ইমার্জেন্সি

“ইমার্জেন্সি” চলচ্চিত্র বক্স অফিস রিপোর্ট!!

কঙ্গনা রানাউতের “ইমার্জেন্সি” চলচ্চিত্র শুধুই কি বিনোদনের উদ্দেশ্যে??

বহু প্রতীক্ষিত বলিউড চলচ্চিত্র “ইমার্জেন্সি” ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এটি ভারতের অন্যতম বিতর্কিত রাজনৈতিক অধ্যায়, ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থা এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর শাসনামলকে কেন্দ্র করে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটির পরিচালক ও প্রধান অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত, যিনি নিজেই ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

‘ইমার্জেন্সি’ ছবিটি ১৯৭৫ সালে ভারতের জরুরি অবস্থার সময়কার ঘটনাবলী তুলে ধরেছে। সেই সময়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন, যার ফলে গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ে এবং অসংখ্য রাজনৈতিক বিরোধী কারাবন্দি হন। কঙ্গনা রানাউত ছবিটিতে দেখানোর চেষ্টা করেছেন কীভাবে ইন্দিরা গান্ধী ক্ষমতা ব্যবহার করেছিলেন এবং কীভাবে সেই সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল।

এই চলচ্চিত্রে কঙ্গনা রানাউত ছাড়াও অভিনয় করেছেন অনুপম খের, মহিমা চৌধুরী, শ্রেয়াস তালপাড়ে, মিলিন্দ সোমান ও সতীশ কৌশিক। প্রতিটি চরিত্রই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের প্রতিনিধিত্ব করছে। কঙ্গনার অভিনয় দর্শকদের একাংশের প্রশংসা পেলেও অনেকের মতে, চরিত্রটি আরও গভীরভাবে ফুটিয়ে তোলা যেত। ‘ইমার্জেন্সি’ মুক্তির প্রথম দিনে প্রায় ২.৩৫ কোটি টাকা আয় করেছে। তবে ছবিটি প্রত্যাশিত বক্স অফিস সাফল্য পায়নি। মুক্তির প্রথম সপ্তাহ শেষে মোট আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭.৪৪ থেকে ২২ কোটি টাকা। বক্স অফিস বিশ্লেষকদের মতে, ছবির রাজনৈতিক বিষয়বস্তু এবং নির্দিষ্ট দর্শকগোষ্ঠীর কারণে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি।

চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর থেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। কঙ্গনা রানাউতের অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর সুন্দর পুনর্গঠন হয়েছে। সিনেমাটোগ্রাফি ও ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ভালো মানের। কিন্তু কিছু সমালোচকের মতে, ছবিটি ঐতিহাসিক সত্যের পরিবর্তে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। চিত্রনাট্য অনেক জায়গায় দুর্বল মনে হয়েছে। গল্পের গভীরতা এবং অন্যান্য চরিত্রের বিকাশ আরও বেশি দরকার ছিল। এই চলচ্চিত্রটি রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল হওয়ায় অনেক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেস পার্টির অনেক নেতা এই চলচ্চিত্রকে “একপাক্ষিক” এবং “প্রোপাগান্ডা” বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এটি ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে পুনরায় সামনে আনতে সাহায্য করেছে।

চলচ্চিত্রটি প্রেক্ষাগৃহে প্রত্যাশিত সাড়া না পেলেও, নির্মাতারা আশা করছেন যে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এটি ভালো পারফরম্যান্স করবে। আগামী মার্চ ২০২৫ নাগাদ এটি কোনো একটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ‘ইমার্জেন্সি’ একটি ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক সিনেমা, যা ভারতের অন্যতম বিতর্কিত সময়কে পর্দায় উপস্থাপন করেছে। যদিও এটি বক্স অফিসে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি, তবে ইতিহাসপ্রেমী দর্শকদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র।