সিপিআইএম এবার কেরল লাইনেই হাঁটতে চলেছে!
সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রয়াণের পরে আপাতত সিপিআইএম পলিটব্যুরোর কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে প্রকাশ কারাট। সীতারাম ইয়েচুরি পার্টির সম্পাদক থাকার সময়ে কংগ্রেস সম্পর্কে যে ‘নরম’ মনোভাব নিতেন, তার প্রতিফলন থাকত সিপিআইএমের দলীয় দলিলেও। কিন্তু সেই অবস্থার পরিবর্তন হতে চলেছে। এখন কারাট যুগ চলছে পার্টিতে। আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিপিআইএমের পার্টি কংগ্রেস। সেখানে পার্টির রাজনৈতিক রণকৌশলগত খসড়ায় থাকতে চলেছে সেই কারাট দর্শনই। সূত্রের খবর, কংগ্রেস সম্পর্কে ‘প্রয়োজনীয়’ সমালোচনা রাখা হবে রাজনৈতিক রণকৌশলগত খসড়ায়। যা আগামী ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ্যে আনবে সিপিএম।
সূত্রের খবর, অন্য দলের সঙ্গে জোট, আসন সমঝোতা নিয়ে পরে ভাবা যাবে। তার মানে আগামী দিনে কংগ্রেসের সাথে সিপিআইএমের সম্পর্ক থাকবে কিনা তা পার্টি কংগ্রেসেই কারাট লবি ঠিক করবে। প্রশ্ন উঠছে, কেরল লাইনে পার্টি চললে, ইন্ডিয়া জোটের কী হবে? সেই প্রশ্নের উত্তর আগামী দিনে পাওয়া যাবে বলে পার্টি সূত্রে খবর। ২-৬ এপ্রিল মাদুরাইয়ে অনুষ্ঠেয় পার্টি কংগ্রেসে খসড়া রাখা হবে। পার্টির সমস্ত স্তরে আলোচনার জন্য ১ ফেব্রুয়ারি এই খসড়া প্রকাশ করা হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি ফের ২২ ও ২৩ মার্চ খসড়া চূড়ান্ত করার জন্য বৈঠকে বসবে। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, কংগ্রেস-সহ অন্যান্য অবিজেপি দল যদি ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে ‘নরম’ মনোভাব দেখায়, তারও বিরোধিতা করবে সিপিএম। তিন দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বাংলার একাধিক নেতা সে রাজ্যের বাস্তবতার প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্যের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে কংগ্রেসের সম্পর্কে মূল্যায়ন থাকবে সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গিতেই খসড়াতেও সেই ইঙ্গিতই থাকবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। বাংলার নেতারা যেমন কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে চলার কথা বলেছেন, তেমনি কেরলের নেতারা তাদের রাজ্যের প্রেক্ষাপটে কংগ্রেস বিরোধিতার কথা বলেছেন। প্রায় এক দশক হতে চলল বিজেপি এবং কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্বের লাইন থেকে সরে এসেছে সিপিএম। দল মৌলিক ভাবে সেই লাইন বদল করছে না। কংগ্রেস এবং বিজেপিকে এক বন্ধনীতেও ফেলছে না। তবে আগের মতো “নরম”ও থাকছে না। উল্লেখ্য, আগামী বছর বাংলার সঙ্গে কেরলেও বিধানসভা ভোট। দুই রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে দু”রকম সম্পর্ক সিপিএমের। এটাই সিপিএমের দ্বিচারিতা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।