুদীর্ঘকাল ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকলেও, সীমান্তে মাঝে মাঝেই এই ধরনের সংঘর্ষ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পাচার, অনুপ্রবেশ, অননুমোদিত সীমান্ত অতিক্রম ইত্যাদি কারণে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। যদিও কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চালানো হয়, তবু সীমান্তে রক্তপাত রোধে কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া কী হয় এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কী পদক্ষেপ নেয়, তা এখন দেখার বিষয়।