ত্রিপুরা

ত্রিপুরা রাজ্যে শিল্প স্থাপনের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে!

ত্রিপুরা বিজনেস কনক্লেভ ডেস্টিনেশন,  ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারী!

ত্রিপুরা রাজ্যে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে, যার ফলে শিল্প স্থাপনের উপযুক্ত পরিবেশ ও তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকার চাইছে বহিরাজের বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি রাজ্যে এসে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাক।

ত্রিপুরা সরকার চাইছে এবার ব্যবসার ‘ডেস্টিনেশন’ হোক এই রাজ্য। ব্যবসার ক্ষেত্রে সবাই যাতে ত্রিপুরায় আসেন এবং সেখানে বিনিয়োগ করেন। এর আগে অর্থাৎ ২০২৩ সালের বারানসিতে শোকেজিং ত্রিপুরা শীর্ষক বিজনেস কনক্লেভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই রাজ্যে। রাজ্যের কুইন প্রজাতির আনারসকে তুলে ধরে রাজ্যের ব্যবসা আরও বাড়াতে চাইছে সরকার। সেই লক্ষ্য নিয়ে বারানসীতে নিজেদের কুই্যন প্রজাতির আনারসকে তুলে ধরেন সরকার। এই আনারসের সঙ্গে বিভিন্ন কৃষিজাত জিনিস, ত্রিপুরার বিভিন্ন হস্তশিল্প, রাবার এবং বাঁশের তৈরি নানা সৌখিন দ্রব্য তুলে ধরা হল বারানসীতে। এই সঙ্গে তুলে ধরা হয় ত্রিপুরার পর্যটনকেও। ত্রিপুরা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটি রাজ‍্য। এখানে উৎপাদিত বাঁশ থেকে খুবই উন্নত মানের বাঁশের সামগ্রী তৈরি করা যায়। এর পাশাপাশি ত্রিপুরায় উৎপাদিত রবারের গুণমানও খুবই ভাল। যে কোন রাজ্যের উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা একটা খুবই গুরত্বপূর্ণ‍্য ভূমিকা রাখে; সেক্ষেত্রে ত্রিপুরায় সড়ক যোগাযোগ, রেল যোগাযোগ এবং আকাশ পথে যোগাযোগ ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে। তাই সবদিক দিয়েই ত্রিপুরার আগামী ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল।

২০২৩ সালের ৩ মে শিল্প সামিটে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার উপস্থিতিতে ৮ জন শিল্প উদ্যোগপতির সঙ্গে ৩১২.৩৮ কোটি টাকার মৌ স্বাক্ষর করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বিভিন্ন সময়ে বহিরাজ্যে বিজনেস কনক্লেভে অংশ নিয়ে উদ্যোগপতিদের রাজ্যে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এর ফাকে দেশের শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির সাথে দেখা করেছেন এবং রাজ্যে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এবার রাজ্যে হচ্ছে ডেস্টিনেশন ত্রিপুরা বিজনেস কনক্লেভ। আগামী সাত এবং আট ফেব্রুয়ারি শহরের একটি বেসরকারি হোটেলে এই বিজনেস কনক্লেভ হবে। আর এই বিজনেস কনক্লেভ থেকে ৬০০টির বেশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে মৌ স্বাক্ষরিত হবে বলে জানিয়েছেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্তনা চাকমা। রাজ্যে পর্যটন ক্ষেত্রকে শিল্পের রূপ দেওয়া হয়েছে।রাজ্য ও বহিরাজ্যের পর্যটকরা রাজ্যে আসছেন। রাজস্ব সংগ্রহ বেড়েছে। পাশাপাশি পর্যটনকেন্দ্র গুলিরও পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে। এই পর্যটনকে ভিত্তি করে রাজ্য ও বহিরাজ্যের সংস্থাকে ডেকে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ত্রিপুরা যে পর্যটকবান্ধব, সেখানে সহজে যাওয়া যায় এবং নিরাপদে সব জায়গায় ঘোরা যায় সেটাও সবার সামনে তুলে ধরা হবে। ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রধান বিনিয়োগের স্থান হিসেবে তুলে ধরার জন্যই এই কনক্লেভের আয়োজন করা হয়েছে। কনক্লেভে রাজ্যের পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, আইটি এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ নিয়েও আলোচনা হবে। রাজ্যে কি কি সুবিধা রয়েছে সেগুলো তুলে ধরা হবে; ‘লক্ষ বিনিয়োগ বাড়ানো’। রাজ্যের বিভিন্ন হস্তশিল্প, রাবার এবং বাঁশের তৈরি নানা সৌখিন দ্রব্য তুলে ধরা হবে কনক্লেভে। রাজ্যে গত সাতটি অর্থবছরে ১৪১ টি ইউনিট ৯৯৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৭টি ইউনিট ৮৮.৩২৫ কোটি, ২০১৯ -২০অর্থবছরে আঠাশটি ইউনিট ১৪২ দশমিক ৭৪৫ কোটি। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ২২ টি ইউনিট ৩৩.৬২১ কোটি, ২০২১ – ২২ অর্থ বছরে ২৫টি ইউনিট ৮০.২২ কোটি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৩ টি ইউনিট ১৬২.৯৩৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। অপরদিকে ২০২৩ -২৪ অর্থ বছরে ২৩ টি ইউনিট ৫৭.৪৮ কোটি। ২০২৪- ২৫ অর্থবছরের ২৬ টি ইউনিট ৪২৮.৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে বলে তথ্য দিয়েছেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী। কনক্লেভে রাজ্যের স্থানীয় নানা শিল্প, উৎপাদন, হস্তশিল্পকে তুলে ধরতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার। এই সমস্ত শিল্পকে আরও বেশি করে তুলে ধরতে এ ধরনের কনক্লেভের আয়োজন।