ত্রিপুরার শিল্পীরাও পারে জাতীয় স্তরের গুণগতমান বজায় রাখতে!
ত্রিপুরার শিল্পীরাও যে জাতীয় স্তরের অন্যান্য শিল্পীদের চেয়ে কোন অংশে কম নয় তা আবারো প্রমাণ করলো তারা। নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী ক্ষেত্র বেনারসের বিভিন্ন এলাকাকে তাদের শিল্প নৈপুণ্যে সাজিয়ে তুলছেন ত্রিপুরার শিল্পীরা।
ত্রিপুরার শিল্পীদের চিত্র, ভাস্কর্য ও শিল্পকর্ম; বেনারসের বিমানবন্দর থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোর শোভা বর্ধন করছে। এটাই হয়তো ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সাফল্য। একসময় রাজের চিত্র ভাস্কর্য শিল্পীরা চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতেন, তাদের রোজগার ছিল না। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর তারা এখন কাজ করে শেষ করতে পারছেন না তাদের শিল্প। শিল্প নৈপুণ্য তুলে ধরতে এখন ব্যস্ত তারা। রোজগারও হচ্ছে এবং সম্মানও পাচ্ছেন। ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যেসব মনীষীদের ভাস্কর্য ও মূর্তি রয়েছে এগুলোর বেশির ভাগই তৈরি করেছিলেন ভিন রাজ্যের শিল্পীরা। রাজ্যের শিল্পীদের কদর ছিল না, সরকার পরিবর্তনের পর তাদের কদর বেড়েছে। একসময় অন্যান্য রাজ্য থেকে মূর্তিগুলি এনে বসানো হয়েছিল। কিন্তু এবার তার বিপরীত ঘটনা ঘটলো। ত্রিপুরা রাজ্যের শিল্পীরা দেশের অন্যতম সুপরিচিত পর্যটন কেন্দ্র ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী কেন্দ্র বেনারসের সৌন্দর্যায়নের জন্য ফাইবারের মূর্তি তৈরির দায়িত্ব পেলেন। রাজধানী আগরতলার নজরুল কলাক্ষেত্র এলাকার ললিতকলা একাডেমির ত্রিপুরা শাখা সেন্টারে প্রায় ছয় মাস ধরে এই মূর্তি তৈরির কাজ চলছে। সেন্টারের প্রধান সুমন মজুমদার এ কাজের কডিনেটরের দায়িত্বে রয়েছেন। প্রায় ছয় মাসের বেশি সময় ধরে মুর্তি তৈরির পর সেগুলো বেনারসে পাঠানো হয়। ভারত সরকারের রেলওয়ে মন্ত্রক এই সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ করে এবং ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ শিল্পকর্মগুলো তৈরি করার দায়িত্ব দেয় ললিতকলা একাডেমি ও নর্থইস্ট জোন কালচারাল সেন্টারকে। আগরতলায় কাজ শুরু হয় গত ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে। প্রায় এক বছর ধরে কাজ চলে। রাজ্যের বহু শিল্পী তাদের শিল্প কর্ম তুলে ধরার সুযোগ পান এই প্রকল্পে। রাজ্যের ৫৫ জন শিল্পী ৫৫টির বেশি শিল্পকর্ম তৈরি করেন। এবার রাজ্যের শিল্পীদের শিল্প কর্ম তুলে ধরা হচ্ছে বেনারসে। শিল্প কলাগুলির মধ্যে রয়েছে- নটরাজ, মনিপুরী, কুচিপুরি নৃত্যশিল্পী, যোগা অনুশীলনের মূর্তি, খেলোয়াড়, নারী বৈমানিকসহ আরও কত কিছু।
আগে যেখানে বহিঃরাজ্যের শিল্পীদের দ্বারা তৈরি মূর্তি, বহিঃরাজ্য থেকে এই রাজ্যে নিয়ে আসা হতো, এখন তার বিপরীতে রাজ্যের শিল্পীদের হাতে তৈরি মূর্তি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হচ্ছে, ঐ জায়গার শোভাবর্ধনের জন্য। আক্ষরিক অর্থে রাজ্য ও দেশের ইতিহাসে নতুন মাইল ফলক তৈরি করলেন ত্রিপুরা শিল্পীরা। আগামী দিনেও যে রাজ্যের শিল্পীরা দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গার শিল্পকর্মে অংশ নেবেন তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।