পাহাড়ের রাজনৈতিক অবস্থা এখন কোন দিকে?
পাহাড়ে একসময় রাজনৈতিক দল মানেই ছিল কমিউনিস্ট পার্টি বা জিএমপি। উপজাতি গনমুক্তি পরিষদের গর্ভগৃহ ছিল পাহাড়। তাদের ভোট ব্যাঙ্ক ছিল জনজাতিরা। উপজাতি যুব সমিতি বা পরে আইএনপিটি পাহাড়ে জিএমপির বিকল্প হতে পারে নি। উপজাতি যুব সমিতি ভেঙে তৈরি হয়েছিল আইএনপিটি। আইএনপিটি ও নিজেদের বিলুপ্ত করে মিশে গেল তিপ্রামথায়। এর পর ধীরে ধীরে পাহাড়ে নিজেদের ভীত শক্তিশালী করতে শুরু করে আইপিএফটি। চ্যালেন্জ ছুড়ে দেয় জিএমপিকে। একটা সময় আইপিএফটির দাপট আর বাড়বাড়ন্তে পাহাড়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো কোনঠাসা হয়ে পরে।তিপ্রাল্যান্ডের শ্লোগান শুনলেই আতংকে কাঁপতে থাকের পাহাড়বাসী। মানুষ অতিষ্ঠ হলেও ২০১৮ সালের ভোটে বিজেপির সাথে জোট করে পাহাড়ের ৮ টি আসনের দখল নেয় তারা। অন্যদিকে ১১টি জনজাতি সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী দিয়ে ১০ টিতেই জয়ী হয় বিজেপি।
এডিসি ভোটের আগে থেকেই পাহাড়ে একচ্ছত্র সাম্রাজ্য বিস্তার করতে শুরু করেছিল আইপিএফটি। পাহাড় জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। কিন্তু আচমকা তিপ্রামথার এন্ট্রি আর এডিসি জয়ের পর কোনঠাসা আইপিএফটি। এক সময় পাহাড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করা দল সাইনবোর্ডে পরিনত হয়েছে। দলের ৮ বিধায়ক থেকে এখন সবেধন নীলমনি শুক্লাচরন।একই অবস্থা জিএমপির। মুকুটহীন রাজা দশরথ, বিদ্যা, সুধ্বন্যাদের তৈরি করা বাগান খা খা করছে। উত্তরসুরিরা সেই বাগান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন। ভিলেজ কমিটির নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো ঘোষণা না হলেও পাহাড় দখলে নেমে পড়েছে জিএমপি। মথা পরিচালিত এডিসি প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে মাঠ গরম করতে শুরু করেছে জিএমপি নেতারা৷ কিন্তু প্রদ্যুতের প্রতি তিপ্রাসাদের আবেগ, মথার জনপ্রিয়তাকে কিভাবে জিএমপি নেতারা ট্যাগেল দেন সেটাই দেখার।
তিপ্রাসাদের ধারণা প্রদ্যুত তিপ্রাসার জন্য পৃথক রাজ্য তৈরি করে দিতে সক্ষম হবেন।নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন হলে জনসংখ্যার নিরিখে আরো দুর্বল হয়ে পড়বে জনজাতিরা। এবং রাজ্যে এন আর সি লাগু হলে বিদেশি বিতরণ করা সম্ভব হবে।
মূলত এই এজেন্ডা গুলিকে সামনে রেখেই পাহাড়ে কাজ করে সফলতা পেয়েছেন তিপ্রার সুপ্রিমো প্রদ্যুত কিশোর। এই জন্যই পাহাড়ে প্রদ্যুত ধরে রেখেছে তার জনপ্রিয়তা।এখনো প্রতিদিন প্রদ্যুত ভাঙ্গন ধরাছেন বিজেপি,আইপিএফটি ও সিপিআইএম শিবিরে। এই ধারাবাহিকতা রাখলে ২০২৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও আইপিএফটি, সিপিআইএম ও বিজেপিকে যে প্রচন্ড হ্যাপা পোহাতে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাহাড়ে তিপ্রা ব্যাতিত কোনো রাজনৈতিক দল মাথা তুলে যে দাঁড়াতে পারবে না,তা বলার অপেক্ষা রাখে না।