প্রতারকদের কবলে অনলাইন ইনকাম প্রত্যাশীরা!
ত্রিপুরা সহ গোটা পূর্ব ভারতের বিভিন্ন শহরে সক্রিয় প্রতারক চক্র। সামাজিক মাধ্যমে ভুয়ো পেজ খুলে যুবক-যুবতীদের লক্ষ্যে ফাঁদ পেতেছে এরা। মূল উদ্দেশ্য একটাই—ব্যাঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া। গত কয়েক মাস ধরে এই চক্রটি বিশেষ করে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে যুবসমাজকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে। বিশেষ করে ফেসবুকে ভুয়ো কর্মখালি বিজ্ঞাপন দিয়ে যুবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে প্রতারকরা। প্রথমে শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স ও ঠিকানা জেনে নেওয়ার পর দেওয়া হচ্ছে অদ্ভুত ধরনের কাজের অফার। বলা হচ্ছে, “নতুন ধরনের কাজ, মাত্র তিন ঘন্টার মধ্যে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা রোজগার করা সম্ভব।” এতে ইচ্ছুক হলে প্রথমে রেজিস্ট্রেশনের নামে, কিছু পরিমাণ টাকা পাঠাতে বলা হচ্ছে, তারপর দেওয়া হবে ‘আইডি’।
কাজের ধরন শুনলে যে কারোরই চমকে ওঠার কথা। বলা হচ্ছে, ‘হাই প্রোফাইল’ মহিলাদের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে, শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করতে হবে, এমনকি রাতও কাটাতে হতে পারে। এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি জানানো হচ্ছে, যে টাকা উপার্জিত হবে তার ৩০ শতাংশ কমিশন কেটে নেওয়া হবে। প্রতারকরা গুগল পে-র মাধ্যমে টাকা নেওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই যোগাযোগ বন্ধ করে দিচ্ছে। ভুক্তভোগী যুবকদের অভিযোগ, টাকা পাঠানোর পর থেকেই তাদের মোবাইল নম্বর ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে। ত্রিপুরার আগরতলা, ধর্মনগর, বিশালগড়, উদয়পুর, কৈলাসহর সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরে প্রতারকরা সক্রিয়। শুধু ত্রিপুরা নয়, গুয়াহাটি, শিলিগুড়ি, কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গ জুড়েও এই নেটওয়ার্কের জাল বিস্তৃত।
শুধু যুবকরাই নয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েদেরও টার্গেট করে তাদের জালে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতারকরা। নানা লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে তাদের কাছ থেকেও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চমকপ্রদ তথ্য হল, রাজ্যের সাইবার সেল ও গোয়েন্দা শাখার নজর এড়িয়ে প্রতারকরা কার্যত অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অপকর্ম। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কবে সজাগ হবে প্রশাসন? কবে লাগাম টানা হবে এই ভয়ংকর প্রতারণার? সাধারণ মানুষকে সচেতন ও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “অচেনা সোর্স থেকে পাওয়া চাকরির অফারে পা দেবেন না। টাকা চাওয়া হলে নিশ্চিতভাবেই তা প্রতারণা।” অতএব, সোশ্যাল মিডিয়ায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেখলেই সাবধান! এক মুহূর্তের অসাবধানতা হয়ে উঠতে পারে চরম সর্বনাশের কারণ।