তিপ্রামথা

তিপ্রামথার তাণ্ডবে ছন্নছাড়া বিজেপি!

তিপ্রামথা শরিকের ভূমিকা ছেড়ে পরগাছার ভূমিকায় অবতীর্ণ!

তিপ্রামথা

তিপ্রামথার তান্ডবে পাহাড়ি অঞ্চলে বেলাইন বড় শরিক বিজেপি। প্রদ্যুৎ কিশোরকে উঁচু পিঁড়ি দিতে গিয়ে পাহাড়ে ক্রমশ পায়ের নিচের মাটি হারাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। মথার প্রভাবে আতঙ্কিত হয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা দলে দলে যোগ দিচ্ছেন প্রদ্যুৎ কিশোরের শিবিরে। ফলে পাহাড়ি অঞ্চলে বিজেপির সাংগঠনিক ভিত্তি দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে।

বর্তমানে পাহাড়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করতে এবং সংগঠনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব প্রকট। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাহাড়ি রাজনীতির উপর পূর্ণ আধিপত্য বিস্তার করছেন তিপ্রামথা প্রধান প্রদ্যুৎ কিশোর। এক বছরের মধ্যেই এডিসি নির্বাচন এবং যেকোনো সময় ভিলেজ কমিটির ভোট ঘোষণা হতে পারে, তাই বিজেপিকে কোণঠাসা করে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে মরিয়া মথা।

বিজেপির জনজাতি নেতৃত্বের অভিযোগ, পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ মথার ভয়ে বিজেপি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এডিসি এলাকায় বিজেপি সমর্থকদের প্রশাসনিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। কিন্তু, কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গে প্রদ্যুৎ কিশোরের সম্পর্কের কারণে বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব মথার বিরুদ্ধে সরব হতে পারছে না। তার ওপর তিপ্রামথা সরকারে বিজেপির শরিক হওয়ায়, সাধারণ জনজাতিদের অভয় দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বিজেপি। ফলে ভয়ে অথবা নিরুপায় হয়ে বহু কর্মী-সমর্থক যোগ দিচ্ছেন তিপ্রামথার দলে।

বিজেপির অন্দরমহলের খবর অনুযায়ী, পাহাড়ের ২০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১০-১৫টিতেই বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি প্রায় শূন্যের কোঠায়। সিমনা, টাকারজলা, গোলাঘাটি, রামচন্দ্রঘাট, আশারামবাড়ী, ওম্পিনগর, মান্দাই, এবং জোলাইবাড়ি সহ বেশ কয়েকটি জনজাতি সংরক্ষিত আসনে বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। সদস্যতা পদ অভিযানে তেমন সাড়া না মেলায় দলের ভেতরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।

বিজেপি নেতৃত্বের উদ্বেগ, পাহাড়ে সংগঠনের এই ভঙ্গুর অবস্থা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাহাড় রাজনীতির পুরো স্টিয়ারিং নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন প্রদ্যুৎ কিশোর, যা ২০২৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মোদী-শাহ নেতৃত্বাধীন বিজেপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, পাহাড়ি জনজাতি ভোটারদের মন জয় করতে না পারলে বিজেপির সাংগঠনিক ভাটা কাটানো অসম্ভব। মথার ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও প্রদ্যুৎ কিশোরের কৌশলী রাজনীতির সামনে পাহাড়ে টিকে থাকতে হলে বিজেপিকে শক্তিশালী নেতৃত্ব খুঁজে বের করতেই হবে। অন্যথায় আগামী নির্বাচনে পাহাড়ি অঞ্চলে তিপ্রামথার কাছে বড়সড় পরাজয়ের মুখোমুখি হতে পারে বিজেপি।