ত্রিপুরা রাজ্যে AIDS এর মরণফাঁধ থেকে রক্ষা পাচ্ছ না, ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও!
ত্রিপুরা রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনগুলো ক্রমশ HIV ও AIDS এর জন্য স্পর্শ কাতর হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা গণহারে মারন ব্যাধি AIDS এ আক্রান্ত হচ্ছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, AIDS এ আক্রান্ত এসব ছাত্র-ছাত্রীদের প্রায় সবার বয়স ২০ বছরেরও কম। এমন নয় যে, এরা সবাই গরীব ঘরের ছেলে-মেয়ে। আর্থিক ভাবে সচ্ছল এবং শহরের বনেদি পরিবারের ছেলে-মেয়েরাই বেশিরভাগ আজ আক্রান্ত হচ্ছে এই মারন ব্যাধিতে। ইতিমধ্যেই রাজ্য এইডস্ কন্ট্রোল বোর্ড রাজ্যের ২২৪ টি স্কুল এবং ২৪ টি কলেজকে AIDS প্রবন বলে চিহ্নিত করেছে। শুধু ছাত্র-ছাত্রীরাই নয়, AIDS রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ত্রিপুরা রাজ্যের স্কুলের শিক্ষকরাও।
অতিসত্বর স্কুল-কলেজগুলোতে সচেতনতা মুলক কর্মসূচি, AIDS সনাক্তকরন কর্মসূচি শুরু করা দরকার। এক সময় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব কলেজগুলোতে যেভাবে AIDS বাড়ছে তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন এবং কলেজগুলোতে নিয়মিত সনাক্তকরন শিবির করার উপর জোর দিয়েছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীদের বোঝাতে হবে; তাদের সুস্থভাবে বাঁচার জন্য পরামর্শ দিতে হবে; AIDS এর ভয়াবহ দিক তুলে ধরতে হবে; কোথায় কি? বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে? কোন ফলপ্রসু কর্মসূচিই নেই! জানা গেছে ইতিমধ্যেই বেশ কজন স্কুল শিক্ষক AIDS রোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং তারা এইডস্ কন্ট্রোল বোর্ডের নিয়মিত চিকিৎসার আওতায় রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। কেননা, এভাবে স্কুল কলেজে AIDS সংক্রমিত হতে থাকলে নিকট ভবিষ্যতে সমাজকে তার কঠিন মূল্য দিতে হবে; তার বড় কারন হলো প্রতিনিয়ত AIDS রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭ জন AIDS রোগী সনাক্ত হচ্ছে রাজ্যে। বছরে প্রায় ২০০০ জন AIDS রোগী এই মুহুর্তে সনাক্ত হচ্ছে ত্রিপুরা রাজ্যে। লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে; ফলে আজ নামী খেলোয়াড় থেকে শুরু করে ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যরাও এই রোগের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছো না। এই মারন ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও; এই মুহুর্তে রাজ্যে ১৬৮ জন শিশুর মধ্যে HIV পজেটিভ পাওয়া গেছে। সচেতনাই একমাত্র এই মরণফাদ থেকে মুক্তির উপায়; আর এই সচেতনতার অভাবই ডেকে আনছে এক মহাবিনাশ।
ত্রিপুরা রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, AIDS এ সংক্রমিত হওয়ার মূল মাধ্যম শিড়া পথে ড্রাগস্ গ্রহন। ত্রিপুরা রাজ্য AIDS কন্ট্রোল বোর্ডের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজ্যে প্রতি ১০০ জন HIV পজেটিভ রুগীর মধ্যে ৮০ জনই আক্রান্ত হয়েছে শিড়া পথে ড্রাগস্ সেবনের মাধ্যমে। তবে যেভাবে রাজ্যে AIDS সংক্রমিত হচ্ছে তা ঠেকানোর জন্য রাজ্য AIDS কন্ট্রোল বোর্ডের লোক বল নেই বললেই চলে; মাত্র ২৭ জন কর্মী দিয়ে চলছে রাজ্য AIDS কন্ট্রোল বোর্ড। যদিও গোটা রাজ্যে এই মুহুর্তে ১৩২ টি HIV টেস্টিং সেন্টার রয়েছে; তবে যেভাবে রোগ সংক্রমিত হচ্ছে, তাতে সামাজিক উদ্যোগ ছাড়া এই রোগের সংক্রমন ঠেকানো সম্ভব নয় বলে মতামত অভিজ্ঞ মহলের।