ককবরক স্ক্রিপ্ট সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী!
ত্রিপুরার ককবরক ভাষার স্ক্রিপ্ট ইস্যুতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সকল সম্প্রদায়ের ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে সম্মান করে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় কোনও আপস করা হবে না বলেও তিনি স্পষ্ট করেন।
বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ককবরক ভাষার স্ক্রিপ্ট নির্ধারণের বিষয়ে এর আগেও একাধিক আলোচনা হয়েছে। সরকার সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে চায়। তিনি বলেন, “আমরা জানতে চাই, রোমান স্ক্রিপ্ট কেন এবং কেন দেবনাগরী স্ক্রিপ্ট নয়? এনিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে, তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।” তিনি আরও বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্দোলন হয়েছে এবং আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বেশ কয়েকজন তাঁর সাথে সাক্ষাৎও করেছেন। দিল্লিতে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় ককবরক ভাষার স্ক্রিপ্টের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে এবং একটি উপযুক্ত সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেন যে, ককবরকের স্ক্রিপ্ট যদি স্বতন্ত্র ইন্ডিজেনাস হয়, তবে সরকারের কোনও আপত্তি নেই। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, বর্তমান সরকার সমাধানের সরকার এবং এই সরকার ত্রিপুরার সমস্ত সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও ভাষাকে সম্মান করে। তিনি আশ্বাস দেন, এনিয়ে একটি চূড়ান্ত সমাধান খুব দ্রুতই করা হবে।
বাজেট অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী ককবরক ভাষার সিবিএসই পরীক্ষার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। তিনি জানান, এবছর মোট ১,৪১২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১,৩৩৯ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, তবে ৭৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি ইনভিজিলেটররা সঠিকভাবে দিকনির্দেশনা দেন, তবে পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করা এবং তাদের সকল ধরনের সমস্যার সমাধান করা সরকারের দায়িত্ব। সরকার এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেন।
ত্রিপুরার ককবরক ভাষার স্ক্রিপ্ট নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। রোমান ও দেবনাগরী স্ক্রিপ্টের মধ্যে কোনটি ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে জনমত বিভক্ত। মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে যে, সরকার কোনও একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে চায়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে।