রাজ্য

মানিক সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক রাজনীতির অভিযোগে সরব সুশান্ত চৌধুরী।

মানিক সরকারের বিরুদ্ধে সুশান্ত চৌধুরী

মানিক সরকার নিজের মনগড়া কথা চাপিয়ে দিতে চাইছেন । শুক্রবার জনশিক্ষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে হলসভায় তিনি প্রমোফেস্ট নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে বিতর্ক ডেকে আনলেন মানিক৷ খবরের শিরোনামে থাকতে চেয়েছেন তিনি। শনিবার এর প্রতিবাদ করেছেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি সামাজিক মাধ্যমে এর প্রতিবাদ করে বলেন, মিথ্যা বলছেন মানিক সরকার, হতাশার বহিঃপ্রকাশ! সামাজিক মাধ্যমে জানালেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি বলেন বাংলায় একটা কথা রয়েছে, “ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে”! এই বাগধারাটির অর্থ হল, কয়লা ধুইলে যেমন ময়লা যায় না, ঠিক তেমন ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও স্বভাব পাল্টাতে পারে না! তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন তিনি।

“প্রোমো ফেস্ট-২০২৪” এর নামে ফুর্তি করার জন্য নাকি টাকা খরচ করা হয়েছে। দুর্গাপূজা, কালীপূজা থেকে আরম্ভ করে সমস্ত ব্যাপারে নাকি কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে কিছুদিন আগে গানবাজনার জন্য এক রাত্রে সাত কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। মুখরুচোক উক্তি করতে গিয়ে তিনি জানান, আমি তো আর হিসাব-নিকাশ জানি না, আমি একজন দায়িত্বশীল নেতার মুখ থেকে শুনছি। কাণ্ডটা কী, হচ্ছেটা কী? আবার প্রশ্ন তুলেন তিনি। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এর জবাব দিতে গিয়ে বলেন, “প্রোমো ফেস্ট-২০২৪” এর নামে সাত কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে এই খবরটা আপনি কোথায় পেলেন? মানিকের ২০ বছরের শাসনকালে রাজ্যে তো পর্যটন দপ্তরের অস্তিত্বই ছিলো না। পর্যটন দপ্তর ছিলো লালটুপিধারীদের আঁতুড়ঘর। যাদের কাজ ছিল সিপিআইএম দলের বিভিন্ন জনসভায় বামপন্থীদের লেখা গণসংগীত গাওয়ার জন্য কমরেড শিল্পীদের সরবরাহ করা। পর্যটন দপ্তরকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য কখনোই সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেননি। মানিকের শাসনকালে উগ্রপন্থীদের আতঙ্কে পর্যটকরা জম্পুই, ডম্বুর, ছবিমুড়া সহ রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে যাওয়ার সাহস পেতেন না। কারণ রাস্তায় অপহরণ হয়ে যাওয়ার ভয় ছিল। সুশান্তবাবু জানান, আপনার শাসনকালে সারা বিশ্বে ত্রিপুরা সুনাম কুড়িয়েছিল অনেক কারণে! যার মধ্যে অন্যতম হলো আপনার মন্ত্রিসভার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিমল সিনহার খুন হয়ে যাওয়া! বিরোধী দলের বিধায়ক মধুসূদন সাহা খুন! কর্তব্যরত অবস্থায় নিজের অফিস কক্ষে সদর মহকুমা শাসক শুখরাম দেববর্মার নৃশংস হত্যাকাণ্ড! আসলে “প্রোমো ফেস্ট-২০২৪” যেভাবে সফল হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে সেটা মানিকবাবুদের সহ্য হচ্ছে না। সিপিএমের দলের অনেক বিধায়কেরা তাদের পরিবার-পরিজনকে প্রোমো ফেস্টে পাঠানোর জন্য পর্যটন দপ্তর থেকে পাস সংগ্রহ করেছেন। আসলে “বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা” এই সূত্র অনুসারে সরকারের ভালো কাজেরও সমালোচনায় মেতেছেন। সরকারের যেকোনো ভালো কাজ সহ্য হচ্ছে না। মন্ত্রী “সুশান্তবাবুর প্রশ্ন, ডুপ্লেক্স বাংলো” বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে সেদিন যদি আপনি একটু আগরতলা শহরটাকে দেখতেন তাহলে বুঝতে পারতেন প্রোমো ফেস্ট নিয়ে মানুষের মধ্যে কি ধরনের উন্মাদনা ছিল। কষ্ট করে যদি “ইনোভা গাড়িটা” চড়ে একটু স্বামী বিবেকানন্দ ময়দান এর সামনে দিয়ে চক্কর মারতেন তাহলে আরো ভালো বুঝতে পারতেন। এমনিতেই মানিকবাবুদের এখন অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখতে হয়। কারণ সাধারণ মানুষের কাছে দল গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে রাজনৈতিকভাবে নিজেও দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন। তাই সরকারের ভালো কাজ গুলোর সমালোচনা না করে একটু গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গির দিক দিয়ে বিচার করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে বক্তব্য রাখতে আবেদন জানিয়েছেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। টানা কুড়ি বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, একটু তথ্যসহকারে প্রমো ফেস্টের নাম করে কোথায় কিভাবে সাত কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তার চেলেঞ্জ জানিয়েছেন মন্ত্রী সুশান্ত।