2024

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন ২০২৪-এর এক্সিট পোলের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে স্পষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত মিলেছে। এবারের নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে শিবসেনা (একনাথ শিণ্ডে গোষ্ঠী), ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), কংগ্রেস, এনসিপি (শরদ পওয়ার এবং অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) এবং উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার মধ্যে। এক্সিট পোল অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিণ্ডে জোট এগিয়ে রয়েছে। কংগ্রেস-এনসিপি জোট তাদের ঘনিষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও পিছিয়ে থাকতে পারে। উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা কিছু গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রভাব ফেলতে পারে।
এই নির্বাচনের মূল ইস্যু ছিল:-
১. মরাঠা সংরক্ষণ: মরাঠা সম্প্রদায়ের সংরক্ষণ দাবিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দল তাদের অবস্থান শক্ত করেছে।
২. কৃষি সংকট: কৃষক ঋণ মকুব এবং কৃষি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি বড় ইস্যু ছিল।
৩. অবকাঠামো উন্নয়ন: মহারাষ্ট্রে মেট্রো প্রকল্প ও সড়ক উন্নয়ন প্রচারণার প্রধান অংশ হয়ে উঠেছে।
৪. বেকারত্ব: তরুণ ভোটারদের জন্য কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন ২০২৪-এর এক্সিট পোল অনুযায়ী:-
বিজেপি-শিণ্ডে জোট: এক্সিট পোল অনুযায়ী, বিজেপি এবং একনাথ শিণ্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা জোট ১৪০-১৬০টি আসনে এগিয়ে থাকতে পারে। তারা মূলত উন্নয়ন ও অবকাঠামো ইস্যুতে ভোটারদের আকৃষ্ট করেছে।

কংগ্রেস-এনসিপি জোট: কংগ্রেস এবং শরদ পওয়ার গোষ্ঠীর এনসিপি ১০০-১২০টি আসন পেতে পারে বলে পূর্বাভাস। তারা মরাঠা সংরক্ষণ এবং কৃষক সমস্যা নিয়ে প্রচার চালিয়েছে।

উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা: উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ২০-৩০টি আসনে প্রভাব ফেলতে পারে। মরাঠা সংরক্ষণ এবং ঐতিহ্যগত সমর্থন তাদের মূল ভরসা।

অন্যান্য দল এবং নির্দল প্রার্থী: ছোট দল এবং নির্দল প্রার্থীরা ১০-২০টি আসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ভোটদানের হার এবার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা বিভিন্ন দলের জন্য সমীকরণ জটিল করে তুলতে পারে। শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় ভোটদানের হার বেশি ছিল। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিজেপি-শিণ্ডে জোট ক্ষমতায় ফিরতে পারে, তবে কংগ্রেস-এনসিপি জোটও উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার ভূমিকা একাধিক হাঙ্গামি এলাকায় “কিংমেকার” হতে পারে। তবে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা হবে গণনার দিন ই । মহারাষ্ট্রের জনগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, এই নির্বাচনের ফলাফল রাজ্যের ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নির্ধারণ করবে।

নার্সদের ভাতা বন্ধ করে দিয়ে; পুলিশ ও টিএসআরের ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর করল সরকার।

দীপাবলির প্রাক মুহূর্তে পুলিশ এবং টিএসআর জোওয়ানদের জন্য রেশন ভাতা বৃদ্ধির যে ঘোষণা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মহাকরণে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এখবর জানান। তিনি জানান, টিএসআর জোওয়ানদের রেশন মানি এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশকর্মীরাও এখন থেকে দু হাজার টাকা করে রেশন মানি পাবে। পোশাক এলাউন্স ও বাড়ানো হয়েছে। টিএসআর জোওয়ানরা এতদিন পোষাক এলাউন্স বাবদ ১০ হাজার টাকা করে পেতেন। এখন ১২ হাজার টাকা করে পাবেন। একইভাবে রাজ্য মন্ত্রিসভা পুলিশ কর্মীদের পোশাক অ্যালাউন্স ২০০০ টাকা বাড়িয়ে সাড়ে ৯৫০০ টাকা করা হয়েছে । এতদিন পুলিশকর্মীরা সাড়ে সাত হাজার টাকা করে পোষাক এলাউন্স পেতেন। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে টিএসআর এবং পুলিশ কর্মী মিলিয়ে ২১ হাজার ৭৫৪ জন জওয়ান উপকৃত হবেন। পুলিশ ও টিএসআর জোওয়ানদের রেশন মানি বৃদ্ধির ফলে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি ১৭ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয় হবে। আর বছরে খরচ হবে ২৬ কোটি ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। এমনটাই জানিয়েছেন পরিবহনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বেশ কিছু শূন্যপদ পূরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ১২৫ জন ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার নিয়োগ করা হবে। অন্যদিকে যুব কল্যাণ এবং ক্রীড়া দপ্তরের অধীন ৭৫ জন পি আই তথা ফিজিকাল ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ করা হবে। ক্রীড়া দপ্তর এবং বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধীন মোট ২০০ জন ক্রিয়াশিক্ষক নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। খেলাধুলার মান উন্নয়ন, কোচিং সেন্টার গুলোর মান উন্নয়নে ক্রীড়া শিক্ষকরা আগামী দিনে ভূমিকা নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান মৎস্য দপ্তরে গ্রেড ওয়ান অফিসার তথা টি এফ এফ এসএর শূন্য পদ পূরণ করা হবে। অতি দ্রুত টিপিএসসির মাধ্যমে ৫৩ জন টিএফএফএস নিয়োগ করা হবে বলে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানিয়েছেন।

এদিকে; ত্রিপুরা রাজ্যে শুধুমাত্র নার্স এবং আরক্ষা দপ্তরের কর্মীরাই একমাত্র নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরিধান করে সরকারি কর্তব্য পালন করে থাকেন।

কেন্দ্রীয় সরকারের যে নির্দেশনামার পরিপ্রেক্ষিতে, রাজ্য সরকার আরক্ষা দপ্তরের কর্মীদের ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন; ঠিক সেই অর্ডারেই নার্সদের ভাতা বৃদ্ধির অনুমোদন ও করা ছিল।
কিন্তু নার্সদের বঞ্চিত রেখে শুধুমাত্র আরক্ষা দপ্তরের কর্মীদের জন্য ই এই অর্ডার কার্যকর করলেন রাজ্যের ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী। উল্টো রাজ্যের নার্সদের পোশাক এবং পোশাক পরিস্কার রাখার জন্য মাসিক মাত্র ১৫০ টাকা ভাতা দেয়া হতো, তাও বন্ধ করে দিয়েছেন ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী।

নার্সদের হ্যাজার্ড এলাউন্স, যা তারা বহুদিন ধরে দাবি করে আসছিল তা আজও তারা পায়নি। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা রাজ্যে প্রায় সব সরকারি পদেরই পদোন্নতি হয়েছে, একমাত্র নার্সদেরই কোন পদোন্নতি আজও হয়নি । কোন অলৌকিক কারণে আমাদের রাজ্যের ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী, নার্সদের প্রতি এই দ্বিরূপ মনোভাব পোষণ করছেন তা নার্সদের বোধগম্য হচ্ছে না।

amc 1 1

লোকসানে চলছে রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম৷ অথচ সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমান বেড়েই যাচ্ছে। পরিশোধের নামগন্ধ নেই৷ অথচ সাধারণ মানুষ বা সাধারণ বিদ্যুৎ ভোক্তা ঠিকভাবে বিদ্যুৎ বিল মিটিয়ে না দিলে লোকজন গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেয়৷ কিন্তু রাজ্যের প্রায় সবকটি পুর ও নগরসংস্থায় কোটি টাকার উপর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে আছে৷ কোন অভিযান নেই। কেন ওই সব সংস্থার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে না সেটাই প্রশ্ন। অথচ বিদ্যুৎ চুরি অর্থাৎ হুকলাইন বন্ধে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেড জরিমানা এবং ব্যবহার্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা সহ আইনি পথে হাঁটার প্রতিবিধান কখনো কখনো প্রয়োগ করলেও ওই সব সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে এ ধরনের কোন পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা জানা নেই কারোর।

জানা গেছে বিদ্যুতের বিল বকেয়া রাখার ক্ষেত্রে প্রথম স্থানেই রয়েছে ধর্মনগর পুর পরিষদ। এখন পর্যন্ত ধর্মনগর পুর পরিষদের কাছে ৪ কোটি ৬১ লক্ষ পুর পরিষদের কাছে ৪ কোটি ৬১ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আগরতলা পুর নিগম। এদের বকেয়ার পরিমাণ ১ কোটি ৭৮ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা। অথচ সম্পদ করের জন্য নিগমের তাগাদার কুল নেই৷ তৃতীয় স্থানে রয়েছে কুমারঘাট পুর পরিষদ। এদের বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার পরিমাণ ১ কোটি ৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। একই রকম ভাবে রানিরবাজার পুর পরিষদের বকেয়া ৪ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা। জিরানিয়া নগর পঞ্চায়েতের বকেয়া ৪ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা। উদয়পুর পুর পরিষদের বকেয়া ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা। বিশালগড় পুর পরিষদের বকেয়া ১ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। মেলাঘর পুর পরিষদের বকেয়া ২১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। সোনামুড়া নগর পঞ্চায়েতের বকেয়া ১৫ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা। বিলোনিয়া পুর পরিষদের বকেয়া ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা। সাব্রুম নগর পঞ্চায়েতের বকেয়া ৪৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। শান্তিরবাজার পুর পরিষদের বকেয়া ৪০ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা। পানিসাগর নগর পঞ্চায়েতের বকেয়া ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা। তেলিয়ামুড়া নগর পঞ্চায়েতের বকেয়া ৪৭ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। আমবাসা পুর পরিষদের বকেয়া ৮ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা। কৈলাশহর পুর পরিষদের বকেয়া ৩ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা। মোহনপুর বকেয়া ৩ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা। মোহনপুর পুর পরিষদের বকেয়া ৭২ হাজার টাকা। অমরপুর নগর পঞ্চায়েতের বকেয়া ৪৩ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে কমলপুর নগর পঞ্চায়েত এবং খোয়াই পুর পরিষদের কোন বকেয়া নেই। আগরতলা পুর নিগম সহ সমস্ত পুর পরিষদ এবং নগর পঞ্চায়েত এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা অক্ষুন্ন রাখা এবং বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য সমস্ত বকেয়া বিল পরিশোধ করার জন্য নিগমের তরফে অনুরোধের পর অনুরোধ জানানো হলেও কারোর কোন হেলদোল নেই।
আগরতলা তিনটি হলের বকেয়া বিদ্যুত বিল এক কোটি ৭৩ লক্ষ টাকার উপরে। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল মিটিয়ে দেওয়ার কোন খবর নেই। এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল স্যান্দন পত্রিকায়৷
আগরতলার রবীন্দ্রশতবার্ষিকী ভবনে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ৯৫ লক্ষ টাকার উপরে অর্থাৎ এক কোটি টাকার কাছাকাছি। মুক্তধারা হলে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া কুড়ি লক্ষ টাকার উপর। নজরুলকলাক্ষেত্রে ৫৮ লক্ষ টাকার উপর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। বাড়ি ঘরে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। দুমাস বিল ঠিকঠাক ভাবে মিটিয়ে দেওয়া না হলে বিদ্যুৎ নিগমের কর্মীরা গিয়ে হাজির হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সোসাইটি পরিচালিত হলগুলোতে এক কোটি ৭৩ লক্ষ টাকার উপর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। তাহলে কেন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে না। সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায় না করেই মানুষের উপর অতিরিক্ত মাশুল চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কোথাও কোনো রকম বিদ্যুৎ চুরি দেখলে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এর প্রতিবাদ করতে এবং নিগমকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হলেও কেন বকেয়া বিল আদায়ে নিগমের ভুমিকা থাকবে না।
কারণ কোন ধরনের বিদ্যুৎ চুরি তথা হুক লাইন বৈধ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ জনিত সমস্যার কারণ। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিল সময়মতো মিটিয়ে দিয়ে ৩ শতাংশ ছাড় পাশাপাশি ডিজিটাল তথা অনলাইন পদ্ধতিতে মিটিয়ে দিয়ে আরও অতিরিক্ত এক শতাংশ ছাড়ের সুযোগগ্রহণ করার জন্য নিগমের তরফে বার বার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের পাশাপাশি সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিও সময়মতো বিদ্যুৎ বিল মিটিয়ে দেওয়ার জন্য নিগমের তরফে অনুরোধ জানানো হলেও সরকারি সংস্থাগুলোর কোন হেলদোল নেই। আগরতলা পুর নিগম সহ রাজ্যের মোট ২০টি নগর প্রতিষ্ঠান নগরায়নের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন শহরে উন্নয়নের ধ্বজা কে তুলে ধরেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবেই বহুদিন ধরেই এই নগর প্রতিষ্ঠান গুলোর বেশিরভাগ এর কাছেই বিদ্যুতের বিল বকেয়া পড়ে রয়েছে। নিগমের তরফে বারবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও আগরতলা পুর নিগম সহ বিভিন্ন পুরসভা এবং নগর পঞ্চায়েত গুলো বিদ্যুতের বিল যথাসময়ে মিটিয়ে না দিয়ে বকেয়ার পাহাড় দাঁড় করিয়ে দেওয়ায় ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেড পরিকাঠামো ক্ষেত্র উন্নয়নে দারুন এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে বলা যায়। আর এর খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাদের

membership

একটা সময় রাজ্যের মাত্র দেড় শতাংশ ভোটের ভাগিদার ভারতীয় জনতা পার্টির এবারের সদস্য সংখ্যা এপর্যন্ত ১২ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ২১ শে নভেম্বর পর্যন্ত সদস্যতা অভিযান চলবে। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা রাজ্যে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। রাজ্যে বিজেপির সদস্যতা অভিযানের ইনচার্জ বিধায়ক ভগবান দাস নিশ্চিত করেছেন, ত্রিপুরা রাজ্যে বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১৩ লক্ষ ছুয়ে যাবে।
বিধায়ক শ্রী দাস পরিসংখ্যান দিয়ে বলেছেন, শনিবার পর্যন্ত মোট ১২ লক্ষ ২৩ হাজার ৬৯২ জন বিজেপির সদস্যতা নিয়েছেন।

গোটা দেশে ভারতীয় জনতা পার্টির সংগঠন পর্ব ২০২৪ শুরু হয়েছে। তার প্রথম পর্যায় হলো সদস্যতা অভিযান। গত ২ রা সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে এই সদস্যতা অভিযানের শুরুয়াত্ করেন। তার পর দিন অর্থাৎ ৩ রা সেপ্টেম্বর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা সদস্যতা গ্রহণ করে রাজ্যেও সংগঠন পর্বের সূচনা করেন। দলীয় সূত্রে খবর, গোটা এই সদস্যতা অভিযানে রাজ্যের ইনচার্জ করা হয় বিধায়ক ভগবান দাসকে। দায়িত্ব পাওয়ার পরই প্রতিটি জেলাতেই সদস্যতা অভিযানকে সফল করার জন্য তিনি প্রবাস কাটিয়েছেন দিনের পর দিন।
তবে জনজাতি অধ্যুষিত টাকারজলা ও রাইমাভ্যালী বিধান সভা কেন্দ্রে সদস্য সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও সবচেয়ে বেশি সদস্য হয়েছে সদর মহকুমায়। মন্ডলের হিসাবে সবচেয়ে বেশি সদস্য হয়েছে মোহনপুর মন্ডলে। আর জেলার হিসাবে সবচেয়ে কম সদস্য হয়েছে সিপাহীজলা জেলায়।
কিন্তু সিপাহীজলা জেলায় ধনপুর, বক্সনগর, বিশালগড় ও নলছড়ের মতো
বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে থাকার পরও কেন সিপাহীজলা জেলায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা কম হলো? এই প্রশ্নের কোন ব্যাখ্যা কিন্তু দলের তরফে নেই। অথচ সি পি আই এম দলের দখলে থাকা বড়জলা বিধানসভা কেন্দ্রে সদস্য সংখ্যা ২০ হাজার ছুঁই ছুঁই। তারপর পরও এবার ত্রিপুরার সদস্যতা অভিযান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, গোটা দেশে বিজেপির সদস্যতা অভিযান সরাসরি তদারকি করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব জে পি নাড্ডা এবং দলের সর্বভারতীয় সংগঠন মহামন্ত্রী বি এল সন্তোষ। যতটুকু খবর, উভয় কেন্দ্রীয় নেতাই ত্রিপুরার সদস্যতা অভিযান নিয়ে সন্তোষ ব্যাক্ত করেছেন।
এক্ষেত্রে সদস্যতা অভিযানের ত্রিপুরার ইনচার্জ বিধায়ক ভগবান দাস জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যেই মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বিজেপির সদস্যতা গ্রহন করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, সদস্যতা অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো, ভারতীয় জনতা পার্টিকে সর্বব্যাপী এবং সর্বস্পর্শী করে তোলা। অর্থাৎ সমাজের সকল শ্রেণী ও সমাজের কাছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে নিয়ে যাওয়া। তার জন্য প্রতি ৬ বছর পর পর বিজেপির সংগঠন পর্ব শুরু হয়। সদস্য পদ গ্রহন প্রথম ধাপ। তারপর শুরু হবে বুথ স্তর থেকে শুরু করে মন্ডল, জেলা ও প্রদেশ কমিটি নির্বাচন। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তবে এটা ঘটনা সমস্ত শ্রেনী ও সমাজের আস্থা রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতি। সদস্যতা অভিযানে স্বতঃস্ফূর্ততা তা প্রমান করছে।

NEC

চলতি মাসের ২৮ তারিখ থেকে আগরতলায় শুরু হচ্ছে উত্তরপুর্ব উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠক। এর আগে ২৯ আগষ্ট এনইসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ভয়াবহ বন্যার কারনে সে বৈঠক স্থগিত করা হলেও বাতিল করা হয় নি।
কথা ছিলো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠকে যোগ দেবেন। কিন্তু ভয়াবহ বন্যার কারণে বৈঠক স্থগিত করে দেওয়া হয়। মহাকরন সুত্রে জানা গেছে
চলতি মাসের শেষদিকে অর্থাৎ আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে শুরু হবে বৈঠক। দুইদিন চলবে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রেও খবরের সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রশাসনিক স্তরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জানা গেছে, বৈঠকের উদ্বোধনে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়াও ডোনার মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকের ফাঁকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে বৈঠক করার পাশাপাশি তিপ্রামথার প্রতিনিধিদের সাথেও বৈঠক করতে পারেন।
ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। প্রজ্ঞা ভবনে হবে বৈঠক। আগরতলা বিমানবন্দর থেকে প্রজ্ঞা ভবন পর্যন্ত রাস্তার দুদিক ঝাড়পোছ, রঙ চলছে৷ সরকারি অতিথি শালা সহ বেশ কিছু হোটেল সাজিয়ে তোলার কাজ চলছে৷ আগামী ২২ নভেম্বর এনইসি বৈঠকের রুপরেখা ঠিক করতে আসছেন ডোনার সচিব সহ উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা৷ সেদিন বৈঠক হবে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের কনফারেন্স হলে হবে বৈঠক। বৈঠকের পরেই সরকারিভাবে এনইসি বৈঠকের দিনক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। আগামী ২৪ নভেম্বর থেকেই উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যের আধিকারিকরা রাজ্যে আসতে শুরু করবেন৷
উত্তর পূর্বাঞ্চলের আট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও পুলিশের মহানির্দেশকরা যোগ দেবেন বৈঠকে৷ ২০০৮ সালের ১৩ মে আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে এনইসির ৫৬ তম বৈঠক হয়৷ নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিল হল উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের নোডাল সংস্থা যা আটটি রাজ্য অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম এবং ত্রিপুরা নিয়ে গঠিত। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর ডাক্তার মানিক সাহা এনইসির দুটো সভায় যোগ দিয়েছিলেন৷
নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিলের ৭০ তম পূর্ণাঙ্গ সভা হয় ২০২৩ সালের ৮-৯ অক্টোবর গুয়াহাটির আসাম আজাদ প্রশাসনিক কলেজে । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উত্তর পূর্ব পরিষদের চেয়ারম্যান অমিত শাহ এই পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা সেই বৈঠকে উত্তর-পূর্বের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় যেমন এসডিজি, উত্তর-পূর্বের জন্য জেলা নির্দেশক কাঠামো, উত্তর-পূর্বে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ (পিপিপি), ৫জি পরিষেবা, ডিজিটাল স্কুল চালু করা ইত্যাদির উপর গুরত্ব দিয়েছিলেন।
৭১ তম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি শিলংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। স্টেট কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত বৈঠকে
মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা যোগ দেন এবং ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য এনইসির তহবিল বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানান। তিনি ত্রিপুরার উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। এনইসি তহবিল বরাদ্দ বাড়ানো, টিএমসিকে এইমস-এর মতো ইনস্টিটিউটে উন্নীত করা, এডিসি এলাকায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, শিল্প উদ্দেশ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, আগরতলা- কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের প্রাথমিক কার্যক্রম চালু করার দাবি করেছিলেন। এবার আগরতলায় হবে এনইসির বৈঠক। প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে বলে খবর।
২০১৪ সালে কেন্দ্রে মোদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরই ইউপিএ সরকারের ‘লুক ইস্ট’ পলিসির পরিবর্তে ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ পলিসি চালু করেছে। ফলে স্বভাবতই উত্তর পূর্বাঞ্চলের পর্যদের এই বৈঠকটি নিঃসন্দেহে রাজ্যগুলির কাছে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বৈঠকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাদের নিজ নিজ রাজ্যের রাজ্যের সার্বিক রূপরেখা তুলে ধরে থাকেন।

তথ্য ও প্রযুক্তি scaled

ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম আধুনিক যুগে তথ্য ও সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে। প্রচলিত প্রিন্ট ও সম্প্রচার সংবাদমাধ্যমকে ছাড়িয়ে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সংবাদ প্রচার আজকের দিনে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসার এবং স্মার্টফোনের সহজলভ্যতার কারণে, ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম অতি দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই নিবন্ধে আমরা ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের প্রভাব, এর বিকাশ, প্রধান প্ল্যাটফর্মসমূহ এবং এর চ্যালেঞ্জগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের সংজ্ঞা ও প্রেক্ষাপট
ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম বলতে সেই সমস্ত সংবাদমাধ্যমকে বোঝানো হয়, যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংবাদ প্রচার করে। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে মূলত নিউজ ওয়েবসাইট, নিউজ অ্যাপ্লিকেশন, সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল, এবং ব্লগ অন্তর্ভুক্ত। ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে খবর দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব, কারণ এটি স্থান এবং সময়ের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে। এই মিডিয়ার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো ডিভাইসে যে কোনো সময়ে খবর পাঠানোর ক্ষমতা, যা প্রিন্ট বা টেলিভিশনের সীমাবদ্ধতা দূর করেছে।

ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের বিকাশ
ভারতে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের প্রসার গত কয়েক দশকে অসাধারণভাবে বেড়েছে। ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ২০০০-এর দশকের শুরুতে যখন ইন্টারনেট ভারতে জনপ্রিয় হতে শুরু করে, তখনই অনলাইন নিউজ ওয়েবসাইটের বিকাশ ঘটে। প্রথমদিকে কিছু প্রধান সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন চ্যানেল তাদের অনলাইন সংস্করণ চালু করে। যেমন, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এবং এনডিটিভি-র মতো প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলি প্রথমদিকে তাদের ওয়েবসাইট চালু করে, যা জনগণকে অনলাইনে খবর পড়ার সুযোগ দেয়।

তবে, ২০১০-এর পর থেকে স্মার্টফোনের ব্যাপক প্রসার এবং ইন্টারনেট পরিষেবার ব্যয় কমে যাওয়ার ফলে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের ব্যবহার নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। আজকের দিনে প্রায় সব প্রধান সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন চ্যানেলের নিজস্ব ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেখানে তারা প্রতিদিন আপডেটেড খবর প্রকাশ করে।

ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের প্রধান প্ল্যাটফর্মসমূহ
ভারতের ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে আজকের দিনে বিভিন্ন ধরণের প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যা বিভিন্ন শ্রেণির পাঠক এবং দর্শকদের প্রয়োজন মেটায়। এখানে কিছু প্রধান ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মের তালিকা দেওয়া হলো:

নিউজ ওয়েবসাইট: আজকের দিনে প্রচলিত সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন চ্যানেলের প্রায় সবকটির নিজস্ব নিউজ ওয়েবসাইট রয়েছে। যেমন, দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আজ তক, এনডিটিভি ইত্যাদি সংবাদমাধ্যমগুলি তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত খবর আপডেট করে। এসব ওয়েবসাইটগুলি সংবাদপাঠকদের জন্য দ্রুততম এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করে।

নিউজ অ্যাপ্লিকেশন: মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে অনেক সংবাদমাধ্যম তাদের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে। এসব অ্যাপের মাধ্যমে পাঠকরা যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে খবর পড়তে পারেন। ইনশর্টস, ডেইলি হান্ট, টাইমস অফ ইন্ডিয়া অ্যাপ, আজ তক অ্যাপ ইত্যাদি হলো কিছু জনপ্রিয় নিউজ অ্যাপ্লিকেশন, যা আজকের দিনে লক্ষ লক্ষ মানুষ ব্যবহার করেন।

সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল: ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিও ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল রয়েছে, যেখানে তারা সংক্ষিপ্ত আকারে সংবাদ প্রচার করে। বিশেষত টুইটার এবং ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে নিউজ আপডেট এবং লাইভ কভারেজ অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

নিউজ এগ্রিগেটরস: গুগল নিউজ, ফ্লিপবোর্ড, এবং জিও নিউজ-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে খবর সংগ্রহ করে এবং একটি প্ল্যাটফর্মে পাঠকদের কাছে উপস্থাপন করে। এটি পাঠকদের একাধিক উৎস থেকে খবর পাওয়ার সুবিধা দেয় এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে খবর জানতে সাহায্য করে।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যম ও ব্লগ: ডিজিটাল যুগে অনেক স্বাধীন সংবাদমাধ্যম ও ব্লগারও সংবাদ প্রচার করছে। এদের অনেকেই প্রচলিত সংবাদমাধ্যমের বাইরে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং গভীর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করছে। উদাহরণস্বরূপ, দ্য প্রিন্ট, স্ক্রোল, কোয়ার্টজ ইন্ডিয়া, এবং নিউজলন্ড্রি হলো কিছু জনপ্রিয় স্বাধীন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে।

ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের সুবিধা
ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম প্রচলিত সংবাদমাধ্যমের তুলনায় অনেকগুলি সুবিধা প্রদান করে, যা একে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে:

দ্রুততা: ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর দ্রুততা। প্রিন্ট মিডিয়া বা টেলিভিশনের তুলনায়, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে খবর প্রচার মুহূর্তের মধ্যে সম্ভব। সংবাদমাধ্যমগুলি লাইভ আপডেট, লাইভ স্ট্রিমিং ইত্যাদির মাধ্যমে যে কোনো ঘটনার সরাসরি সম্প্রচার করতে পারে।

অ্যাক্সেসিবিলিটি: ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম ইন্টারনেট-সংযুক্ত যেকোনো ডিভাইসে অ্যাক্সেসযোগ্য। একজন পাঠক তাঁর স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, বা ল্যাপটপ থেকে খুব সহজেই খবর পড়তে পারেন। এটি প্রিন্ট এবং সম্প্রচার মাধ্যমের স্থানিক ও সময়িক সীমাবদ্ধতাগুলি দূর করেছে।

ইন্টারেক্টিভিটি: ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের আরেকটি বড় সুবিধা হলো এর ইন্টারেক্টিভ স্বভাব। পাঠকরা লাইভ চ্যাট, মন্তব্য, বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়া পাঠকরা তাদের মতামত প্রকাশ করতে এবং খবরের উপর প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন, যা প্রথাগত মিডিয়াতে সম্ভব ছিল না।

বহুমাত্রিক কনটেন্ট: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শুধুমাত্র টেক্সট নয়, বরং ভিডিও, অডিও, এবং ছবি সমন্বিত কনটেন্ট উপস্থাপন করা যায়। এটি পাঠকদের জন্য খবরকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে এবং একইসঙ্গে তাদের জন্য গভীরতর বোঝাপড়ার সুযোগ তৈরি করে।

চ্যালেঞ্জসমূহ
ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে যেমন সুযোগ রয়েছে, তেমনি রয়েছে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ, যা এর ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করতে পারে:

ভুয়া খবরের প্রসার: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের একটি বড় সমস্যা হলো ভুয়া খবর বা ফেক নিউজ। সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে ভুয়া খবর খুব সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা জনমনে বিভ্রান্তি এবং সামাজিক অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে।

সেন্সরশিপ এবং স্বাধীনতা: বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম সেন্সরশিপ এবং নিয়ন্ত্রণের মুখোমুখি হচ্ছে। বিশেষত, সরকার বা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিতে খবরের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে। এটি সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

আর্থিক সংকট: ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের আয়ের মডেল অনেক ক্ষেত্রেই প্রথাগত সংবাদমাধ্যমের তুলনায় দুর্বল। বিজ্ঞাপনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা, পেইড সাবস্ক্রিপশনের অভাব, এবং গুগল বা ফেসবুকের মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানির প্রভাবের কারণে অনেক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আর্থিক সংকটে পড়ছে।

বৈষম্যমূলক কনটেন্ট: ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে কিছু সময়ে পক্ষপাতমূলক এবং চরমপন্থী কনটেন্ট প্রচারের অভিযোগও উঠে। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভাজনমূলক কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে, যা সমাজে বিভক্তি বাড়াতে পারে।

ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের ভবিষ্যৎ
ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় হলেও এটি কিছু পরিবর্তনের মুখোমুখি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একদিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং মেশিন লার্নিং-এর সাহায্যে সংবাদ সংগ্রহ, প্রকাশ এবং প্রচার প্রক্রিয়ায় উন্নতি হবে, অন্যদিকে ব্যক্তিগতকৃত খবর উপস্থাপনের মাধ্যমে পাঠকরা তাদের পছন্দমতো খবর পেতে পারবেন।

তবে, পাঠকদের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তা এবং সচেতনতার বৃদ্ধিও অপরিহার্য, যাতে তারা সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য গ্রহণ করতে পারে এবং ভুয়া খবর বা প্রোপাগান্ডার ফাঁদে না পড়ে।

উপসংহার
ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম, সংবাদ পরিবেশনের গণতন্ত্রীকরণ করেছে, যেখানে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটের মাধ্যমে খবর প্রচার করতে পারে। উপসংহারে বলা যায়, ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম আমাদের জীবনে স্থায়ী প্রভাব ফেলেছে এবং এর গুরুত্ব কেবল বৃদ্ধি পাবে। প্রযুক্তিগত উন্নতি, পাঠকদের পরিবর্তিত চাহিদা এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে এর ভূমিকা আরও গভীরভাবে প্রভাবিত হবে। তবে, এর সাফল্য নির্ভর করবে সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা, সঠিক তথ্য পরিবেশন এবং সমাজের সৎ ও নৈতিক সাংবাদিকতা রক্ষার প্রচেষ্টার ওপর।

news scaled

ভারতের সংবাদমাধ্যমের ইতিহাস অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় এবং বহুমুখী। দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অগ্রগতির সঙ্গে এই মাধ্যমের বিকাশ নিবিড়ভাবে জড়িত। সংবাদমাধ্যম ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার ছিল, এবং স্বাধীনতার পর এটি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রিন্ট মিডিয়া থেকে শুরু করে, রেডিও, টেলিভিশন এবং আজকের ডিজিটাল যুগের সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত বিস্তৃত একটি যাত্রার কথা বলা হয়।

সংবাদমাধ্যমের প্রারম্ভিক যুগ: প্রিন্ট মিডিয়ার উত্থান
ভারতে সংবাদমাধ্যমের ইতিহাসের সূচনা হয়েছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময়। ১৭৮০ সালে প্রকাশিত ‘হিকি’স বেঙ্গল গেজেট’ ছিল ভারতের প্রথম সংবাদপত্র। এটি জেমস অগাস্টাস হিকির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি কলকাতা থেকে প্রকাশিত হতো। ‘হিকি’স বেঙ্গল গেজেট’ ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক অবস্থান গ্রহণ করা প্রথম সংবাদপত্র, যা পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকারের রোষানলে পড়ে। এই সংবাদপত্রটি ব্রিটিশদের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সরব ছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

এরপর একের পর এক বিভিন্ন সংবাদপত্র প্রকাশিত হতে থাকে। ১৮১৮ সালে কলকাতায় রাজারাম মোহন রায় ‘সংবাদ কৌমুদি’ নামে একটি বাংলা সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। এটি ছিল ভারতের প্রথম প্রধান বাংলা সংবাদপত্র, যা দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের পক্ষে বড় ভূমিকা পালন করেছিল। এছাড়াও, ১৮২২ সালে ‘সমাচার দর্পণ’ নামে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত এই সংবাদপত্রগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, শিক্ষিত সমাজের মধ্যে রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।

উনিশ শতকে সংবাদপত্রের বিস্তার
উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের সংবাদপত্র জগতে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়। এই সময়ে বহু নতুন সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা স্বাধীনতার জন্য ভারতের সংগ্রামকে উৎসাহিত করে এবং জনগণের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটায়। ‘ইংলিশম্যান’, ‘মিরাত-উল-আখবার’ (প্রকাশক: রাজা রামমোহন রায়), এবং ‘দ্য হিন্দু’ (১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত) এসময়ের উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্র ছিল। বিশেষত, ‘দ্য হিন্দু’ দক্ষিণ ভারতের অন্যতম প্রধান সংবাদপত্র হয়ে ওঠে, যা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছিল।

এছাড়া ১৮৭৮ সালে ব্রিটিশ সরকার ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট চালু করে। এই আইনের মাধ্যমে ভারতীয় ভাষার সংবাদপত্রগুলিকে কঠোর নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এটি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় একটি বড় আঘাত ছিল, কারণ সংবাদপত্রগুলি ব্রিটিশ সরকারের অনুমতি ছাড়া স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারত না। তবে, এই আইন প্রিন্ট মিডিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে তীব্রতর করে এবং ভারতীয় সংবাদপত্র জগতে আরো বেশি স্বাধীনতা এবং স্বদেশী আন্দোলনের সমর্থনকারী কণ্ঠস্বরের উদ্ভব ঘটে।

স্বাধীনতা সংগ্রামে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় সংবাদপত্রগুলি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী একটি মাধ্যম। সংবাদপত্রগুলি জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে। বাল গঙ্গাধর তিলক তাঁর সম্পাদিত সংবাদপত্র ‘কেশরী’ (মারাঠি ভাষায়) এবং ‘মরাঠা’ (ইংরেজিতে) ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করতেন এবং স্বরাজের জন্য দাবি তুলতেন। ১৯০৮ সালে তিলককে ব্রিটিশ সরকার গ্রেপ্তার করে, যা সংবাদমাধ্যমে প্রচুর সমালোচনার জন্ম দেয়।

মহাত্মা গান্ধী নিজেও সংবাদপত্রকে স্বাধীনতা আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তিনি ১৯১৯ সালে ‘ইন্ডিয়া’ নামে একটি ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র প্রকাশ শুরু করেন। এছাড়াও তিনি ‘ইয়ং ইন্ডিয়া’ এবং ‘নবজীবন’ নামে দুটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন, যেগুলির মাধ্যমে তিনি ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনের বার্তা ছড়িয়ে দেন।

সংবাদপত্রগুলির ভূমিকা শুধু সংবাদ প্রচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তারা সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনগুলিকে সংঘটিত করতে সাহায্য করেছিল। তারা রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটিয়েছিল এবং জনগণকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত করেছিল। বিশেষত, শ্রমিক আন্দোলন, স্বরাজ আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় সংবাদমাধ্যমগুলি জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

স্বাধীনতার পর সংবাদমাধ্যমের বিকাশ
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচিত হয়। ভারতীয় গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে সংবাদমাধ্যম ক্রমশ শক্তিশালী হতে থাকে। স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে সংবাদমাধ্যমগুলি জাতীয় উন্নয়ন, শিক্ষা, এবং সমাজসংস্কারে প্রধান ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার সংবাদপত্রের বিকাশ ঘটে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে।

স্বাধীনতার পর থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অন্যতম দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা ছিল ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থা। এই সময়ে সংবাদমাধ্যমের উপর কঠোর সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়, যা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বড় আঘাত হিসেবে বিবেচিত হয়। অনেক সংবাদপত্রকে বন্ধ করে দেওয়া হয়, সম্পাদকদের গ্রেপ্তার করা হয়, এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীন কণ্ঠকে রোধ করা হয়। তবে, জরুরি অবস্থার পর সংবাদমাধ্যমগুলির মধ্যে পুনরায় স্বাধীনতা ফিরে আসে এবং তারা সরকারের সমালোচনা করতে শুরু করে।

রেডিও ও টেলিভিশনের উত্থান
প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি রেডিও এবং টেলিভিশনের উত্থান ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করে। ১৯২৭ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিও (AIR) প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দেশের প্রধান রেডিও সংস্থা হয়ে ওঠে। স্বাধীনতার পর, রেডিওর মাধ্যমে খবর পৌঁছানোর ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব ঘটে। বিশেষত, গ্রামীণ অঞ্চলে যেখানে প্রিন্ট মিডিয়া পৌঁছানো কঠিন ছিল, সেখানে রেডিওর মাধ্যমে সহজেই খবর ও তথ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।

১৯৫৯ সালে ভারতের প্রথম টেলিভিশন স্টেশন দূরদর্শন চালু হয়। প্রাথমিকভাবে এটি শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করলেও ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে খবর এবং বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে। টেলিভিশনের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়তে থাকে এবং ১৯৯১ সালে ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণের পর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলির আগমন ঘটে। এই সময়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংবাদ চ্যানেল যেমন এনডিটিভি, আজ তক, এবং জি নিউজ প্রচার শুরু করে।

ডিজিটাল যুগের আগমন
একবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে ইন্টারনেটের আগমনের ফলে। ডিজিটাল যুগের সূত্রপাতের সঙ্গে সঙ্গে সংবাদমাধ্যমগুলি প্রিন্ট এবং টেলিভিশন থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। সংবাদপত্রগুলি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে শুরু করে, যেখানে তারা অনলাইন সংবাদ প্রকাশ করে।

বিশেষত, সামাজিক মাধ্যমের উত্থান সংবাদমাধ্যমের প্রচারের পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। ফেসবুক, টুইটার, এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলি জনগণের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়ার নতুন পথ তৈরি করে। দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এবং অন্যান্য প্রধান সংবাদপত্রগুলি তাদের ডিজিটাল সংস্করণ তৈরি করে, যা পাঠকদের আরো সহজে এবং দ্রুত খবর পড়ার সুযোগ দেয়।

উপসংহার
ভারতের সংবাদমাধ্যমের ইতিহাস তার রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রিন্ট মিডিয়া থেকে শুরু করে রেডিও, টেলিভিশন, এবং এখন ডিজিটাল মিডিয়া পর্যন্ত, এই মাধ্যম ভারতীয় জনগণের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ।

ujjayanta palace
bandha bharot

স্ট্রেইট লাইনস নিউজ প্রতিনিধি, আগরতলা:- দেশের গর্ব, অত্যাধুনিক দ্রুতগামী ট্রেন “বন্দে ভারত এক্সপ্রেস” এবার আগরতলায় আসতে চলেছে। ত্রিপুরার রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য্য এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন যে, এই উদ্যোগটি ত্রিপুরাবাসীর জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

susanta chowdhury

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আগরতলা পুরনিগম এলাকার সমস্ত রেশন কার্ডগুলিকে ই-কেওয়াইসি করার কাজ সম্পন্ন করা হবে। তাছাড়া আধার সম্বলিত পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম চালু করা হবে। পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালের মধ্যে সারা রাজ্যে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। আজ খাদ্য ও জনসংভরণ এবং ক্রেতা স্বার্থ বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভায় একথা বলেন। পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচিতে সাহায্য করবে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার (এনআইসি)। পর্যালোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী দপ্তরের কর্মীগণকে সেই লক্ষ্যে তাদের কাজকর্ম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পর্যালোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী জানান, নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রেতাদের স্বার্থ সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী প্রতি মাসের ৫ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে রেশন ডিলারদের রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করতে হবে। যাতে সঠিক সময়ে সুবিধাভোগীগণ রেশন সামগ্রী পেতে পারেন। তিনি খাদ্য পরিদর্শকদের এই বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দেন। রাজ্যের বাজারগুলির জন্য দ্রব্যমূল্যের শীঘ্রই দ্রব্যমূল্যের চার্ট সহ একটি জেলাভিত্তিক ক্যালেন্ডার তৈরী করা হবে।
পর্যালোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে ২০৬৭টি নায্যমূল্যের দোকান রয়েছে। সুবিধাভোগী পরিবার রয়েছে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার ২৯৭টি। তিনি বলেন, প্রতিটি পরিবার যাতে সঠিক সময়ে পন্যসামগ্রী পায় তা নিশ্চিত করা খাদ্য দপ্তরের প্রত্যেক কর্মীর দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি তাদের সেই দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিক ভাবে পালন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, খাদ্য পরিদর্শকগণকে রেশন দোকানগুলি নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে। সেইসাথে ‘জাগো গ্রাহক জাগো’ বিষয়ে সচেতনতামূলক সভাও করা হবে। সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কর্মসূচির কাজে যুক্ত কর্মীগণকে খাদ্যমন্ত্রী প্রত্যেক জেলার কৃষি মহকুমা ও তত্ত্বাবধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান ও বিডিওদের সাথে কথা বলে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ের সময় ও স্থান নির্ধারণ করার পরামর্শ দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন খাদ্য ও জনসংভরণ এবং ক্রেতা স্বার্থ সুরক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার এবং দপ্তরের অধিকর্তা সুমিত লোধ সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ। পর্যালোচনা সভায় রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়, পেট্রোল, ডিজেল সঠিকভাবে সরবরাহ করা এবং রেশন সামগ্রী সঠিক সময়ে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।