দৈনিক

দৈনিক হাজিরা কর্মীদের পূর্ণাঙ্গ মজুরির দাবি!

ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত দৈনিক হাজিরা কর্মীরা!

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ত্রিপুরার ফুড, সিভিল সাপ্লাই এন্ড কনজিউমার্স দপ্তরের অধীনে এডি নগর, আগরতলার সেন্ট্রাল স্টোরে কর্মরত দৈনিক হাজিরা কর্মীরা তাদের ন্যায্য প্রাপ্যের দাবিতে এবার সরব হলেন। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা তাঁদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করা এই কর্মীদের দাবি, বর্তমান বাজারমূল্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাঁদের উপার্জন অত্যন্ত অপ্রতুল হয়ে পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও তাঁদের মজুরিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। ফলে সীমিত উপার্জনে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

কর্মীরা জানান, প্রতিদিন নিয়মিত কাজ করলেও মাসের শেষে পূর্ণাঙ্গ মজুরি পান না তাঁরা। ছুটির দিনগুলিতে মজুরি না মেলায় আর্থিক ক্ষতি হয়। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, মাসের পূর্ণাঙ্গ হাজিরা মজুরি প্রদান করতে হবে এবং ছুটির দিনগুলির জন্যও উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিতে হবে।কর্মীদের অনেকেই গত দুই দশক ধরে এই সেন্ট্রাল স্টোরে কর্মরত রয়েছেন। তাঁদের মতে, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রম সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত কোনো স্থায়ী আর্থিক নিশ্চয়তা পাননি তাঁরা। বয়স বাড়ছে, বাড়ছে পরিবারের চাহিদাও, কিন্তু উপার্জনের সীমাবদ্ধতা তাঁদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।

কর্মীরা জানান, তাঁদের একমাত্র চাওয়া প্রশাসনের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। তাঁরা আশা করেন, সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর তাঁদের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কর্মীদের মতে, যদি মাসের পূর্ণাঙ্গ মজুরি এবং আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়, তবে তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে এবং তাঁরা আরো মনোযোগ ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। কর্মীরা আরও জানান, বিভিন্ন সময়ে লিখিত আবেদনপত্রের মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সরকারকে জানিয়েছেন তাঁদের আর্থিক অসুবিধার কথা এবং দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের বিভাগীয় দপ্তর এ বিষয়ে আজ পর্যন্ত কোনো সদুত্তর দেয়নি। বরং তাঁদের আবেদনপত্রগুলি উপেক্ষিতই থেকে গেছে।

দৈনিক হাজিরা কর্মীরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তাঁদের দাবিগুলি অবিলম্বে পূরণ না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন। তাঁদের মতে, ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য তাঁরা যে কোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। কর্মীদের এই আন্দোলন সরকার ও প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কর্মীরা তাঁদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে সমাজের সহানুভূতি ও সমর্থনের প্রত্যাশা করেছেন। তাঁদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করেও যদি আর্থিক নিরাপত্তা না মেলে, তবে সেটি চরম অবিচার। তাই সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

দৈনিক হাজিরা কর্মীদের এই ন্যায্য দাবির বিষয়ে প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে, তা এখন দেখার বিষয়। কর্মীদের দাবির ন্যায্যতা এবং তাঁদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সরকার দ্রুত সমাধানমূলক পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। এই পরিস্থিতিতে, প্রশাসনের মানবিক এবং কার্যকরী পদক্ষেপই হতে পারে কর্মীদের জীবনে পরিবর্তনের পথ। এখন দেখার বিষয়, তাঁদের এই ন্যায্য দাবির প্রতিক্রিয়া কবে এবং কীভাবে মেলে।STN