ত্রিপুরা

ত্রিপুরা রাজ্যে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত!

ত্রিপুরায় নিয়োগে বেড়েছে স্বচ্ছতা, কমেছে বেকারত্বঃ

ত্রিপুরায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ এখন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, মেধা ও যোগ্যতার উপর নির্ভর করছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। বুধবার বিকেলে আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকার রাজনৈতিক রঙ বিচার না করে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দিচ্ছে।”

এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে জেআরবিটি (JRBT) কর্তৃক মাল্টি টাস্কিং স্টাফ (Group-D) এবং অন্যান্য পদে ২,৮০৬ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। এছাড়া স্বাস্থ্য দপ্তরে ফার্মাসিস্ট ও ল্যাব টেকনেশিয়ান পদে আরও ৩৬৯ জনের নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রকের জরিপ অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ত্রিপুরার বেকারত্বের হার জাতীয় গড়ের তুলনায় বেশি ছিল। তবে, গত চার বছরে রাজ্যে বেকারত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে এবং বর্তমানে ত্রিপুরার বেকারত্বের হার ১.৭%, যেখানে জাতীয় গড় ৩.২%। তিনি আরও জানান, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মোট ১৬,৪১১ জনকে সরকারি দপ্তরে স্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়েছে, এবং আরও ৫,৭৭১ জনকে চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকার টেট, জেআরবিটি এবং টিপিএসসির মাধ্যমে স্বচ্ছ পদ্ধতিতে নিয়োগ করছে। এখন আর কাউকে চাকরির জন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে না।” তিনি আরও জানান,
✅ আগরতলা, ধর্মনগর ও কৈলাশহরে তিনটি মডেল ক্যারিয়ার সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে।
✅ ২০১৮-১৯ থেকে ৯৬টি জব ফেয়ারের মাধ্যমে ২,১৩৫ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
✅ প্রায় ২২,০০০ যুবককে বিভিন্ন রাজ্যে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
✅ রাজ্যে ৫২,৪৬০টি স্ব-সহায়তা গোষ্ঠী (SHG) রয়েছে, যেখানে ৪.৭৩ লাখ সদস্য যুক্ত।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, ত্রিপুরার সরকারও সেই পথেই চলছে। কর্মচারীরা সরকারের মূল চালিকাশক্তি, তাই যোগ্যদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে।”

এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায়, বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ, খাদ্য ও পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্তনা চাকমা, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য, বিধায়ক, প্রশাসনিক আধিকারিকরা। নিয়োগপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থেকে নবনিযুক্ত কর্মচারীদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। ত্রিপুরায় কর্মসংস্থানের এই নতুন উদ্যোগ রাজ্যের যুবসমাজের জন্য আশার আলো জাগিয়েছে।