ভারত

ভারতীয় স্পিনারদের কারিশমায় ইংল্যান্ড কোণঠাসা!

ভারত বনাম ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের দাপুটে জয়!

ভারত বনাম ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় চেন্নাইয়ের এমএ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে। রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারতীয় দল একটি অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে। এই জয়ের মাধ্যমে ভারত ২-০ ব্যবধানে অগ্রগামী হয়েছে এবং সিরিজটি নিশ্চিত করেছে। ভারতীয় স্পিনারদের জাদুকরি পারফরম্যান্স এবং ব্যাটসম্যানদের স্থির মেজাজ এই জয়ের মূল চাবিকাঠি ছিল।

ইংল্যান্ড টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ ভারতীয় স্পিনারদের সামনে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়। মাত্র ৪৫ ওভারেই ২১৫ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। জবাবে, ভারত ৩৯.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৬ রান তুলে সহজেই ম্যাচটি জিতে নেয়। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং শুরুটা মোটামুটি ভালো হলেও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা বিশেষ কিছু করতে পারেননি। জেসন রয় এবং ডেভিড মালানের মধ্যে ওপেনিং জুটিতে ৭২ রান ওঠে। তবে জেসন রয় (৪৮) এবং মালান (৩৭) আউট হওয়ার পর থেকেই ইংল্যান্ডের ইনিংসের পতন শুরু হয়। ভারতীয় স্পিনার কুলদীপ যাদব এবং রবীন্দ্র জাদেজা মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের একের পর এক ফিরিয়ে দেন। জস বাটলার (২১), মঈন আলি (১৫), এবং স্যাম কারান (১২) বড় রান করতে ব্যর্থ হন। শেষের দিকে ক্রিস ওকস ৩০ রানের একটি ইনিংস খেলেন, যা দলের সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছাতে সামান্য সহায়তা করে। ভারতীয় বোলাররা দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন। বিশেষ করে স্পিনাররা ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

কুলদীপ যাদব: ১০ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ৪টি উইকেট তুলে নেন। তিনি নিজের লাইন এবং লেংথে অসাধারণ নিখুঁত ছিলেন।
রবীন্দ্র জাদেজা: ১০ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। তার ধারালো টার্ন এবং ফ্লাইট ডেলিভারিতে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা বিভ্রান্ত হন।
মোহাম্মদ শামি: নতুন বল হাতে শামি ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারকে চাপে রাখতে সাহায্য করেন। তিনি ৮ ওভারে ২ উইকেট তুলে নেন।

ভারতের ব্যাটিংয়ে শুরুটা কিছুটা নড়বড়ে ছিল। শিখর ধাওয়ান মাত্র ৫ রানে আউট হন। রোহিত শর্মা (৩৪) এবং বিরাট কোহলি (৫৬) দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস সামলান। কোহলির অর্ধশতরান দলের জয়ের ভিত গড়ে দেয়।এরপর শ্রেয়স আইয়ার এবং লোকেশ রাহুলের (৪২*) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে। শেষদিকে হার্দিক পান্ডিয়া মাত্র ১৭ বলে ৩৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।

স্পিনারদের প্রভাব: চেন্নাইয়ের স্লো এবং স্পিন-সহায়ক পিচে কুলদীপ এবং জাদেজার বোলিং ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছে।
ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা: ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়, যা তাদের স্কোর বোর্ডে বড় রান তুলতে দেয়নি।
ভারতের ব্যাটিং গভীরতা: রোহিত-কোহলির পর আইয়ার এবং পান্ডিয়া দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন, যা দলের ব্যাটিং গভীরতার ইঙ্গিত দেয়।

এই ম্যাচে কুলদীপ যাদবের ৪ উইকেট তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার এনে দেয়। ম্যাচের পর কুলদীপ বলেন, “পিচ আমাকে সাহায্য করেছে। আমি লাইন এবং লেংথ ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। দলের জন্য অবদান রাখতে পেরে আমি খুশি।” ভারতীয় দল এই ম্যাচে প্রতিটি বিভাগে আধিপত্য দেখিয়েছে। তাদের বোলিং, ফিল্ডিং এবং ব্যাটিং একসঙ্গে কাজ করেছে। বিশেষ করে স্পিন বিভাগে ভারতের শক্তি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। ইংল্যান্ডের জন্য এই ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তাদের ব্যাটিং অর্ডার আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং ভারতীয় স্পিনারদের মোকাবিলার কৌশল খুঁজতে হবে।

ভারতের এই জয় শুধু সিরিজ জয়ের বিষয় নয়, এটি দলের সামগ্রিক শক্তি এবং ভারসাম্যের প্রতিফলন। পরবর্তী ম্যাচে ইংল্যান্ড যদি ঘুরে দাঁড়াতে চায়, তবে তাদের ব্যাটিং এবং বোলিং উভয় ক্ষেত্রেই উন্নতি করতে হবে। অন্যদিকে, ভারত সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও জয় তুলে নিয়ে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে।