ভারত

ভারত এবং আফগানিস্তান সরকারের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক!

ভারত এর বিদেশ নীতি আরও একধাপ এগিয়ে গেল!

ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি এবং আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের কার্যনির্বাহী বিদেশমন্ত্রী মাওলাভি আমির খান মুত্তাকির মধ্যে সম্প্রতি দুবাইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকটি তালিবান সরকারের সঙ্গে ভারতের প্রথম উচ্চপর্যায়ের সরাসরি সংযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

বৈঠকের প্রেক্ষাপট:

২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবান পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভারত সরকার তাদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। তবে নয়াদিল্লি কাবুলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখেছে, বিশেষ করে মানবিক সহায়তা এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে। সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবান সরকারের সীমান্ত সংঘাত এবং আফগানিস্তানে পাকিস্তানি বায়ুসেনার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই বৈঠকটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচি:

চাবাহার বন্দর: ইরানের চাবাহার বন্দর ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যা পাকিস্তানকে বাইপাস করে ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের বাণিজ্যিক সংযোগ বাড়াতে সহায়ক হবে।

নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগ: ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রতি তালিবান সরকার সংবেদনশীলতা প্রকাশ করেছে এবং আফগানিস্তানের মাটি থেকে ভারতবিরোধী কার্যকলাপ না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

মানবিক সহায়তা: ভারত আফগানিস্তানে ৫০,০০০ মেট্রিক টন গম, ৩০০ টন ওষুধ, ২৭ টন ভূমিকম্প ত্রাণ, ৪০,০০০ লিটার কীটনাশক, ১০০ মিলিয়ন পোলিও ডোজ, ১.৫ মিলিয়ন কোভিড টিকার ডোজ এবং ১.২ টন স্যানিটারি কিট সরবরাহ করেছে।

ক্রিকেট সহযোগিতা: দুই দেশের মধ্যে ক্রীড়া, বিশেষ করে ক্রিকেট ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখনও তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে ভারতের সঙ্গে এই বৈঠক আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ভারত এবং আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। যদিও ভারত সরকার এখনও তালিবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, তবুও এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের সংলাপ ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে সহায়ক হবে।