ভারতের সংবাদমাধ্যমের ইতিহাস

ভারতের সংবাদমাধ্যমের ইতিহাস অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় এবং বহুমুখী। দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অগ্রগতির সঙ্গে এই মাধ্যমের বিকাশ নিবিড়ভাবে জড়িত। সংবাদমাধ্যম ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার ছিল, এবং স্বাধীনতার পর এটি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রিন্ট মিডিয়া থেকে শুরু করে, রেডিও, টেলিভিশন এবং আজকের ডিজিটাল যুগের সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত বিস্তৃত একটি যাত্রার কথা বলা হয়।

সংবাদমাধ্যমের প্রারম্ভিক যুগ: প্রিন্ট মিডিয়ার উত্থান!

ভারতে সংবাদমাধ্যমের ইতিহাসের সূচনা হয়েছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময়। ১৭৮০ সালে প্রকাশিত ‘হিকি’স বেঙ্গল গেজেট’ ছিল ভারতের প্রথম সংবাদপত্র। এটি জেমস অগাস্টাস হিকির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি কলকাতা থেকে প্রকাশিত হতো। ‘হিকি’স বেঙ্গল গেজেট’ ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক অবস্থান গ্রহণ করা প্রথম সংবাদপত্র, যা পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকারের রোষানলে পড়ে। এই সংবাদপত্রটি ব্রিটিশদের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সরব ছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

এরপর একের পর এক বিভিন্ন সংবাদপত্র প্রকাশিত হতে থাকে। ১৮১৮ সালে কলকাতায় রাজারাম মোহন রায় ‘সংবাদ কৌমুদি’ নামে একটি বাংলা সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। এটি ছিল ভারতের প্রথম প্রধান বাংলা সংবাদপত্র, যা দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের পক্ষে বড় ভূমিকা পালন করেছিল। এছাড়াও, ১৮২২ সালে ‘সমাচার দর্পণ’ নামে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত এই সংবাদপত্রগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, শিক্ষিত সমাজের মধ্যে রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।

উনিশ শতকে সংবাদপত্রের বিস্তার!

উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের সংবাদপত্র জগতে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়। এই সময়ে বহু নতুন সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা স্বাধীনতার জন্য ভারতের সংগ্রামকে উৎসাহিত করে এবং জনগণের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটায়। ‘ইংলিশম্যান’, ‘মিরাত-উল-আখবার’ (প্রকাশক: রাজা রামমোহন রায়), এবং ‘দ্য হিন্দু’ (১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত) এসময়ের উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্র ছিল। বিশেষত, ‘দ্য হিন্দু’ দক্ষিণ ভারতের অন্যতম প্রধান সংবাদপত্র হয়ে ওঠে, যা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছিল।

এছাড়া ১৮৭৮ সালে ব্রিটিশ সরকার ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট চালু করে। এই আইনের মাধ্যমে ভারতীয় ভাষার সংবাদপত্রগুলিকে কঠোর নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এটি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় একটি বড় আঘাত ছিল, কারণ সংবাদপত্রগুলি ব্রিটিশ সরকারের অনুমতি ছাড়া স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারত না। তবে, এই আইন প্রিন্ট মিডিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে তীব্রতর করে এবং ভারতীয় সংবাদপত্র জগতে আরো বেশি স্বাধীনতা এবং স্বদেশী আন্দোলনের সমর্থনকারী কণ্ঠস্বরের উদ্ভব ঘটে।

স্বাধীনতা সংগ্রামে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা!

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় সংবাদপত্রগুলি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী একটি মাধ্যম। সংবাদপত্রগুলি জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে। বাল গঙ্গাধর তিলক তাঁর সম্পাদিত সংবাদপত্র ‘কেশরী’ (মারাঠি ভাষায়) এবং ‘মরাঠা’ (ইংরেজিতে) ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করতেন এবং স্বরাজের জন্য দাবি তুলতেন। ১৯০৮ সালে তিলককে ব্রিটিশ সরকার গ্রেপ্তার করে, যা সংবাদমাধ্যমে প্রচুর সমালোচনার জন্ম দেয়।

মহাত্মা গান্ধী নিজেও সংবাদপত্রকে স্বাধীনতা আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তিনি ১৯১৯ সালে ‘ইন্ডিয়া’ নামে একটি ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র প্রকাশ শুরু করেন। এছাড়াও তিনি ‘ইয়ং ইন্ডিয়া’ এবং ‘নবজীবন’ নামে দুটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন, যেগুলির মাধ্যমে তিনি ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনের বার্তা ছড়িয়ে দেন।

সংবাদপত্রগুলির ভূমিকা শুধু সংবাদ প্রচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তারা সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনগুলিকে সংঘটিত করতে সাহায্য করেছিল। তারা রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটিয়েছিল এবং জনগণকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত করেছিল। বিশেষত, শ্রমিক আন্দোলন, স্বরাজ আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় সংবাদমাধ্যমগুলি জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

স্বাধীনতার পর সংবাদমাধ্যমের বিকাশ!

১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচিত হয়। ভারতীয় গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে সংবাদমাধ্যম ক্রমশ শক্তিশালী হতে থাকে। স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে সংবাদমাধ্যমগুলি জাতীয় উন্নয়ন, শিক্ষা, এবং সমাজসংস্কারে প্রধান ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার সংবাদপত্রের বিকাশ ঘটে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে।

স্বাধীনতার পর থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অন্যতম দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা ছিল ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থা। এই সময়ে সংবাদমাধ্যমের উপর কঠোর সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়, যা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বড় আঘাত হিসেবে বিবেচিত হয়। অনেক সংবাদপত্রকে বন্ধ করে দেওয়া হয়, সম্পাদকদের গ্রেপ্তার করা হয়, এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীন কণ্ঠকে রোধ করা হয়। তবে, জরুরি অবস্থার পর সংবাদমাধ্যমগুলির মধ্যে পুনরায় স্বাধীনতা ফিরে আসে এবং তারা সরকারের সমালোচনা করতে শুরু করে।

রেডিও ও টেলিভিশনের উত্থান!

প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি রেডিও এবং টেলিভিশনের উত্থান ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করে। ১৯২৭ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিও (AIR) প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দেশের প্রধান রেডিও সংস্থা হয়ে ওঠে। স্বাধীনতার পর, রেডিওর মাধ্যমে খবর পৌঁছানোর ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব ঘটে। বিশেষত, গ্রামীণ অঞ্চলে যেখানে প্রিন্ট মিডিয়া পৌঁছানো কঠিন ছিল, সেখানে রেডিওর মাধ্যমে সহজেই খবর ও তথ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।

১৯৫৯ সালে ভারতের প্রথম টেলিভিশন স্টেশন দূরদর্শন চালু হয়। প্রাথমিকভাবে এটি শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করলেও ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে খবর এবং বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে। টেলিভিশনের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়তে থাকে এবং ১৯৯১ সালে ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণের পর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলির আগমন ঘটে। এই সময়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংবাদ চ্যানেল যেমন এনডিটিভি, আজ তক, এবং জি নিউজ প্রচার শুরু করে।

ডিজিটাল যুগের আগমন!

একবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে ইন্টারনেটের আগমনের ফলে। ডিজিটাল যুগের সূত্রপাতের সঙ্গে সঙ্গে সংবাদমাধ্যমগুলি প্রিন্ট এবং টেলিভিশন থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। সংবাদপত্রগুলি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে শুরু করে, যেখানে তারা অনলাইন সংবাদ প্রকাশ করে।

বিশেষত, সামাজিক মাধ্যমের উত্থান সংবাদমাধ্যমের প্রচারের পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। ফেসবুক, টুইটার, এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলি জনগণের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়ার নতুন পথ তৈরি করে। দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এবং অন্যান্য প্রধান সংবাদপত্রগুলি তাদের ডিজিটাল সংস্করণ তৈরি করে, যা পাঠকদের আরো সহজে এবং দ্রুত খবর পড়ার সুযোগ দেয়।

উপসংহার

ভারতের সংবাদমাধ্যমের ইতিহাস তার রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রিন্ট মিডিয়া থেকে শুরু করে রেডিও, টেলিভিশন, এবং এখন ডিজিটাল মিডিয়া পর্যন্ত, এই মাধ্যম ভারতীয় জনগণের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ।About Us

ত্রিপুরার ইতিহাস

ত্রিপুরার ইতিহাস পৌরাণিক যুগের!

"বন্দে ভারত" এবার আগরতলায়

বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের আগমন রাজ্যের পর্যটন শিল্পে নতুন গতি আনবে।

দেশের গর্ব, অত্যাধুনিক দ্রুতগামী ট্রেন “বন্দে ভারত এক্সপ্রেস” এবার আগরতলায় আসতে চলেছে। ত্রিপুরার রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য্য এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন যে, এই উদ্যোগটি ত্রিপুরাবাসীর জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে যাত্রা করবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। ট্রেনটি শুধু যাতায়াতের সময় কমাবে, তাই নয়, পাশাপাশি রাজ্যের মানুষদের যাত্রা আরও আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী করবে। এই ট্রেনের আগমন ত্রিপুরার পর্যটন শিল্পে বিশাল ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ এটি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সাথে আগরতলার সংযোগ আরও মজবুত করবে। এতে রাজ্যের পর্যটন, ব্যবসা ও বাণিজ্যে আরও গতি আসবে এবং রাজ্যের অর্থনীতি নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছাবে।

বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনটি উচ্চমানের আরাম এবং দ্রুতগামী পরিষেবার জন্য পরিচিত। এতে আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধাসমূহ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে এয়ার-কন্ডিশনড কোচ, স্বয়ংক্রিয় দরজা, উন্নত মানের আসন, এবং ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম। এই ট্রেনটি বিদ্যুৎচালিত হওয়ায় পরিবেশবান্ধব। এতে স্পিড অ্যাক্সিলারেশন ব্যবস্থাও উন্নত, যার ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটি গতি অর্জন করতে সক্ষম হয়। বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন বড় শহরে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু হয়েছে এবং যাত্রীরা এর পরিষেবা ও সুবিধা নিয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট।

ত্রিপুরা উত্তর-পূর্বের একটি সীমান্তবর্তী রাজ্য, যার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সবসময়ই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই ট্রেনটির আগমনের ফলে ত্রিপুরা এবং আশপাশের রাজ্যগুলির সঙ্গে একটি শক্তিশালী সংযোগ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য্যের মতে, এই ট্রেনের মাধ্যমে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে ত্রিপুরার সংযোগ আরও সহজ হবে, যা ত্রিপুরার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের আগমন রাজ্যের পর্যটন শিল্পে নতুন গতি আনবে। ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মধ্যে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ, নীরমহল, এবং ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরের মতো জনপ্রিয় স্থানগুলির সঙ্গে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের যোগাযোগ সহজ হবে। এই ট্রেনের মাধ্যমে ত্রিপুরা আরও বেশি পর্যটককে আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে। বিশেষ করে যেসব পর্যটক উন্নতমানের দ্রুত ও আরামদায়ক যাত্রা পছন্দ করেন, তারা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ত্রিপুরায় আসতে আগ্রহী হবেন।

ত্রিপুরার সরকার এবং সাধারণ মানুষ উভয়ই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য্যের মতে, এই ট্রেনটি ত্রিপুরার মানুষের জন্য একটি উন্নয়নের সূচনা এবং একটি সম্মানজনক পদক্ষেপ। দেশের অন্যান্য বড় শহরের মতো এখন ত্রিপুরাও উন্নত ট্রেন পরিষেবার আওতায় আসবে।About Us

আগরতলা পুরনিগম এলাকার রেশনকার্ড ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন

পর্যালোচনা বৈঠকে; খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, জানালেন – “আগরতলা পুরনিগম এলাকার সমস্ত রেশন কার্ডগুলিকে ই-কেওয়াইসি করার কাজ শীঘ্রই সম্পন্ন হবে”!

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আগরতলা পুরনিগম এলাকার সমস্ত রেশন কার্ডগুলিকে ই-কেওয়াইসি করার কাজ সম্পন্ন করা হবে। তাছাড়া আগরতলায় আধার সম্বলিত পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম চালু করা হবে। পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালের মধ্যে সারা রাজ্যে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। আজ খাদ্য ও জনসংভরণ এবং ক্রেতা স্বার্থ বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভায় একথা বলেন। পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচিতে সাহায্য করবে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার (এনআইসি)। পর্যালোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী দপ্তরের কর্মীগণকে সেই লক্ষ্যে তাদের কাজকর্ম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

পর্যালোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী জানান, নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রেতাদের স্বার্থ সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী প্রতি মাসের ৫ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে রেশন ডিলারদের রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করতে হবে। যাতে সঠিক সময়ে সুবিধাভোগীগণ রেশন সামগ্রী পেতে পারেন। তিনি খাদ্য পরিদর্শকদের এই বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দেন। রাজ্যের বাজারগুলির জন্য দ্রব্যমূল্যের শীঘ্রই দ্রব্যমূল্যের চার্ট সহ একটি জেলাভিত্তিক ক্যালেন্ডার তৈরী করা হবে। পর্যালোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী জানান, আগরতলা সহ রাজ্যে ২০৬৭টি নায্যমূল্যের দোকান রয়েছে। সুবিধাভোগী পরিবার রয়েছে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার ২৯৭টি। তিনি বলেন, প্রতিটি পরিবার যাতে সঠিক সময়ে পন্যসামগ্রী পায় তা নিশ্চিত করা খাদ্য দপ্তরের প্রত্যেক কর্মীর দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি তাদের সেই দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিক ভাবে পালন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, খাদ্য পরিদর্শকগণকে রেশন দোকানগুলি নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে।

সেইসাথে ‘জাগো গ্রাহক জাগো’ বিষয়ে সচেতনতামূলক সভাও করা হবে। সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কর্মসূচির কাজে যুক্ত কর্মীগণকে খাদ্যমন্ত্রী প্রত্যেক জেলার কৃষি মহকুমা ও তত্ত্বাবধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান ও বিডিওদের সাথে কথা বলে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ের সময় ও স্থান নির্ধারণ করার পরামর্শ দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন খাদ্য ও জনসংভরণ এবং ক্রেতা স্বার্থ সুরক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার এবং দপ্তরের অধিকর্তা সুমিত লোধ সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ। পর্যালোচনা সভায় রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়, পেট্রোল, ডিজেল সঠিকভাবে সরবরাহ করা এবং রেশন সামগ্রী সঠিক সময়ে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়About Us

গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার আহবান

গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার আহবানে পালিত সমবায় দিবস।

৭১ তম অখিল ভারত সমবায় সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে আজ আগরতলার টাউনহলে বিকশিত ভারত নির্মাণে সমবায়ের ভূমিকা শীর্ষক এক আলোচনা চক্র অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা চক্রের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়। উদ্বোধনী ভাষণে অর্থমন্ত্রী শ্রী সিংহ রায় বলেন দেশকে শক্তিশালী করতে হলে গ্রামীণ অর্থনীতিকেই প্রথম শক্তিশালী করতে হবে। এই ক্ষেত্রে সমবায় সমিতিগুলির সবথেকে বড় ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন রাজ্যে বর্তমানে বিভিন্ন পেশা ভিত্তিক ৪ হাজার ২০৫টি সমবায় সমিতি রয়েছে। ২০১৮ সালের আগে রাজ্যের বেশিরভাগ সমবায় সমিতি গুলি মুখ থুবড়ে পড়েছিল। বিজেপি আই পি এফ টি সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে রাজ্যের সমবায় সমিতি এবং ল্যাম্প স গুলিকে পুনর্জীবিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তিনি বলেন গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন এবং বিকাশের জন্য সমবায় ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করায় সবথেকে আগে দরকার। গরীব অংশের মানুষ যাতে জীবিকা অর্জনে সমবায় সমিতি থেকে আর্থিক সুবিধা পায় সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সমবায় গুলিকে সক্রিয় করা হয়েছে। তিনি বলেন বর্তমানে রাজ্যের সমবায় সমিতি গুলি লাভের মুখ দেখছে। অপর দিকে গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষ সমবায় থেকে নানা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সার্বিক উন্নয়নে দেশের কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়নের দিকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। গ্রামীণ অর্থনৈতিক বিকাশে সমবায় সমিতি গুলিকে শক্তিশালী করার উপর শ্রী সিংহ রায় গুরুত্ব আরোপ করেন। আজকের আলোচনা চক্র অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সেক্টরের সমবায় সমিতি গুলিকে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য পুরস্কৃত করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ জমাতিয়া বলেন রাজ্য সরকার, রাজ্য সমবায় ব্যাংক সমবায় সমিতি এবং গ্রামীণ এলাকার কৃষিজীবীদের নানাভাবে সাহায্য করছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরো নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, পশ্চিম জেলা পরিষদের সভাপতি বলাই গোস্বামী সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।About Us

কর্মচারীদের সান্তনা পুরস্কার শুধুমাত্র ৫%

ত্রিপুরার কর্মচারী নামক চাতক পাখিরা সপ্তমের জায়গায় পেলেন ৫%

ত্রিপুরার ইতিহাসে সেই জুট আমলই ছিল কর্মচারীদের জন্য একমাত্র সুষময়। কারণ জুট আমলেই ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রথম এবং শেষ পে কমিশন দিয়েছিল। তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় টানা বাম আমলের। বামপন্থীরা তাদের নীতিগত কারণে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বঞ্চনা অব্যাহত রাখে এবং পে-কমিশন দেয়ার কোন সদিচ্ছা তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। উপরন্ত কেন্দ্রীয় বঞ্চনা বলে মিছিলের লাইন লম্বা করে পুরোটা সময় কাটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের কাছে সেই বাম আমলে কর্মচারীদের পে কমিশন দেয়ার জন্য কখনো টাকাই চাওয়া হয়নি। আর ঠিক তাই ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা পুরোটা বাম আমলেই তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছে।

২০১৮ সালে বিজেপি নামক রাজনৈতিক দলটি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে,পুরো কর্মচারী কূল কে মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের দলে নিয়েছিলয এবং বলেছিল তারা ক্ষমতায় আসলে ত্রিপুরাতে পূর্ণাঙ্গ সপ্তম পে কমিশন চালু করবে। তখন তারা হিসাব করে দেখিয়েছিল ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা প্রকৃতপক্ষে কত টাকা করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ত্রিপুরার কর্মচারী সমাজ ভেবেছিল দীর্ঘ বহু বছর পর হয়তোবা তারা আবার প্রকৃত পে কমিশন পাবেন! হায়রে পোড়া কপাল, সেটা ছিল পুরুই একটা ফাঁদ, আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ তাদের পক্ষে মত দান করেন। ফলস্বরূপ ২০১৮ সালে বিজেপি নামক রাজনৈতিক দলটি ক্ষমতার আসনে বসেন।

ক্ষমতায় বসেই তারা তাদের প্রকৃত রূপে এসে যান এবং শুরু হয় কর্মচারীদের ওপর বিভিন্ন লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার প্রেক্ষাপট। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় বিপ্লব কুমার দেব কর্মচারীদের উপর প্রয়োগ করেন এক দানবীয় আইন যার নাম “এজমা”, বন্ধ করে দেওয়া হয় কর্মচারীদের পেনশন নামক সুবিধা টুকুও, যা বাম আমলে, তাদের সংগ্রামের ফল বলে টিকিয়ে রেখেছিল। শুরু হয় কর্মচারী বঞ্চনার আরেক নতুন অধ্যায়ের।

২০১৮ সালে নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে আসামের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরায় এসে বলেছিলেন “যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে প্রথম কেবিনেটেই সিদ্ধান্ত করে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ সপ্তম পে কমিশন চালু করে দেয়া হবে। আর যদি না দেওয়া হয় তাহলে লোকসভা ইলেকশনে বা তারপরে কখনো বিজেপিকে আর ভোট দেবেন না”। আর এই নিয়ে “ঘুমা ঘুমা কে চালানো” একটি প্রবাদ ও নেট দুনিয়ায় খুব ভাইরাল হয়েছিল, যা আপামোর ত্রিপুরাবাসিরই জানা আছে।

যেখানে বলা হয়েছিল প্রথম কেবিনেটে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশন দেয়া হবে সেই জায়গায় দেখা গেল উল্টো একচিত্র। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন যে ত্রিপুরা রাজ্যের মন্ত্রী এবং এম এল এ দের মাসিক পারিশ্রমিক বাবদ যে ভাতা তারা পেতেন তা বাড়িয়ে নিজেদের ইচ্ছামত প্রায় তিনগুণ করে দেওয়া হবে এবং কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশনের জায়গায় সামান্য কিছু বেতন বৃদ্ধি করে ক্ষান্ত হয়ে গেলেন। যা ছিল সপ্তম পে কমিশনের তুলনায় সামান্য কিছু ভিক্ষার সমতুল্য। উপরন্ত বছরে যে দুবার D.A দেয়া হতো তা ভুলেই গিয়েছিলেন কর্মচারী সমাজ।

এমতাবস্থায় বিজেপি সরকারের প্রায় শেষ লগ্নে ঘটলো এক নাটকীয় পরিবর্তন আবির্ভূত হল এক নতুন চেহারার “ডক্টর মানিক সাহা”। ত্রিপুরার ইতিহাসে এই প্রথম; পেশায় ডাক্তার, নিছক ভদ্রলোক, শিক্ষিত এবং বুদ্ধিমান মুখ্যমন্ত্রী। যিনি পরবর্তী নির্বাচনের প্রাক মুহুর্তে ঘোষণা করা হয়েছিল ত্রিপুরার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংখ্যার D.A, কিন্তু কমিয়ে আনা যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের সঙ্গে পার্থক্য।

ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী সমাজ তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন তো হয়ইনি বরং মুষ্টিমেয় কিছু লোকের ভাগ্যের পরিবর্তন করে দিয়েছেন। কর্মচারী সমাজ যেখানে ছিলেন, আজও ঠিক সেখানেই আছেন বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে উলটো পিছিয়ে পড়েছে। যেমন ত্রিপুরা রাজ্যের নার্সদের পোশাক এবং পোশাক পরিস্কার রাখার জন্য মাসিক মাত্র ১৫০ টাকা ভাতা দেয়া হতো, যেখানে সপ্তম পে কমিশন অনুযায়ী এই ভাতার পরিমাণ মাসিক ১৮০০ টাকা, যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ নার্সরা পাচ্ছেন।

প্রসঙ্গত নার্সদের প্রাপ্য হ্যাজার্ড এলাউন্স, যা তারা বহুদিন ধরে দাবি করে আসছিল তা আজও তারা পায়নি। সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী নার্সদের নাম পরিবর্তন করে Nursing Officer করা হয়েছে এবং তাদেরকে গ্রুপ B কর্মচারী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার নার্সদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন থেকে শুধু নাম টুকু এনে ওদেরকে Nursing Officer বানিয়ে দিয়েছে। আর এতেই বর্তমানে নার্সদের নেতা হিসেবে পরিচয় দেওয়া কিছু নার্স, তাদের নবনির্মিত সংগঠনের সাফল্য হিসেবে প্রচার করছেন। অথচ ত্রিপুরা রাজ্যে প্রায় সব সরকারি পদেরই পদোন্নতি হয়েছে, একমাত্র নার্সদেরই কোন পদোন্নতি হয়নি এবং এ নিয়ে ওইসব স্বার্থান্বেষী সংগঠনগুলির কোন বক্তব্যও নেই, হাসপাতাল গুলিতে রোগী এবং নার্স এর অনুপাত নিয়েও এদের কোন হেলদোল নেই, ফলস্বরূপ সাধারণ রোগীরা তাদের পরিষেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত থাকছেন এবং সরকারি হাসপাতাল গুলিতে পরিষেবা দিন দিন তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। স্বাভাবিক কারণেই নার্সদের প্রতি সাধারণ মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্যে এই প্রথম একজন ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী পেয়ে নার্স সমাজ ভেবেছিল যে তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার হয়তো এবার সমাপ্তি হবে। সেই গুড়ে বালি ঢেলে দিয়ে, ডাক্তার পরিচালিত ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার, নার্সদের একমাত্র ভাতা ১৫০ টাকা, তাও বন্ধ করে দিয়েছেন।

এদিকে ১৬ তম অর্থ কমিশন এর সময় চলে এসেছে, কিন্তু ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের কিছু কিছু পদের গ্রেট পে এর পার্থক্য আজও বহাল রয়ে গেছে, কিছু কিছু পথ গ্রুপ B কর্মচারী হওয়ার কথা যা আজও গ্রুপ C ই রয়ে গেছে। কর্মচারী সমাজে কান পাতলেই শোনা যায় তাদের বিভিন্ন বঞ্চনার কথা। সরকার সদিচ্ছা নিয়ে যদি এই বঞ্চনা গুলি দূর না করে এবং সপ্তম বেতন কমিশন না দেন, তবে ১৬ তম অর্থ কমিশন ও তাদের টাকা কমিয়ে দেবেন এবং কর্মচারী সমাজের সপ্তম বেতন কমিশনার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে।

উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্পেশাল প্যাকেজ চালু রয়েছে। তা সত্ত্বেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলির সরকারি কর্মচারীদের তুলনায়, ডাবল ইঞ্জিন পরিচালিত ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা সবচেয়ে কম বেতন পাচ্ছেন। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যে হারে বেড়ে চলেছে এতে করে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সমাজ তাদের আয়ের সাথে ব্যায়ের কোন সামঞ্জস্য রাখতে পারছেন না। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বেতন ঠিকই বেড়ে চলেছে, কিন্তু রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের বেতন সেই তুলনায় বাড়ছে না। আর বাজার কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বেতনের সমানুপাতিক হারে তার দামও বাড়িয়ে দিচ্ছে, ফলে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারী সমাজ বাজারের সাথে তাদের সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে পারছে না।

এই বিজেপি পরিচালিত সরকারের আমলে কোন কর্মচারী সংগঠন আছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। ১৬ অর্থ কমিশনের পূর্বে যদি কর্মচারী সংগঠনগুলি সরকারের সাথে আলোচনা করে এই বঞ্চনার সূরাহা না করেন তবে এই বঞ্চনা আবারো আগামী পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী হয়ে যাবে। বামফ্রন্ট আমলে শুধু শোনা যেত “কেন্দ্র দেয়না”! এখন সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তবে সত্যিই কি কেন্দ্র দেয়না? না কি রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাব? বিজেপি পরিচালিত সরকার, “তাদের প্রথম কেবিনেটে সপ্তম বেতন কমিশন দিয়ে দেবেন” এই স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আর ক্ষমতায় এসেই তাদের মন্ত্রী, এম এল এ দের বেতন ভাতা, তাদের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নিয়েছেন, মাঝখান থেকে ফেঁসে গেছেন ত্রিপুরার সপ্তম বেতন কমিশনের আশায় বসে থাকা চাতক পাখিরা। তাদের D.A এর পার্থক্য যতই হওক না কেন, এখন তাদেরকে এই ৫% নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।About Us

ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির

ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির

ভৌগোলিক অবস্থান