তিপ্রা চুক্তি নির্বাচনী চাল

তিপ্রা চুক্তি ‘নির্বাচনী চাল’!

তিপ্রা চুক্তি নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ!

কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, তিপ্রা মথা, কেন্দ্র এবং ত্রিপুরা সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তি (তিপ্রা চুক্তি) ছিল নিছকই একটি নির্বাচনী চাল, যার মাধ্যমে রাজ্যের আদিবাসীদের প্রতারিত করা হয়েছে।

তিপ্রা চুক্তির প্রথম বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে শ্রী রায় বর্মন অভিযোগ করেন, বিজেপি রাজনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তিপ্রা মথার প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মাকে ব্যবহার করেছে এবং পরে তাঁর দলকে রাজ্য সরকারের অংশ করে নিলেও চুক্তির প্রতিশ্রুতিগুলি বাস্তবায়নের কোনও উদ্যোগ নেয়নি। তিনি জানান, ২ মার্চ ২০২৪ তারিখে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি ছয় মাসের মধ্যে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, এক বছর কেটে গেলেও কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। “আসলে কী বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ছিল, সেটাই কেউ জানে না। কারণ এই চুক্তির মধ্যে কোনও স্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই,” – মন্তব্য করেন কংগ্রেস নেতা।

সুদীপ রায় বর্মন বলেন, বিজেপির প্রকৃত উদ্দেশ্য আদিবাসীদের ক্ষমতায়ন নয়। তিনি উত্তর-পূর্বের ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকায় উন্নয়নের অভাব এবং ১২৫তম সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, বিজেপি চাইলে সহজেই বিলটি পাশ করাতে পারত, কিন্তু তা করেনি। তিনি রাজ্য সরকারকে ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের (টিটিএএডিসি) অধীনে ভিলেজ কমিটি নির্বাচনের বারবার বিলম্বের জন্য দায়ী করেন। যদিও ত্রিপুরা হাইকোর্টে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হবে, কিন্তু এ নিয়ে এখনও কোনও অগ্রগতি হয়নি। “যখন জনস্বার্থের বদলে রাজনৈতিক স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, তখন টিটিএএডিসি এলাকার মানুষের দুর্দশা স্পষ্ট হয়ে ওঠে,” – বলেন রায় বর্মন।

তিনি দাবি করেন, ভিলেজ কমিটির নির্বাচন ১২৫তম সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পরই হওয়া উচিত, যাতে আদিবাসী এলাকায় উন্নয়নের জন্য যথাযথ তহবিলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়। “সংবিধান সংশোধন হলে ভিলেজ কমিটিগুলো সরাসরি কেন্দ্রীয় তহবিল পাবে, যেমনটি বর্তমানে পঞ্চায়েত রাজ ও পৌরসভাগুলি ৭৩তম ও ৭৪তম সংশোধনী আইনের মাধ্যমে পেয়ে থাকে,” – তিনি ব্যাখ্যা করেন। শ্রী রায় বর্মন আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ১২৫তম সংশোধনী বিল পাশ করতে দেরি করছে, কারণ এতে স্বশাসিত জেলা পরিষদগুলোর ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, যা মূলত খ্রিস্টান আদিবাসীদের অধীন।

“এই মানসিকতার কারণেই আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার দিতে দেরি করা হচ্ছে,” – বলেন কংগ্রেস নেতা। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত ১২৫তম সংবিধান সংশোধনী পাশ করার আহ্বান জানান এবং বলেন, কংগ্রেস দল সরাসরি তহবিলপ্রাপ্তির দাবিকে সমর্থন করে। “জেলা পরিষদ এলাকাগুলোর বাসিন্দারা জিএসটি’র মাধ্যমে পরোক্ষ কর দেন, তাই তাদেরও কর রাজস্বের ন্যায্য অংশ পাওয়ার অধিকার রয়েছে,” – বলেন সুদীপ রায় বর্মন। তিনি বলেন, বিজেপি একদিকে আদিবাসী ও তিপ্রা মথার নেতৃত্বকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে, অন্যদিকে কংগ্রেস সবসময় ত্রিপুরার আদিবাসীদের অধিকার ও ক্ষমতায়নের জন্য লড়াই করবে।About Us