বামেদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা এখনো অব্যাহত:
২০১৮ সালে ক্ষমতা হারাবার আগে বিগত ২৫ বছর ধরে এ রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল বামেরা। যেভাবে তারা সাধারন মানুষের উপর বঞ্চনার বুলডোজার চালিয়েছিল তারই প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষমতা থেকে তাদেরকে বিতাড়িত করেছিল এ রাজ্যের জনগণ। ২০১৮ সালে বিজেপি দলের হাত ধরে রাজ্যে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর মানুষ উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছে। ভোটের প্রচারে নেমে এমনটাই বলছিল শাসক দলের নেতারা। আর সেই উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা।
যারা সেই সময়ে সিপিআইএম দলকে ভোট দিত তাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কিছু একটা পাবার ধান্দায় সিপিএমের মিছিল মিটিংয়ে পা মেলাতো, তারা গত বছরগুলোতে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিল। মাঝখানে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ছয় বছরের বেশি সময় । গত এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে বিধানসভা ভোট, লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়ে গ্রাম সরকার গঠনের ভোটও সমাপ্ত হলো। এক সময়ের বাম দুর্গ হারাতে হয় সিপিএমকে৷ নিজেদের ভিত শক্ত করতে পুরোপুরি ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল সিপিএম। তারা নির্বাচনের আগে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু মানুষ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। বাম আমলে মানুষ কিভাবে বঞ্চিত ছিলেন সেই সময়ে বলতে না পারলেও এবার মুখের উপর জবাব দিয়েছিলেন। কারণ বামেরা মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করে নিয়েছিল। বঞ্চনা দলবাজি স্বজন পোষণের কারণে সাধারণ মানুষের ভাবাবেগকে কিভাবে তারা পদদলিত করে রেখেছিল সেই বিষয়টি তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। কিন্তু গত সাড়ে ছয় বছরে মানুষের আরো তিক্ত অভিজ্ঞতা। মানুষ বামেদের একটানা ২৫ বছরের সাথে বিজেপির সাড়ে ছয় বছরের তুলনা করছেন৷ অস্বীকার করার উপায় সাড়ে ছয় বছরেই মানুষ হাপিয়ে উঠেছেন৷ আর এর সুযোগ নিতে, মানুষের ক্ষোভ যাতে ভোটে প্রতিফলিত হয় তার জন্য কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছিল বিরোধীরা। বিশেষ করে বামেরা৷ গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে ঘুরে দাড়াতে ব্যার্থ হয়েছে সিপিএম৷
ক্ষমতার দম্ভে এতটাই অহংকারী ছিল যে বাস্তবের মাটিতে পা রাখতে ভুলে গিয়েছিলেন সিপিএমের বুড়ো নেতারা। কিন্তু এই রাজ্যে মানুষ যখন তাদের আসল চেহারা দেখিয়ে দিয়েছে নির্বাচনের ফলাফলে, তখন তাদের মোহ ভঙ্গ হতে শুরু হয়েছে। আর এর সুযোগ নিচ্ছে শাসক শিবির। তাই তো জনসভাগুলো বামেদের ২৫ বছরের ইতিহাস তুলে ধরে শাসক দলের নেতারা ভোট চেয়েছেন৷
জীতেন্দ্র চৌধুরীর নেতৃত্বে বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে ঘুড়ে দাড়াতে পারে নি দল৷ নতুন প্রজন্মকে সিপিএম এর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত করতে না পারলে আগামীদিনে নির্বাচনে লড়াই করাই মুসকিল হয়ে দাঁড়াবে। এখন থেকেই যদি সিপিএম সেই পথে না হাটে তবে পথ হাড়ানোর সম্ভাবনাই প্রবল হয়ে উঠবে বলে ধারনা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের।