অভিভাবক

অভিভাবকদের পকেট কাটা অব্যাহত!

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির দৌরাত্ম্যে নাজেহাল অভিভাবকরা!

একদিকে রাজ্যের একের পর এক সরকারি স্কুলে তালা পড়ছে, অন্যদিকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাড়বাড়ন্তে পকেট ফাঁকা হচ্ছে অভিভাবকদের। রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের প্রায় প্রতিটি মহকুমায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে নতুন নতুন বেসরকারি স্কুল। অথচ সরকারি স্কুলগুলোতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা নেমে এসেছে তলানিতে। এমন অনেক স্কুল আছে যেখানে মাত্র পাঁচ থেকে ছয় জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে।

অভিভাবকরা মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন সরকারি স্কুলগুলি থেকে, সরকারি স্কুলগুলির এই শোচনীয় অবস্থার পেছনের কারণ খুঁজতে তৎপর নয় শিক্ষা দপ্তর প্রশাসন। সরকারের নীরবতায় হতাশ অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ডোনেশন না দিলে ভর্তির সুযোগই মিলছে না বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে বেসরকারি স্কুলগুলির ওপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের। উল্টে এসব স্কুলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নেতা-মন্ত্রীরা উৎসাহ যোগাচ্ছেন বলেই অভিযোগ। অথচ অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক দলই মুখ খুলতে রাজি নয়।

শুধু স্কুলেই নয়, রাজ্যের শান্তিনিকেতন ও টি এম সি-র মতো বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলিতেও ফি নিয়ে উঠেছে অভিযোগের ঝড়। ন্যাশনাল মেডিকেল কাউন্সিল (এন এম সি)-এর গাইডলাইন অনুযায়ী, রাজ্যের কোটায় ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের ৫০ শতাংশ ফি ছাড় দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। ডেভেলপমেন্ট ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রেও গাইডলাইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। তবুও সরকারের কোনও হস্তক্ষেপ নেই।

ডাবল ইঞ্জিন সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি কার্যকর হয়নি এখনো। উল্টে বিদ্যা ব্যবসার নামে অভিভাবকদের পকেট কাটছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। সরকারের এই নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবক মহল থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদরা। রাজ্যে শিক্ষার মান উন্নয়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে চিত্রটা একেবারেই বিপরীত। সরকারি স্কুলগুলির করুণ দশা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লাগামহীন বাণিজ্যিকীকরণের জেরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। শিক্ষার এই বেহাল অবস্থায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। সরকার কি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, নাকি সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অব্যাহত থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে।

straightlines