সিপিআইএমের নতুন রাজনীতি!

সিপিআইএমের নতুন রাজনীতি!

বিজেপির দিকে ঝুকছে সিপিআইএমের কেরল লভী!

কেরালার বাম ফ্রন্টের মধ্যে সম্প্রতি উঠে এসেছে সিপিআইএমের নতুন রাজনৈতিক বার্তা। দলের এই বার্তায় বিজেপিকে সরাসরি ‘ফ্যাসিবাদী’ দলের তালিকায় না তুলে, বরং নরেন্দ্র মোদির সরকারের কাজকর্মের তুলনায় কিছু নব্য-ফ্যাসিবাদী বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। এ বার্তার প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বামপন্থী সংগঠনের মধ্যে কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে, কেমন হবে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সমঝোতা ও কীভাবে দলীয় কৌশলে এই পরিবর্তন প্রভাব ফেলবে।

রাজনৈতিক প্রস্তাব!

সিপিআইএম সম্প্রতি তার দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি নোট প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে—”এখনই বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদিকে ফ্যাসিবাদী বলা যাবে না।” এই বক্তব্যটি দলের প্রাক-পার্টি কংগ্রেসের আগে প্রকাশিত হওয়ায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য একটি নতুন কৌশল। দলের এই বার্তায় তাদের পক্ষপাতিত্ব ও আদর্শগত মুখপত্রে সাম্প্রতিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতে পারে।

প্রতিক্রিয়া!

দলের নতুন অবস্থান নিয়ে বিশেষ করে সিপিআই ও সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের সাথে তাদের মূল শরিকের বিরোধিতা দেখা দিয়েছে। কেরালার বাম ফ্রন্টের সাধারণ নেতৃবৃন্দ এবং বিশেষ করে কংগ্রেস ও অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ দল গুলি, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। একদিকে যখন সিপিআইএম সমালোচকরা মনে করছেন যে, একদিকে দলের এই নতুন নীতি বিজেপির থেকে সরাসরি সমর্থন পাওয়ার জন্য, অপরদিকে স্থানীয় পর্যায়ে বিজেপি ও সিপিআইএমের গোপন সম্পর্কের কথা সামনে এসেছে।

রাজনৈতিক ইতিহাস!

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কেরালায় বিজেপি ও বাম দলগুলোর মধ্যে জটিল সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে। ১৯৯৬ সালে অটল বিহারি বাজপেয়ীর সংক্ষিপ্ত মেয়াদ এবং পরবর্তীতে ১৯৯৮-২০০৪ সাল পর্যন্ত তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়কাল, রাজনৈতিক সমঝোতা ও বিরোধের নানা দিক তুলে ধরেছে। এসব প্রেক্ষাপটে সিপিআইএমের বর্তমান বার্তা, বিজেপিকে ‘সাম্প্রদায়িক’ বা ‘ফ্যাসিবাদী’ হিসেবে চিহ্নিত না করে, দলের রাজনৈতিক কৌশলের একটি নতুন দিক নির্দেশ করে।

ত্রিপুরার প্রেক্ষাপট!

ত্রিপুরার মতো রাজ্যে, যেখানে রাজনৈতিক অবস্থান ও সমর্থনের সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এই ধরনের বার্তা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন আলো ফেলতে পারে। বিশেষ করে, যেখানে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সাথে বিজেপির বিরোধিতার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে সিপিআইএমের এই নীতি পরিবর্তন স্থানীয় রাজনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা সমঝোতার সম্ভাবনা উভয়ই সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী, যদি এ পরিবর্তিত রণনীতি দলীয় কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় ও সুসংহত কৌশলের সঙ্গে বাস্তবায়িত হয়, তবে তা ২০২৬ সালের নির্বাচনে নতুন সমঝোতার সূচনা করতে পারে।

শেষ কথা!

সিপিআইএমের এই নতুন বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছে, দলের রাজনৈতিক রণনীতি ও কৌশলে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত। বিজেপি ও সিপিআইএমের সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ে কেরালার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য রাজ্যে কী ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতা ও প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে, তা সময়ই বলে দেবে। ত্রিপুরার সাধারণ জনগণ ও রাজনীতিবিদরা এই পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিবেশের উপর নিবিড় দৃষ্টি রাখছেন, যা ভবিষ্যতে সমগ্র দেশের রাজনৈতিক মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।