এইডসে, গত ৮ বছরে ত্রিপুরা রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি!
এইডসে, ত্রিপুরা রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গত ৮ বছরে হয়েছে ৫১২। ২০২৩ -২৪ অর্থবছরে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। রাজ্য বিধানসভায় তথ্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। নেশা মুক্ত রাজ্য গঠনে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে একটি দৃষ্টি আকর্ষণীয় নোটিশের জবাব দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই তথ্য দেন।
তিনি বলেন ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজ্যে ৬৬ জন এর মৃত্যু হয়েছিল এইডসে। ২০১৬- ১৭ অর্থবছরে ৬৫ জনের, ২০১৭-১৮ সালে ৬৬ জনের, ২০১৮-১৯ সালে ৭৬ জনের, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আবার ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যে ২০২১ সালে এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৭০৭ জন। ২০২২ সালে তা বের হয়েছে ৮৯৪০ জন। ২০২৩ সালে রাজ্যে মোট ১০১২৬ জন এইচআইভি আক্রান্ত রোগী ছিল। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ত্রিপুরার উদ্যোগে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে নেশা মুক্ত ত্রিপুরা প্রচার অভিযান চালু হয়। রাজ্যের এই অভিযানে ত্রিপুরার মোট ২২ টি সাধারণ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে মাদকাসক্তি সম্পর্কিত মেগা সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুসারে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে এইচ আই ভি এইডস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর রাজ্য কুইজ প্রতিযোগিতা, ব্যান্ড মিউজিক কম্পিটিশন এবং রেড রান নামে ম্যারাথনের আয়োজন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা বলেছেন গত তিন বছরে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় নারকোটিক্স ড্রাগস্ এবং সাইকেট্রপিক সাবসটেন্স এর ১হাজার ৬৬৫টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং ২হাজার ৬৯৭কে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ রাজ্য বিধানসভায় বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস ও নয়ন সরকারের আনীত দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশের উপর আলোচনায় তিনি এ তথ্য জানান।মুখ্যমন্ত্রী বলেন তাছাড়া গত তিন বছরে ১লক্ষ ৫৪হাজার ৬৫৮ কেজি গাঁজা, ৫লক্ষ ৮২হাজার ১০০টি কফ সিরাপের বোতল, ২৫লক্ষ ৬২হাজার ৭৯১টি ট্যাবলেট ও ৩৪হাজার ৯৭১গ্রাম হেরোইন বাজেয়াপ্ত করেছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন২০১৮সালের আগে নেশাযুক্ত ত্রিপুরা ছিল। বর্তমানে সরকার গঠনের পর তা নেশামুক্ত ত্রিপুরায় পরিবর্তিত হচ্ছে।
তিনি বলেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় এবং নির্দেশানুসারে রাজ্যের সামাজিক কল্যাণ ও সামাজিক শিক্ষা দপ্তর, স্বরাষ্ট্র দপ্তর, শিক্ষা দপ্তর, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তর এবং নারকোটিকস কন্ট্রোল বুরো সহ বিভিন্ন এনজিওদের সহায়তায় রাজ্যস্তরীয় নেশা মুক্ত ভারত ক্যাম্পেইন কমিটি এবং বিভিন্ন জেলায় ডিস্ট্রিক্ট লেভেল নেশা মুক্ত ভারত ক্যাম্পেইন কমিটি গঠন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন রাজ্যে নেশা দ্রব্য ব্যবহারে লাগামহীন বৃদ্ধি এবং তা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তর ২০২২সালে খেলো ত্রিপুরা, সুস্থ ত্রিপুরা প্রকল্পের অধীনে নেশামুক্ত ত্রিপুরা নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করে। তিনি বলেন শিক্ষা দপ্তর কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের নির্দেশ অনুসারে নবচেতনা মডিউল এর দ্বারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে যাতে ছাত্রছাত্রীদের নেশার প্রতিরোধমূলক শিক্ষা দিতে পারে। তিনি বলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর, ভারত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক নতুন দিল্লি স্থিত আর্থিক সহায়তায় গত ২০১৯সালে নরসিংগড় অবস্থিত আধুনিক মানসিক হাসপাতালে ড্রাগ ট্রিটমেন্ট ক্লিনিক নামে একটি ডেডিকেটেড ও পিডিভিত্তিক আসক্তি ক্লিনিক খোলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ত্রিপুরার উদ্যোগে ২০২২ সালে নে শামুক্ত ত্রিপুরা প্রচারাভিযান চালু হয়। তিনি বলেন রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তর, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নেশা বিরোধী কর্মসূচি পালন করে রাজ্যকে নেশামুক্ত রাজ্য তৈরী করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।