এনইসি

এনইসি বৈঠকে রাজ্যের প্রাপ্তি কি?

এনইসি বৈঠকে রাজ্যের প্রাপ্তি অনেক: মুখ্যমন্ত্রী

এনইসি বৈঠক নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা জানান; “ত্রিপুরার ইতিহাসে এত বড় বৈঠক আর হয়নি। এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”

সম্প্রতি কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চিঠি দিয়েছিলেন। তিনি জানতে চেয়েছিলেন উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদ তথা এনইসি বৈঠকের প্রাপ্তি কি। আবার প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করলেন রাজ্যে পানীয়জল ৮৭ শতাংশ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ধরনের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয় একটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ প্রকল্প হল জল জীবন মিশন। সম্প্রতি এন ই সি পোর্টালে যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে গত ছয় বছরে ৮৫.৭ কোটি টাকা ১৩ টি প্রকল্পের জন্য এন ই সি মঞ্জুর করেছে। এরমধ্যে ব্যয় হয়েছে মাত্র ২১.৩৮ কোটি টাকা।

বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী জানান উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলোর মধ্যে সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এটাই বড় প্রাপ্তি। ত্রিপুরা সম্পর্কে বুঝতে, জানতে পেরেছেন উত্তর পূর্বাঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীরা, রাজ্যপাল ও আধিকারিকরা। এনইসি  বৈঠকের ফলে; কৃষ্টি-সংস্কৃতির বিনিময় হয়েছে, এতে বাড়বে জিডিপি। আগর বাশবেত শিল্প সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিতে পেরেছেন তারা। রাজ্যের পর্যটনের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এটাই ত্রিপুরার মানুষের কাছে বড় প্রাপ্তি। এনইসি বৈঠক উপলক্ষে রাজ্যে এসেছেন ইসরুর চেয়ারম্যান। সারা দেশের ব্যাংকের আধিকারিকরা এসেছেন। এখানে ব্যাংকার্সদের বৈঠক হয়েছে। ত্রিপুরায় যে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ আছে সেটা জানতে পেরেছেন তারা। এটাই তো বড় প্রাপ্তি। ব্রু শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য ৫০০ কোটি টাকার প্যাকেজ দিয়েছিল কেন্দ্র। তা এখন এক বেড়ে ৮০০ কোটি টাকার উপর হয়েছে। রাজ্যের বারোটি জায়গায় ব্রদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন দেখে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজ্যে যে ভালো ভালো কাজ হচ্ছে তার অভিজ্ঞতা নিয়ে গেলেন তিনি। রিয়াং শরণার্থীরা যারা পুনর্বাসন পেয়েছে তারা ঠিকভাবে ঘর পেয়েছে কিনা, তাদের জন্য রাস্তাঘাট নির্মিত হয়েছে কিনা, তাদের রেশন প্রদান ঠিকঠাক ভাবে চলছে কিনা তাও উপলব্ধি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে কেউ কখনো কোনদিন চিন্তা করেনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরা চিন্তা করেছেন তাদের জন্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন এটাই হচ্ছে রাজ্যের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। রাজ্যে ভবিষ্যৎ উন্নয়নের প্রশ্নে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের পক্ষ থেকে এইমসের জন্য ফের দাবি জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। সীমান্ত নিরাপত্তা কতটুকু তা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন এই বৈঠকের ফলে এই অঞ্চলের রাজ্যগুলোর মধ্যে কৃষ্টি সংস্কৃতির বিনিময় হবে। এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়নের সহায়ক হবে। বৈঠকে এই অঞ্চলের বৃষ্টিপাত সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিভাবে আরো আগে দুর্যোগের আভাস পাওয়া যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে দখলকৃত সরকারি জমি উদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলোকে নেশার বিষয়ের জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়শই বলেন অষ্ট লক্ষ্মীর আয়তন উত্তরপ্রদেশ থেকেও বেশি। ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো থেকে জিডিপি বৃদ্ধি সারা দেশের অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মোট কথা রাজ্যের প্রাপ্তি অনেক বেশি বলেই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।