পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হচ্ছে!
পাহাড়ের রাজনীতির রং ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে। তিপ্রা মথা ও আই পি এফটি দুই জনজাতি ভিত্তিক আঞ্চলিক দলের উপর নির্ভর করতে গিয়ে, শাসক দল বিজেপি পাহাড়ে ক্রমশ কোমায় চলে যাচ্ছে। দলকে অক্সিজেন দিতে অতি সম্প্রতি দেশের গৃহ মন্ত্রী অমিত শাহ পাহাড়ের রিয়াং শরনার্থীদের শিবিরে মেরাথন বৈঠক করে গেছেন। যদিও আচমকা রাজ্যের অন্যান্য জনজাতিদের ব্রাত্য রেখে কেন শুধু রিয়াং শরনার্থী শিবিরের উদ্দেশ্যেই আমবাসার হাদুকলক এলাকায় পা রাখলেন? এ প্রশ্ন কিন্তু উঠতে শুরু করেছে। কেননা, কেন্দ্রীয় সরকারের সেকেন্ড ইন্ কমান্ড অমিত শাহের রিয়াং শরনার্থী শিবিরে পা রাখার মাত্র পক্ষ কাল পূর্বে ব্রু অর্থাৎ রিয়াং জনজাতি সমাজের একটা অংশ নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। দলের নাম ব্রু রাইকাচাও রাইকসম ইউনাইটেড। শুধু দলই গঠন করেনি, নতুন এই দল পৃথক ব্রু স্বশাসিত জেলা পরিষদ গঠনের দাবী তুলেছে। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে জনজাতি রাজনৈতিক মহলে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ পাহাড়ে মেরাথন বৈঠক করলেও এক্ষেত্রে সফল হওয়া মুশকিল। স্বাভাবিক ভাবেই পাহাড়ে কোমায় আচ্ছন্ন শাসক দলকে পুনরায় সচল করার কোন সম্ভাবণা আপাতত নেই। এই পরিস্থিতিতে তিপ্রা মথা এবং আই পি এফ টি উভয় দলই পাহাড়ে ক্রমশ জনভিত্তি হারাচ্ছে। তিপ্রা মথার কৌশলী রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে জনজাতি যুবকরা। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে গুটি গুটি পায়ে হলেও সিপিএম নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এটা ঘটনা পাহাড়ে বিজেপির ভিত্তি ছিল জনজাতি মোর্চা। কিন্তু জনজাতি মোর্চা এই রাজ্যে এখন কর্মসূচিহীন সংগঠনে পরিণত হয়েছে। ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ক্রমশ জনজাতি মোর্চাকে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন কি একটা সময় যে জনজাতি মোর্চার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসনের সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা, তিপ্রা মথাকে বাগে রাখতে রেবতী ত্রিপুরার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। অনিশ্চিত প্রাক্তন বিধায়ক পরিমল দেববর্মার। যদিও তিনি জনজাতি মোর্চার প্রদেশ সভাপতি। একই হাল এম ডি সি বিদ্যুৎ দেববর্মারও। স্বাভাবিক ভাবেই এসব নেতারা এখন হতাশায় দিন গুজরান করছে। ফলে আগামী দিনে পাহাড়ে নীরব বিপ্লব হলে অবাক হওয়ার নয়।