মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ দিল্লিতে!
নয়াদিল্লি সফরে গিয়ে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলেন ত্রিপুরার পর্যটন ও পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। রাজ্যের রেল, পর্যটন এবং বিমান পরিষেবার উন্নয়নে কেন্দ্রের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। বিশেষ করে, ত্রিপুরার পর্যটন খাতের বিকাশ, বিমান পরিষেবা সম্প্রসারণ এবং রেল সংযোগের উন্নতির জন্য বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি একাধিক দাবি উত্থাপন করেন মন্ত্রী।
রাজ্যের পর্যটন উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ১৫০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে বলে জানান সুশান্ত চৌধুরী। এই তহবিলের সাহায্যে ত্রিপুরার পর্যটন অবকাঠামো আরও সুদৃঢ় করা হবে এবং পর্যটন শিল্পকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা হবে। এই লক্ষ্যে তিনি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে রাজ্যের পর্যটন সম্ভাবনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে পর্যটন বিভাগের সচিব ও অধিকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে একটি বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (DPR) জমা দেন, যাতে ত্রিপুরার পর্যটন উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। পর্যটন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত আশ্বাস দিয়েছেন যে, ত্রিপুরার পর্যটন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
দিল্লি সফরের অংশ হিসেবে ত্রিপুরার পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু কিনজারাপু-র সঙ্গেও বৈঠক করেন। সেখানে তিনি ত্রিপুরার সাধারণ মানুষের স্বার্থে বিমান ভাড়ার লাগাম টানা ও নতুন বিমান পরিষেবা চালুর দাবি জানান। মন্ত্রী বিশেষভাবে অনুরোধ করেন, আগরতলার মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দর থেকে নতুন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে আরও বিমান পরিষেবা চালু করা হোক। বর্তমানে ত্রিপুরা থেকে সরাসরি বিমান পরিষেবা সীমিত, যা সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় বিমান পরিবহন মন্ত্রী বিমান ভাড়ার সীমারেখা নির্ধারণ ও যাত্রীস্বার্থ সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি জানান যে, আগামী দিনে ত্রিপুরার বিমান পরিষেবা আরও উন্নত করতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
ত্রিপুরার পরিবহনমন্ত্রী দিল্লি সফরে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব-এর সঙ্গেও বৈঠক করেন। এই বৈঠকে ত্রিপুরার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা হয়। সুশান্ত চৌধুরী রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর হাতে একটি লিখিত আবেদনপত্র তুলে দেন, যেখানে ত্রিপুরার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বল দিকগুলোর কথা উল্লেখ করা হয় এবং সেগুলোর দ্রুত সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা কামনা করা হয়। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মনোযোগ সহকারে ত্রিপুরার রেল সংযোগ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো শোনেন এবং আশ্বাস দেন যে, এই বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পর্যটন, রেল এবং বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোর মাধ্যমে ত্রিপুরার পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল। সুশান্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নই সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সক্রিয় সহযোগিতায় খুব শীঘ্রই ত্রিপুরার পর্যটন ও পরিবহন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। মন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরাকে পর্যটন মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়ে আসার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তা ও নীতি সহায়তায় এই প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে। এই বৈঠকগুলোর ফলে ত্রিপুরার পর্যটন, রেল এবং বিমান পরিষেবার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নতুন দিশা পেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।