শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে বাংলাদেশের জনগণ রাস্তায়!
বাংলাদেশে বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। দেশের জনগণ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে, তাদের একটাই দাবি—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক সঙ্কট নয়, বরং দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতার জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ষড়যন্ত্রের শিকার গণতান্ত্রিক সরকার!
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্ব রাজনীতির নানা চক্রান্তের অংশ হিসেবে, একটি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক চক্র গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করে। বাংলাদেশে বহু বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলেও, এই ঘটনার মাধ্যমে তা এক নতুন রূপ নেয়। নিরীহ ছাত্র ও যুবকদের ভুল বুঝিয়ে ব্যবহার করা হয় এই ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার হিসেবে। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় উগ্রবাদীরা তরুণদের বিভ্রান্ত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঐদেশের এক শ্রেনীর বুদ্ধিজীবীদের মতে, শেখ হাসিনার অনুপস্থিতির পর দেশে এক অভূতপূর্ব অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে, নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন দেশের নাগরিকরা। চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসবাদসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে বহুগুণে। বিশেষ করে যারা বর্তমানে সরকার পরিচালনা করছেন, তাদের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠছে।
অনুশোচনা?
দেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠী যারা আগে শেখ হাসিনার বিরোধিতা করেছিল, তারাই আজ নিজেদের ভুল বুঝতে পারছে। একসময় যারা তার কঠোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করত, তারা এখন বলছে, “দেশ চালাতে গেলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হয়, যা হয়তো কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের ভালো লাগেনি।” বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনার শাসনামলে যে স্বস্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে ছিলেন, তা আজ চরমভাবে অনুপস্থিত। বিশেষ করে নারীরা নিজেদের আগের চেয়ে অনেক বেশি অনিরাপদ মনে করছেন। যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এই আতঙ্কেই দিন কাটাচ্ছেন দেশের সাধারণ নাগরিকরা।
নতুন ষড়যন্ত্র!
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ভাষার আধিপত্য প্রতিষ্ঠার নামে বাংলা ভাষার ঐতিহ্যকে উপেক্ষা করছে। অথচ এই দেশ তৈরি হয়েছিল বাংলা ভাষার দাবির ভিত্তিতে। তাহলে যদি বাংলা ভাষার গুরুত্ব হারিয়ে যায়, তবে দেশটির অস্তিত্বই আর অর্থবহ থাকবে না—এমনটাই মনে করছে দেশের জনগণ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সরকার শুধু ভাষাগত দিক থেকে নয়, আদর্শিকভাবেও একটি ভিন্ন পথ অনুসরণ করছে, যা বাংলাদেশকে তার মূল চেতনাবোধ থেকে সরিয়ে দিচ্ছে।
পুনরায় পাকিস্তান?
বয়স্ক নাগরিকরা এখন আলোচনা করছেন, কিভাবে এক সময় ভারত থেকে বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান তৈরি হয়েছিল এবং সেই পাকিস্তানেরই একটি অংশ ছিল আজকের বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব বাংলা স্বাধীন হলেও, বর্তমানে কিছু মহল দেশটিকে আবার পাকিস্তানের মতো করতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি দুষ্টচক্র দেশের অভ্যন্তরে নানা ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। একদিকে তারা ভারত-বিরোধী স্লোগান তুলছে, অন্যদিকে বাংলাদেশকে পুনরায় পূর্ব বাংলা করার চেষ্টা করছে। ভারতের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে তারা দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
কূটনৈতিক মহল!
এই রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়, ভারতের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শেখ হাসিনার অনুগতরা মনে করেন, ভারত শেখ হাসিনার সমর্থন সমর্থনে দাঁড়িয়েছে এবং তার দেশে ফেরার পথ সুগম করতে কাজ করছে। এদিকে, কিছুদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যমের মুখে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে আসে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি, বরং তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, “বাংলাদেশ প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।”
সূক্ষ দৃষ্টিঃ
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর ভারত গভীর নজর রাখছে এবং যে কোনো চক্রান্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। বিশেষ করে, যারা ত্রিপুরা, মনিপুর ও আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মাদক চোরাচালান ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের ওপর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
শেষ কথাঃ
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে, তা নির্ভর করছে আসন্ন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোর উপর। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে জনগণের এই আন্দোলন কতদূর যাবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটুকু স্পষ্ট—বাংলাদেশের জনগণ আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মতো সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে তারা দেশকে অরাজকতার কবল থেকে রক্ষা করতে চায়। বাংলাদেশ কি আবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফিরে আসবে, নাকি এই অরাজকতা আরো গভীর সংকটের দিকে নিয়ে যাবে? দেশবাসী তাকিয়ে আছে ভবিষ্যতের দিকে।