বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল ভারত!

বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল ভারত!

ভারত-বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মহারণে ছয় উইকেটে জয় ভারতের!

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর গ্রুপ ‘এ’ ম্যাচে ভারত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশকে ছয় উইকেটে পরাজিত করেছে। শুভমান গিলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ শামির বিধ্বংসী বোলিংয়ের সুবাদে ভারত অনায়াসেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়

বাংলাদেশের হুংকার!

বাংলাদেশ টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুটা মোটেও সুখকর ছিল না, কারণ ভারতের বোলিং আক্রমণের সামনে প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। তবে মিডল অর্ডারে তৌহিদ হৃদয় একাই প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তার অনবদ্য ১০০ রানের ইনিংস দলকে সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মাত্র ১৭ রান করে আউট হন, যা দলকে চাপে ফেলে দেয়। শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদের ছোট কিন্তু কার্যকরী ইনিংসের ফলে বাংলাদেশ ৪৯.৩ ওভারে ২২৯ রান করতে সক্ষম হয়। ভারতের হয়ে মোহাম্মদ শামি ৫৩ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট শিকার করেন, যা বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইনআপকে কাঁপিয়ে দেয়।

ভারতীয় জবাব!

২২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভারতের ওপেনাররা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। তবে রোহিত শর্মা মাত্র ২৫ রানে আউট হলে ভারত কিছুটা চাপে পড়ে। এরপর বিরাট কোহলি ও শুভমান গিলের মধ্যে ৭৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে ওঠে। কোহলি ৩৯ রান করে বিদায় নিলেও, গিল নিজের খেলা চালিয়ে যান। দলের জয়ের ভিত গড়ে দেন শুভমান গিল, যিনি ১০১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। তার ব্যাট থেকে আসে ১১টি চারের মার ও ১টি ছয়। তার সঙ্গে অপরাজিত থেকে কেএল রাহুল ৪১ রান করেন এবং দলকে সহজ জয়ের দিকে নিয়ে যান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তাসকিন আহমেদ ২টি উইকেট নেন, তবে বাকি বোলাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ওপর তেমন চাপ সৃষ্টি করতে পারেননি।

ম্যাচ সারাংশ ও গাফিলতিঃ

মোহাম্মদ শামি, যিনি ৫৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামান। তার দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সই ভারতের জয়ের মূল ভিত্তি হয়ে ওঠে। ম্যাচ শেষে মোহাম্মদ শামিকে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত করা হয় তার দুর্দান্ত পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বের জন্য।ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এই ম্যাচে জয় পেলেও কিছু অবহেলা ও দুর্বলতা স্পষ্ট ধরা পড়েছে, যা বড় ম্যাচগুলোতে সমস্যার কারণ হতে পারে।

এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল রোহিত শর্মার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া, যার ফলে অক্ষর প্যাটেলের সম্ভাব্য হ্যাটট্রিক হাতছাড়া হয়। এছাড়া ওপেনিং পার্টনারশিপেও স্থিতিশীলতা দেখা যায়নি,কারণ রোহিত শর্মা ২৫ রান করেই আউট হন। মাঝের ওভারে ভারতের স্পিনাররা বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেননি, যার ফলে তৌহিদ হৃদয় বাংলাদেশের হয়ে বড় ইনিংস খেলতে সক্ষম হন। বিরাট কোহলিও ৩৯ রানে একটি অপ্রয়োজনীয় শট খেলে আউট হন, যা তার অভিজ্ঞতার তুলনায় অযথা ঝুঁকি ছিল। একই সঙ্গে, প্রতিদ্বন্দ্বী দলের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দ্রুত আউট করতে না পারার কারণে শেষ দিকে কিছু বাড়তি রান ভারতকে হজম করতে হয়। এই ভুলগুলো ভারতকে ভবিষ্যতে আরও সতর্ক হতে শেখাবে, বিশেষ করে পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে।

পরবর্তী ম্যাচঃ

এই জয়ের ফলে ভারত গ্রুপ পর্বে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। ভারতের পরবর্তী ম্যাচ ২৩ ফেব্রুয়ারি, যেখানে তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে। বাংলাদেশকে এখন তাদের বাকি ম্যাচগুলোতে জয় ছিনিয়ে নিতে হবে, যদি তারা সেমিফাইনালে যেতে চায়। ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য আরও বড় উত্তেজনা অপেক্ষা করছে, এখন নজর ২৩ ফেব্রুয়ারির ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিকে!About Us